কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমের তিন সীমান্তবর্তী কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় করোনা শনাক্তের ঊর্ধ্বমুখী হার লক্ষ্য করা গেছে। জেলাগুলোর গত সাত দিনের করোনা পরীক্ষা ও শনাক্তের সংখ্যা পর্যবেক্ষণ করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী, তিন জেলার মধ্যে আক্রান্তের এই হার কুষ্টিয়ায় সর্বোচ্চ। গত ২৪ ঘণ্টায় কুষ্টিয়ায় আক্রান্তের হার ৩০ দশমিক ১৮ শতাংশ, চুয়াডাঙ্গায় ৩১ শতাংশ ও মেহেরপুরে ১৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর গত ১ জুন কুষ্টিয়ায় আক্রান্তের হার ছিল ২৯ দশমিক ৫২ শতাংশ, চুয়াডাঙ্গায় ছিল ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
তবে, মেহেরপুরে গত মাসে ঈদের পর থেকে শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছে জেলা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়।
কুষ্টিয়া
কুষ্টিয়াতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২২২টি নমুনা পরীক্ষা করে ৬৭ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত চার জন মারা গেছেন। তারা সবাই কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন ছিলেন। অন্যদিকে গত সাত দিনে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ১১ জন।
কুষ্টিয়ায় গত ছয় দিনের নমুনা পরীক্ষা ও শনাক্তের হার পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায়, ৭ জুন ১৮০টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫০ জনের করোনা শনাক্ত হয় এবং আক্রান্তের হার ছিল ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ। ৬ জুন ২৩২টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয় ৫৬ জনের, আক্রান্তের হার ২৫ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৫ জুন ১৮৩টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৫ জনের করোনা শনাক্ত হয়, আক্রান্তের হার ৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। ৪ জুন ২১৯টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হন ৩৭ জন, আক্রান্তের হার ১৬ দশমিক ৯। ৩ জুন ১১৬টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় ৩৪ জনের, আক্রান্তের হার ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ২ জুন ২২৮টি নমুনা পরীক্ষা করে করোনা শনাক্ত হয় ৫৪ জনের, আক্রান্তের হার ২৫ দশমিক ৪৭ শতাংশ। ১ জুন ১১৫টি নমুনা পরীক্ষায় ৩১ জনের করোনা শনাক্ত হয় এবং এই হার ছিল ২৯ দশমিক ৫২ শতাংশ।
কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গত তিন দিনে জেলায় করোনা সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী। তবে, তার আগেও এটি বাড়তির দিকেই ছিল।'
তিনি জানান, কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনার ৫০ বেডে রোগী ভর্তি আছেন ৫৪ জন। রোগীর সংখ্যা প্রতি মুহূর্তেই বাড়ছে।
চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গা জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। জেলার গত ৭ দিনের নমুনা পরীক্ষা ও শনাক্তের হার পর্যবেক্ষণ করলে দেখা যায়, ৭ জুন নমুনা পরীক্ষা হয় ৬১টি এবং করোনা শনাক্ত হয় ২৮ জনের। এই হার ছিল ৪৫ দশমিক ৯০ শতাংশ, ৬ জুন ২৪টি নমুনা পরীক্ষা করে আট জনের করোনা শনাক্ত হয় এবং এই হার ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। ৫ জুন ৪৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয় এবং এই হার ৩৬ দশমিক ৩৬ শতাংশ। ৪ জুন ৫০টি নমুনা পরীক্ষায় সাত জনের করোনা শনাক্ত হয়, আক্রান্তের হার ১৪ শতাংশ। ৩ জুন ১৮৮টি নমুনা পরীক্ষা করে ৫১ জনের করোনা হয়, আক্রান্তের হার ২৭ দশমিক ১২ শতাংশ। ২ জুন ৭৫টি নমুনা পরীক্ষা করে ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ হারে একজনের করোনা শনাক্ত হয়। ১ জুন ১৫৫টি নমুনা পরীক্ষায় ১৩ জনের করোনা শনাক্ত হয়, আক্রান্তের হার ৮ দশমিক ৩৮ শতাংশ।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ পর্যন্ত দুই হাজার ১১৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন মোট ১ হাজার ৮৪৩ জন। বর্তমানে আক্রান্ত আছেন ২০৪ জন। তাদের মধ্যে হোম আইসোলেশনে আছেন ১৮৩ জন এবং হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৮ জন ও ঢাকায় আছেন তিন জন। জেলায় এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৭০ জন। ১ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় মারা গেছেন দুই জন।
চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. এ এস এম মারুফ হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, সীমান্তবর্তী জেলা হওয়ার কারণে এখানে বাড়তি সর্তকতা নেওয়া হয়েছে।
মেহেরপুর
মেহেরপুরে জুন মাসে করোনা শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী বলে জানিয়েছেন জেলা সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন।
আজ বুধবার তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ মাসে মেহেরপুরে গড়ে প্রতিদিন করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি। গত মাসে ঈদের পর থেকে শনাক্তের হার এরকম হারে বাড়ছে।'
মেহেরপুরে গত ২৪ ঘণ্টায় ৯৭টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে মেহেরপুর জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এক হাজার ১৩৩ জন এবং মারা গেছেন ২৩ জন।
জেলায় ৭ জুন ৫১টি নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয় ১৪ জনের, শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৪৫। ৬ জুন ৬০টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয় ১০ জনের, শনাক্তের হার ১৬ দশমিক ৬৬। ৫ জুন ৫৩টি নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়, শনাক্তের হার ২৬। ৪ জুন ৩৪টি নমুনা পরীক্ষা করে একজনের করোনা শনাক্ত হয়। ৩ জুন ৫৯টি নমুনা পরীক্ষা করে ১২ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ২ জুন ৩১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়। ১ জুন ৪৭টি নমুনা পরীক্ষা থেকে আট জনের করোনা শনাক্ত হয়, আক্রান্তের হার ১৭ শতাংশ।
Comments