ঐতিহ্যের লড়াইয়ে কাল মুখোমুখি মোহামেডান-আবাহনী
এক সময় মোহামেডান ও আবাহনীর লড়াই মানেই ছিল টান টান উত্তেজনা। তা হোক ক্রিকেট, ফুটবল কিংবা হকি। সে উত্তেজনা এতোই ছিল যে কখনো কখনো সহিংসতাতেও পরিণত হতো। কালক্রমে সে আমেজ আর নেই। রয়েছে গেছে কেবল ঐতিহ্যটাই। সেই ঐতিহ্যের লড়াইয়ে আগামীকাল শুক্রবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হচ্ছে মোহামেডান ও আবাহনী।
আবাহনী নিজেদের অবস্থা ধরে রাখলেও গত প্রায় এক যুগ ধরে ক্রীড়াঙ্গনে আগের অবস্থায় নেই মোহামেডান। পৃষ্ঠপোষকের অভাবে আগের মতো শক্তিশালী দল আর গড়তে পারে না তারা। মাঝারী সারির দল গড়ে কোনো মতে এখনও প্রিমিয়ার লিগে টিকে আছে। এক সময়ে তাদের সঙ্গে সমান তালে লড়াই হলেও বর্তমানে অনেক এগিয়ে গেছে আবাহনী। পার্থক্যটা এতোটাই বেড়েছে যে শেষ ২০ মোকাবেলায় ১৫টি জয় পেয়েছে তারা। মাত্র ৫টি জয় মোহামেডানের। তাও শেষ বার জিতেছিল ২০১৫-১৬ মৌসুমে।
তবে চলতি মৌসুমে সাকিব আল হাসানকে দলে টেনে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছিল মোহামেডান। প্রথম তিনটি ম্যাচে জয় তুলে পাল্লা দিচ্ছিল আবাহনীর সঙ্গে। যদিও সাকিব তেমন কিছুই করতে পারেননি। তবে সতীর্থরা দলকে টেনে নিয়েছিলেন। কিন্তু এর পরের তিন ম্যাচে যেন কি হয়ে যায় দলটির। সাকিবের সঙ্গে ব্যর্থতার বৃত্তে নাম লেখান তার সতীর্থরাও। মাঝেমধ্যে দুই একজন জ্বলে উঠলেও তা জয়ের জন্য যথেষ্ট হচ্ছে না উল্টো টানা তিনটি ম্যাচ হেরে বসে তারা।
অন্যদিকে প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে রীতিমতো উড়ছে আবাহনী। যদিও মাঝে একটি ম্যাচে হেরেছে তারা। তাও দুর্বল খেলাঘর সমাজকল্যাণ সমিতির কাছে। ব্যাপারটা পচা শামুকে পা কাঁটার মতোই। এরপর টানা দুটি জয়ে আবার আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে তারা।
বরাবরের মতো অবশ্য এবারও শক্তিশালী দল গড়েছে আবাহনী। জাতীয় দলের উঠতি তরুণ ক্রিকেটার প্রায় সবাই খেলছে তাদের দলেই। মোহাম্মদ নাঈম, আফিফ হোসেন, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, মোসাদ্দেক হোসেন, আমিনুল ইসলাম বিপ্লবদের সঙ্গে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। এছাড়া শহিদুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিবদের মতো তরুণ তুর্কিও আছেন। আছেন অভিজ্ঞ আরাফাত সানি ও তাইজুল ইসলামরাও।
অন্যদিকে বরাবরের মতো মাঝারী সারির দল গড়েছে মোহামেডান। অবশ্য বেশিরভাগই প্রিমিয়ার লিগে পরীক্ষিত। সংস্করণ বদলে যাওয়ায় কিছুটা ঝামেলায় পরে দলটি। সাকিবকে পাওয়ায় আত্মবিশ্বাস বেড়েছিল দলটির। কিন্তু তার টানা ব্যর্থতায় যেন মিলিয়ে গেছে শূন্যে। শুরুতে সতীর্থরা ভালো খেললেও বর্তমানে পারছেন না তারাও।
সবমিলিয়ে পার্থক্যটা দুই দলের অধিনায়কেও। যেখানে দুর্দান্ত ছন্দে আছেন আবাহনী অধিনায়ক মুশফিক। অন্যদিকে নিজেকে খুঁজে বেড়াচ্ছেন মোহামেডান অধিনায়ক সাকিব। তবে দেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞাপনের নাম সাকিব। সারা বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলে টি-টোয়েন্টিতে দারুণ অভিজ্ঞ এ ক্রিকেটার। ছন্দে ফিরে পেতেন যখন তখন। আর কে না জানে সাকিব জ্বলে উঠলে খড়কুটোর মতো উড়ে যেতে পারে যে কোনো দল। তা হোক না আবাহনীও।
Comments