সিসি ক্যামেরার আওতায় আসছে পাবনার গ্রামীণ হাট-বাজার

পাবনার সাথিয়া উপজেলার বনগ্রাম হাট, পাবনা জেলার মধ্যে অন্যতম প্রাচীন ও বৃহত্তম কৃষিপণ্যের বাজার, যেখানে প্রতি সপ্তাহের হাটবার গুলোতে স্থানীয় ও বাইরের ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় মুখরিত থাকে হাট। বিপুল জনসমাগমের কারণে হাটে মাঝে মধ্যেই চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটলেও প্রমাণের অভাবে অনেক সময়ই অপরাধীরা পার পেয়ে যায়, এতে উদ্বিগ্ন হাটের ব্যাবসায়ীরা। তবে বনগ্রাম হাটের ব্যবসায়ীরা এখন অনেকটাই স্বস্তিতে কারণ হাটের বিশাল এলাকা জুড়ে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা।

পাবনা জেলা পুলিশের উদ্যোগে হাটের ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় হাটের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। আর ক্যামেরার কন্ট্রোলরুম করা হয়েছে, বনগ্রাম পুলিশ ফাঁড়িতে, যেখান থেকে সরাসরি বিশাল এ হাটের পুরো এলাকা মনিটর করছেন পুলিশ সদস্যরা।

সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বিশাল এ হাটের পুরোটাই থাকবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে ফলে কোথাও কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে দ্রুত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সেখানে পৌছাতে পারবে বলে মনে করছে বাজারের স্থানীয় ব্যবসায়ী এবং পুলিশ সদস্যরা।

গত বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে বনগ্রাম হাটের সিসি ক্যামেরার কার্যক্রম উদ্বোধন করেন পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান।

এর আগে পাবনা সদর উপজেলার দুবলিয়া হাটে সিসি ক্যামেরা কার্যক্রম শুরু হয়। পাবনার আতাইকুলা থানার দুবলিয়া হাট ও বনগ্রাম হাটে প্রথম সিসি ক্যামেরার কার্যক্রম শুরু করা হলেও জেলা পুলিশের উদ্যোগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহায়তায় পাবনার গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি হাটবাজারে পর্যায়ক্রমে এই কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে জেলার পুলিশ প্রশাসন।

পাবনার পুলিশ সুপার মুহিবুল ইসলাম খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, জেলার প্রতিটি উপজেলার হাট ও বাজারগুলোকে সিসি ক্যামেরার আওতায় আনা হলে জনবহুল এ সব হাট-বাজারে অপরাধ কর্মকাণ্ড কমে যাবে। এজন্য জেলা পুলিশ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের উদ্বুদ্ধ করে হাট ও বাজারগুলোতে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।

বনগ্রাম হাট ঘুরে দেখা গেছে, হাটের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিটি পয়েন্টে সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ফলে বিশাল এ হাটের কার্যক্রম আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকায় বাজারের ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি নিরাপদ বোধ করছেন।

বনগ্রাম হাটের ব্যবসায়ী ফারুক হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বনগ্রাম হাটে বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজ, পাটসহ নানা কৃষি পণ্য নিয়ে আসে। প্রতি সপ্তাহে এ হাটে প্রায় একশ কোটি টাকার লেনদেন হয়। তবে ব্যবসায়ীরা প্রায়ই চাঁদাবাজি, চুরি, ছিনতাইসহ নানা অপরাধ কর্মকাণ্ডের শিকার হয়। জনবহুল এ হাটে অপরাধীদের সনাক্ত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পরে। তবে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করায় ব্যবসায়ীরা এখন আগের চেয়ে অনেক নিরাপদ।

এখন কোনো অপরাধ কর্মকাণ্ড সংঘটিত হলেও সিসি ক্যামেরার মাধ্যেমে দ্রুত অপরাধীদের সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা যাবে বলে ব্যবসায়ীরা নিজেদের অনেকটাই সুরক্ষিত মনে করছে বলে জানান ফারুক।

বনগ্রাম বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আল মামুন কবির রিপন মুন্সি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বনগ্রাম হাটে প্রায় চার শতাধিক ব্যবসায়ী আছেন। হাটবারে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় মুখরিত থাকে হাট। বিশাল এ হাটের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণের জন্য হাটের বিভিন্ন পয়েন্টে ইতিমধ্যে ২২টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে।

ব্যবসায়ীদের নিজেদের অর্থায়নে পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় হাটে সিসি ক্যামেরাগুলো স্থাপন করা হয়েছে। প্রতিটি সিসি ক্যামেরা সরাসরি পুলিশ মনিটরিং করছে। হাটে আরও ১০ টি ক্যামেরা অচিরেই স্থাপন করা হবে বলে জানান তিনি। সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সব কাজ শেষ হলে শুধু বনগ্রাম হাট নয় বরং পুরো বনগ্রাম এলাকা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারিতে থাকবে ফলে অপরাধীরা অপরাধ কর্মকাণ্ড ঘটানোর সাহস পাবে না বলে জানান রিপন মুন্সি।

আতাইকুলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, বনগ্রাম হাটে সিসি ক্যামেরার কার্যক্রম শুরু হওয়ার আগেই দুবলিয়া হাটে এ কার্যক্রম শুরু হয়। দুবলিয়া হাটে ১৬ টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। স্থানীয় পুলিশ ফাঁড়িতে মনিটরিং রুম স্থাপন করে এসব ক্যামেরা মনিটরিং করছে পুলিশ।

Comments

The Daily Star  | English

AL govt’s secret surveillance state

From snooping devices carried in backpacks to locate people through their phones to a massive infrastructure that can intercept even end-to-end encryption from a central command centre, the Awami League government had been on an increasingly aggressive trajectory towards building a powerful surveillance state. 

10h ago