রাশিয়াকে ‘ক্ষতিকারক কাজে’ না জড়াতে সতর্ক করলেন বাইডেন

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফরের শুরুতে রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে তারা যদি ‘ক্ষতিকারক কাজে’ জড়িত হয় তাহলে তাদেরকে ‘বলিষ্ঠ ও অর্থবহ’ প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হবে।
জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার প্রথম আনুষ্ঠানিক বিদেশ সফরের শুরুতে রাশিয়াকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন যে তারা যদি ‘ক্ষতিকারক কাজে’ জড়িত হয় তাহলে তাদেরকে ‘বলিষ্ঠ ও অর্থবহ’ প্রতিক্রিয়ার শিকার হতে হবে।

ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপড়েনের পরিপ্রেক্ষিতে বাইডেন তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক জোরদার করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বিবিসি এ তথ্য জানিয়েছে।

বাইডেন গতকাল বুধবার যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন উল্লেখ করে সংবাদ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি একটি নতুন ‘আটলান্টিক চুক্তি’র বিষয়ে কথা বলবেন।

এই মৈত্রী চুক্তিটি হতে যাচ্ছে ১৯৪১ সালে তৎকালীন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টের সই করা চুক্তিটির আধুনিক রূপ। এই নতুন চুক্তিতে জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক নিরাপত্তার মতো চ্যালেঞ্জগুলোকে যৌথভাবে মোকাবিলার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

আট দিনের সফরসূচিতে বাইডেন যুক্তরাজ্যের রানির সঙ্গে উইন্ডসর প্রাসাদে দেখা করবেন, জি৭ নেতাদের সভায় যোগ দেবেন এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রথম বারের মতো ন্যাটো সম্মেলনে যোগ দেবেন।

সফরের শেষ দিকে তিনি জেনেভায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।

হোয়াইট হাউস থেকে বলা হয়েছে, পুতিনের সঙ্গে আলোচনায় বাইডেন বেশ কয়েকটি ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ’ বিষয় নিয়ে আলোচনা করবেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তন, ইউক্রেনে রাশিয়ার সেনাবাহিনীর ভূমিকা, রাশিয়ার সাইবার হ্যাকিং কার্যক্রম ও রাশিয়ার বিরোধী দলের নেতা অ্যালেক্সি নাভালনি প্রসঙ্গ।

গতকাল বুধবার ইংল্যান্ডের সুফোকে আরএএফ মিলডেনহল বিমানঘাঁটিতে মার্কিন সেনা ও তাদের আত্মীয়দের উদ্দেশ্যে বক্তব্যে বাইডেন জানিয়েছেন যে তিনি পুতিনকে একটি পরিষ্কার বার্তা দেবেন।

‘আমরা রাশিয়ার সঙ্গে সংঘর্ষে যেতে চাই না। আমরা তাদের সঙ্গে একটি স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক সম্পর্ক চাই। কিন্তু এটাও আমি পরিষ্কার বলতে চাই— যদি রাশিয়ার সরকার কোন ক্ষতিকারক কার্যকলাপে জড়ায় তাহলে যুক্তরাষ্ট্র বলিষ্ঠ ও অর্থবহ প্রতিক্রিয়া দেখাবে।’

বেশ কিছু কারণে ওয়াশিংটন ও মস্কোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক নিম্ন পর্যায়ে রয়েছে। গত এপ্রিলে পুতিন পশ্চিমের দেশগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে তারা রাশিয়াকে ‘খোঁচাচ্ছে’। তিনি তাদেরকে ‘বিপৎসীমা’ অতিক্রম না করার বিষয়ে সতর্ক করে দেন।

আগামীকাল শুক্রবার জি৭ সম্মেলন দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের কর্নওয়ালে শুরু হবে। এই বৈঠকে যথারীতি বিশ্বের সাতটি বৃহত্তর অর্থনৈতিক শক্তি— কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, জাপান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা যোগ দেবেন।

জি৭ বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে কোভিড মহামারির কারণে সৃষ্ট ক্ষয়ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো ও একটি শক্তিশালী বৈশ্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা তৈরি করা, যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের মহামারি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। জলবায়ু পরিবর্তন ও বাণিজ্যিক সম্পর্কও আলোচনা সূচিতে রয়েছে।

মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছে, বাইডেন প্রশাসন আগামী দুই বছরে ১০০টি দেশে ফাইজারের কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ৫০০ মিলিয়ন ডোজ বিনামূল্যে দেওয়া পরিকল্পনা করছে।

জি৭ বৈঠকের পর বাইডেন ও ফার্স্ট লেডি জিল বাইডেন উইন্ডসরে রানির সঙ্গে দেখা করবেন। এরপর, সোমবার ন্যাটোর বৈঠকে যোগ দিতে তিনি ব্রাসেলসে যাবেন।

সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আমলে ন্যাটোর সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি হয়। তবে ন্যাটোর সেক্রেটারি জেনারেল জেন্স স্টলটেনবার্গ হোয়াইট হাউজ সফরকালে গত সোমবার মার্কিন মিত্রদের প্রতি বাইডেনের ‘কঠোর অঙ্গীকার’ এর প্রশংসা করেন।

Comments

The Daily Star  | English

Ex-public administration minister Farhad arrested

Former Public Administration minister Farhad Hossain was arrested from Dhaka's Eskaton area

3h ago