ব্যবসায়ী হত্যার বিচার দাবিতে গাইবান্ধায় অর্ধদিবস হরতাল পালিত
গাইবান্ধার জুতা ব্যবসায়ী হাসান আলীকে হত্যার বিচারের দাবিতে অর্ধদিবস হরতাল পালন করেছে ‘হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ’। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত গাইবান্ধা শহরে এ হরতাল পালিত হয়।
হাসান হত্যার পর থেকে সব শ্রেণীর পেশাজীবী মানুষের এই প্রতিবাদ মঞ্চ নানা কর্মসূচির মাধ্যমে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন করেছে যাচ্ছে। ব্যবসায়ী হাসান আলীর হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমানকে প্রত্যাহার এবং হত্যার সঙ্গে জড়িত দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিচারের দাবিতে এর আগে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে অবস্থান, আইজিপির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে হাসান হত্যা প্রতিবাদ মঞ্চ।
আজ হরতাল চলাকালে গাইবান্ধা শহরের সব দোকান-পাট বন্ধ ছিল। সকালে গাইবান্ধা থেকে দূরপাল্লার কোন বাস ছেড়ে যায়নি। তবে, ১২টার পর দোকান-পাট বন্ধ থাকলেও রিক্সা-ভ্যান ও আন্তঃজেলা বাস গাইবান্ধা ছেড়ে যায়।
হরতালের সময় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ‘হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ’ এর সমন্বয়ক আমিনুল ইসলাম গোলাপ, ওয়াজিউর রহমান রাফেল, অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু প্রমুখ।
গাইবান্ধা বারের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম বাবু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হাসান হত্যার বিচারের দাবিতে পূর্ব-ঘোষিত আজকের হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে চলছে। আমাদের চার দফা দাবি বাস্তবায়িত না হলে আগামী দুয়েকদিনের মধ্যে আরও কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হবে।’
হাসান হত্যার ন্যায়বিচার নিশ্চিতে আলাদাভাবে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান এই আইনজীবী।
হাসান আলী একটি ‘চেক ডিসঅনার’ মামলার প্রেপ্তারি পরোয়ানাভুক্ত আসামি ছিলেন। স্থানীয় গাইবান্ধা জেলা আওয়ামী লীগের উপদপ্তর সম্পাদক মাসুদ রানার কাছ থেকে কিছু টাকা ঋণ নিয়ে তা সময়মতো পরিশোধ করতে পারেননি হাসান। পরে, গত ফেব্রুয়ারিতে মাসুদ তাকে নিজ বাড়িতে ধরে নিয়ে গিয়ে কয়েকদিন আটকে রাখেন। এরপর পুলিশ হাসানকে মাসুদের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।
কিন্তু, পুলিশ তাকে মাসুদ রানার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে আদালতে চালান না দিয়ে আবার মাসুদ রানার হাতে তুলে দেয় বলে পরিবারের অভিযোগ।
পরে, গত ১০ এপ্রিল মাসুদ রানার বাড়ির টয়লেট থেকেই ঝুলন্ত অবস্থায় হাসানের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবিতে গাইবান্ধার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন আন্দোলন করে এবং গঠিত হয় হাসান হত্যার প্রতিবাদ মঞ্চ।
হাসান হত্যার প্রতিবাদে গাইবান্ধায় আন্দোলন শুরু হলে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে ক্লোজ করা হয়। কিন্তু, অভিযুক্ত ওসি মাহফুজুর রহমানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। পরে, ব্যবসায়ী মহল ওসির প্রত্যাহারসহ চার দফা দাবিতে এই হরতালের ডাক দেয়।
আরও পড়ুন:
গাইবান্ধায় ব্যবসায়ী হত্যার বিচার দাবিতে বিক্ষোভ, ১০ জুন হরতাল আহ্বান
ব্যবসায়ীর মরদেহ উদ্ধার, আ. লীগ নেতা আটক
Comments