কুষ্টিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৩, শনাক্তের হার ২৯.৭৫ শতাংশ
কুষ্টিয়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই কোভিড-১৯ পজিটিভ ছিলেন। আজ শনিবার সকালে জেলা সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘মৃত তিন জনের বাড়ি কুষ্টিয়া শহরে।’
কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের আরটি-পিসিআর ল্যাবের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ২০৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে কোভিড-১৯ পজিটিভ শনাক্ত হয়েছেন ৬১ জন। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ। এর আগের ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ছিল ১৪ দশমিক ০১ শতাংশ।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার জানিয়েছেন, আজ সকাল ৮টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ৫০ শয্যার করোনা ইউনিটে ৬২ জন করোনা রোগী ভর্তি আছেন। হোম আইসোলেশনে আছেন ৫১৯ জন। আজ সকাল পর্যন্ত মোট শনাক্ত হয়েছেন ৫৮১ জন। জেলায় এ পর্যন্ত মোট ১২৭ জন মারা গেছেন। এর মধ্যে গত ১ থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৭ জন।
মৃত্যু হারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক এসএম মুস্তানজিদ ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘যেহেতু মৃত্যুর হার বেড়েছে তাই আক্রান্তদের নিবিড় পরিচর্যায় আনাতে হবে।’
করোনাভাইরাসের অব্যাহত বিস্তার রোধে কুষ্টিয়ার পৌর এলাকাকে সম্পূর্ণ লকডাউনে আনার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। আজ ভোররাত ১২টার কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। আগামী ১৮ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত জেলায় কঠোরভাবে বিধি-নিষেধ পালন করতে বলা হয়েছে।
জনসাধারণকে ঘরের বাইরে আসতে একেবারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে বাইরে এলে মাস্ক পরতে হবে। আজ থেকে ১৮ জুন পর্যন্ত জেলায় দোকানপাট, শপিং মল, খাবারের দোকান এবং হোটেল-রেস্তোরাঁও বন্ধ থাকবে। কুষ্টিয়া পৌর এলাকায় কোনো প্রকার যানবাহন চলাচল করবে না। কাঁচাবাজার, খুচরা ও পাইকারি বাজারসহ ওষুধের দোকান খোলা থাকবে। জনসমাগম হয় এমন কোনো ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা যাবে না।
তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জরুরি পণ্য পরিবহন ও সরকারি নির্মাণকাজ চলবে। কেউ স্বাস্থ্যবিধি ভাঙলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও জরুরি পরিসেবা যেমন কৃষি উপকরণ, খাদ্যশষ্য ও খাদ্যদ্রব্য পরিবহন, গণমাধ্যম, সরকারের রাজস্ব কার্মকাণ্ডে নিয়োজিত সংস্থার কর্মচারীরা নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে। স্বাস্থ্য বিধি মেনে শিল্প কারখানা চালু থাকবে। তবে কলকারখানাগুলো নিজস্ব পরিবহনে শ্রমিক-কর্মচারীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে।
সকাল থেকে যান চলাচল ছিল সীমিত ও সাধারণ মানুষদের কম বের হতে দেখা গেছে।
লকডাউনকে সমর্থন করেছেন জেলার নাগরিক মুভমেন্টে জড়িত বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংগঠন। ৪০টি সামাজিক সংগঠনের প্লাটফর্ম সম্মিলিত সামাজিক জোটের চেয়ারম্যান লেখক ও গবেষষক ড. আমানুর আমান কঠোরভাবে লকডাউন মনিটরিং করার আহবান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিগত সময়ে এসব লকডাউন সঠিকভাবে প্রতিপালিত হতে দেখা যায়নি। এবার যেহেতু পরিস্থিতি ভয়াবহ তাই প্রশাসনকে কঠোর হতে হবে।
Comments