চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাজারে বাড়ছে আম কেনা-বেচা
লকডাউনের কারণে প্রথমদিকে আম বিক্রির পরিমাণ কম থাকলেও মাঝামাঝি সময়ে এসে ধীরে ধীরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ বাজারে আমের বেচা-কেনা বাড়ছে। তবে, এখনো আম ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট নয়। তাদের দাবি, আশানুরূপ ক্রেতা না থাকায় আমের দাম কম, বিক্রিও কম।
আজ বুধবার শহরের পুরাতন বাজারের আম বাজারে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, কিছু ক্রেতা আম কিনছেন। কিছু বিক্রেতা স্থানীয় আড়তদারদের কাছে বিক্রি করছেন। গত সপ্তাহের তুলনায় বেচা-কেনা কিছুটা ভালো। এছাড়া, গত দু’দিন থেকে পাওয়া যাচ্ছে খিরসাপাত আম।
শহরের চাঁদলাই এলাকার বাবুল হোসেন জানান, তিনি বাগানের মালিকের কাছ থেকে ১২ মণ খিরসাপাত ও ২৫ মণ গোপালভোগ আম কিনেছিলেন। সকল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত খিরসাপাত আম বিক্রি করেছেন সাড়ে তিন মণ ও গোপালভোগ আম সাত মণ। তিনি আশা করছেন সারা দিনে বাকি আমগুলো বিক্রি করতে পারবেন।
তবে তিনি অভিযোগ করেন, সীমিত সংখ্যক ক্রেতার উপস্থিতিতে আম বিক্রি হলেও লকডাউনের কারণে ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে না।
আঙ্গারয়া পাড়ার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘গত দুই-তিন দিন থেকে আম বিক্রি বেড়েছে। আমি ২০ মণ খিরসাপাত আমের মধ্যে ১০ মণ বিক্রি করতে পেরেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘লকডাউনের কারণে বাইরের জেলার আম ব্যবসায়ীরা এ জেলায় আসছে না। যে কারণে বিক্রি হচ্ছে কম। যারা কিনছেন তারা প্রায় সকলেই বাইরে আত্মীয়-স্বজনকে পাঠানোর জন্য কিনছেন।’
ব্যবসায়ীরা জানান, বাইরের জেলা থেকে ক্রেতা এলে আমের দাম বাড়ত, ভালো দাম পাওয়া যেত।
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, খিরসাপাত আম বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৬০০ টাকা মণ দরে, গোপালভোগ বিক্রি হচ্ছে ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা মণ দরে।
বাংলাদেশ ম্যাঙ্গো প্রোডিউসর মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘লকডাউনের কারণে আম ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। ব্যবসায়ীরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই সময় প্রতি মণ আম বিক্রি হয় ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা দরে। অথচ ক্রেতার অভাবে কম দামে আম বিক্রি করতে হচ্ছে। যদিও প্রশাসন বাইরের জেলা থেকে আম কিনতে ব্যবসায়ীরা আসতে পারবেন বলে ছাড় দিয়েছেন। তবুও বাইরের জেলা থেকে আম ব্যবসায়ীরা তেমন আসছে না।’
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, ‘লকডাউনে আম পাড়া ও বেচা-কেনায় কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। আম পরিবহনের কোনো সমস্যা নেই, ব্যবসায়ীরা জেলার বাইরে আম নিয়ে যেতে পারবেন। বাইরের জেলা থেকেও এ জেলায় আম কিনতে ব্যবসায়ীরা আসতে পারবেন।’
‘জেলায় মোট ৩৪ হাজার সাতশ ৩৮ হেক্টর জমিতে আম বাগান রয়েছে। এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে আড়াই লাখ মেট্রিকটন। গত বছরও এই পরিমাণ আম জেলায় উৎপাদন হয়েছিল,’ বলেন তিনি।
Comments