‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’ উপাচার্যগণ

লেখার বিষয় বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং নিয়ে। শুরুতে একটু অন্য প্রসঙ্গ। কিংবদন্তি সাংবাদিক ফয়েজ আহমদের ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’র একটি ঘটনা।
(উপরের সারিতে বাম থেকে) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক এম আবদুস সোবহান, রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. ওয়াহিদুজ্জামান এবং (নিচের সারিতে বামে) গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ইউজিসি। এছাড়াও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের উপাচার্য ড. এম রোস্তম আলী (নিচের সারিতে মাঝে), খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ফায়েক উজ্জামানের (নিচের সারিতে ডানে) বিরুদ্ধেও। ছবি: সংগৃহীত

লেখার বিষয় বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং নিয়ে। শুরুতে একটু অন্য প্রসঙ্গ। কিংবদন্তি সাংবাদিক ফয়েজ আহমদের ‘মধ্যরাতের অশ্বারোহী’র একটি ঘটনা।

বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করা কয়েকজন সাংবাদিক বন্ধু মিলে ফয়েজ আহমেদ মেস করে থাকেন নারিন্দার ভুতের গলিতে।

পত্রিকা অফিসের কাজ শেষ হয় রাত দুইটা তিনটায়। কেউ টেবিলে নিউজ পেপার বিছিয়ে বাকি রাতটুকু পার করে দেন, কেউ বাসায় ফেরেন। ফয়েজ আহমদরা মেসে ফিরতেন। সে বছর বড় বন্যা হলো।

দিনের বেলা কিছু অংশ ছোট নৌকায় পার হয়ে অফিসে আসা যায়। কিন্তু অত রাতে নৌকা থাকে না। সবাই মেসে ফেরেন কোমর পর্যন্ত ভিজে। একমাত্র ব্যতিক্রম ফয়েজ আহমদ, তিনি ফেরেন না ভিজে। ভিজে ফিরতে ফিরতে ইত্তেফাকের সহ-সম্পাদক মোহাম্মদউল্লাহর ঠান্ডা লেগে গেছে। সবার আলোচনার বিষয় ফয়েজ আহমেদের না ভেজার ‘রহস্য’। একদিন রাত দুইটায় মোহাম্মদউল্লাহ বন্ধু ফয়েজ আহম্মদকে বললেন, আজ তোর সঙ্গে ফিরব। দেখব না ভিজে তুই কি করে ফিরিস। ফয়েজ আহমদের কাজ শেষ হলো তিনটায়। দুই বন্ধু বের হলেন ইত্তেফাক অফিস থেকে। হাটখোলার ইত্তেফাক অফিসের কাছের হরদেও গ্লাস ফ্যাক্টরির পাশের রেললাইন পার হলেই খ্রিষ্টানদের কবরস্থান। উল্টো দিকে বলধা গার্ডেন। পাশ দিয়ে রাস্তা চলে গেছে নারিন্দার দিকে। রাতে কবরস্থানে অনেকগুলো ঘোড়াকে ঘাস খেতে দেখা যায়। সারাদিন ঘোড়ার গাড়ি চালিয়ে রাতে ঘোড়াগুলোকে ঘাস খাওয়ার জন্যে কবরস্থানে ছেড়ে দিয়ে যান কোচোয়ানরা। এমন একটি ঘোড়ার সঙ্গে বন্ধুত্ব করে নিয়েছেন ফয়েজ আহমেদ, যেটায় চড়ে তিনি বন্যার পানি পার হয়ে মেসে পৌঁছান। সেরাতে এক ঘোড়া দুইজনকে নিতে গিয়ে বিদ্রোহ করে বসে। পেছন থেকে পড়ে যান মোহাম্মদউল্লাহ। ফয়েজ আহমেদ ঠিকই না ভিজে শেষরাতে মেসে ফেরেন।

সংবাদপত্র অফিসের রাত জেগে কাজ করার সেই ঐতিহ্য এখন আর নেই। রিপোর্টারদের মধ্যরাতে বাসায় ফিরতে হয় না।

তাতে কী, ইদানীং উপাচার্যদের মধ্যরাতে কাজের বিষয়টি দৃশ্যমান হচ্ছে। মধ্যরাত বা শেষ রাতে কাজ করে সবার চেয়ে এগিয়ে আছেন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহ।

কিছুদিন আগে বলেছিলেন তিনি দিনে ২০-২২ ঘণ্টা কাজ করেন। তার মানে ঘুমান মাত্র দুই ঘণ্টা। ১৪৪৭ দিনের মধ্যে ২৪০ দিন ক্যাম্পাসে উপস্থিত অর্থাৎ ১২০৭ দিন অনুপস্থিত উপাচার্য সম্ভবত ধরেই নিয়েছিলেন যে তার কথা কেউ বিশ্বাস করেননি। ফলে বিদায় বেলা তিনি রাত সাড়ে তিনটায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়েছেন। তার অভিনব কর্মকাণ্ডের কথা বলে শেষ করা মুশকিল। তিনি হঠাৎ হঠাৎ সকালের ফ্লাইটে গিয়ে বিকেলের ফ্লাইটে ঢাকায় ফিরে আসেন। এমন এক দিন হঠাৎ করে ক্যাম্পাসের বাংলোতে গেছেন। শিক্ষক কর্মচারীরা এসেছেন দাবি নিয়ে। বাংলোর সামনে তারা অবস্থান নিয়েছেন। পরের দিনের পত্রিকার শিরোনাম হয়েছে ‘পেছন দরজা দিয়ে পালিয়ে ঢাকায় ফিরলেন উপাচার্য কলিমউল্লাহ’।

তিনি ইতিমধ্যে একটি বাংলা সিনেমায় অভিনয় করেছেন। প্রস্তাব পেলে নায়ক চরিত্রে অভিনয় করবেন বলেও জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে। শিক্ষক নিয়োগসহ আরও কিছু গুরুতর দুর্নীতির অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে। নিজের মাকে নিয়োগ বোর্ডের সদস্য করেছেন। ইউজিসি তদন্তে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। মন্ত্রণালয় নির্বিকার। তিনি নির্বিঘ্নে দায়িত্ব শেষ করছেন।

র‍্যাঙ্কিং বিষয়ক আলোচনায় আসার আগে আরও কয়েকজন উপাচার্যের সম্পর্কে একটু ধারণা নেওয়া যাক।

মধ্যরাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য বিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক সোবহানের বাসভবনের সামনে চাকরির দাবিতে অবস্থান নিলেন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। তিনি তাদের চাকরি দেবেন বলে আশ্বস্ত করলেন। মেয়াদ শেষের একদিন আগে তিনি শুধু তাদেরকেই নয়, আরও শতাধিকজনকে চাকরি দিলেন। এখানেও মধ্যরাত মানে সারারাত জেগে চাকরির কাগজপত্র ঠিক করলেন। সুনির্দিষ্ট করে অভিযোগ উঠল অর্থ মানে টাকা মানে ঘুষ নিয়ে চাকরি দিয়েছেন।

উপাচার্য এমন কর্ম করতে পারেন তা অনুধাবন করে প্রতিবাদকারী শিক্ষকরা রেজিস্ট্রার ভবনে তালা লাগিয়ে দিয়েছিলেন। উপাচার্যের মেয়ের জামাই তালা ভেঙে কাগজপত্র বের করে আনলেন। উপাচার্যের এই মেয়ের জামাই ও মেয়ের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা ছিল না। উপাচার্য নিয়ম পরিবর্তন করে তাদের শিক্ষক বানিয়েছেন। মজার বিষয়, উপাচার্যের মেয়ের জামাই তালা ভেঙে কাগজপত্রও সরিয়েছেন মধ্যরাতে। এখন জানা যাচ্ছে দ্বিতীয় শ্রেণি ও এক বিষয়ে ফেল করা ছাত্রকেও তিনি শিক্ষক বানিয়ে গেছেন।

আরেকজন উপাচার্য  চাকরির যোগ্যতা কমিয়ে নিজের ছেলেকে শিক্ষক বানিয়েছেন। এক উপাচার্যের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পাশাপাশি নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ উঠেছে। আরেক উপাচার্য নিজে একটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। ছেলের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয় ফান্ড থেকে কোটি টাকা দিয়ে আরও একটি গাড়ি কিনে দিয়েছেন। আরেকজন উপাচার্য স্বামী-সন্তানকে দিয়ে নির্মাণ কাজের কমিশন ভাগ বাটোয়ারা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। গণমাধ্যমের সংবাদ ও ছাত্রনেতাদের টেলিফোন সংলাপ অনুযায়ী তিনি সরকারি দলের ছাত্র সংগঠনের নেতাদের এক-দেড় কোটি টাকা চাঁদার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। উপাচার্য অভিযোগ করেছেন, ছাত্র নেতারা তার কাছে এক কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেছিলেন। উপাচার্যের বাসভবনে ছাত্র নেতাদের সঙ্গে তার মিটিংটিও হয়েছিল বেশ রাতে। গণমাধ্যমে তেমন সংবাদই প্রকাশিত হয়েছিল।

উপাচার্যের অভিযোগের ভিত্তিতে ছাত্র নেতাদের পদ বাতিল হয়েছে। উপাচার্য টিকে আছেন দাপটের সঙ্গে। বিদায় বেলায় তিনিও রাবি উপাচার্যকে অনুসরণ করে শিক্ষক, কর্মচারী নিয়োগে তৎপর হয়ে উঠেছেন। দরকার নেই, তারপরও অনলাইনে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপাচার্য।

আরেক উপাচার্যের কাছে শিক্ষার্থীরা দাবি নিয়ে গেলে তিনি সরকারি ছাত্র সংগঠনের নেতা-ক্যাডারদের ডেকে পেটানোর ব্যবস্থা করেন। নিজ শিক্ষার্থীদের জঙ্গি বলে বিষোদগার করেন। ১০ টাকার চা-সিঙ্গারা-সমুচা তার কাছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য।

সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রসঙ্গে ফিরি। যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রতিষ্ঠান কিউএস বিশ্বের সেরা এক হাজার বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করে। এবছরের তালিকায় সেরা ৮০০’র মধ্যে নেই বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়। ৮০০-১০০০ এর মধ্যে আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েট। ২০১২ ও ২০১৪ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৬০১ ও ৭০১ নম্বরে। অর্থাৎ ২০২১ সালে এসে মানের অবনতি হয়েছে। অথচ ২০২১ সালের সেরা ১০০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকার ৩৫৫,৩৭৩ ও ৪৫৪ নম্বরে স্থান করে নিয়েছে পাকিস্তানের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়।

এমনিতেই বাংলাদেশে শিক্ষাখাতে বাজেট কম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এবছরের বাজেট ৮৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। গবেষণা বাজেট ৪০ কোটি ৯১ লাখ টাকা। শতকরা হিসাবে যা গত বছরের চেয়ে কম। এর মধ্যে আবার বড় অংশ ব্যয় হবে ঢাবির ৫৬টি গবেষণাগারের উন্নয়ন ও সরঞ্জাম কেনায়। প্রকৃত গবেষণার বাজেট নিতান্তই কম। ঢাবির মোট বাজেটের ৭০ শতাংশের উপরে ব্যয় হবে বেতন-ভাতা খাতে। অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চিত্র এর চেয়ে করুণ। এর বাইরে শিক্ষকরা পাঠদান বা গবেষণার চেয়ে অতিমাত্রায় সক্রিয় দলীয় রাজনীতিতে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্রমাবনতি ও সেরা তালিকায় না থাকার ক্ষেত্রে এগুলো নিশ্চয় ভূমিকা রাখছে। কিন্তু প্রধানতম কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরা। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইকনিক চরিত্র উপাচার্য। তিনি একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করেন। বর্তমানে বা বিগত কিছু বছর ধরে উপাচার্য হিসেবে যাদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, তাদের কয়েকজনের কিছু কর্মকাণ্ড উপরে উল্লেখ করা হয়েছে। উল্লেখ করার বাইরে থেকে গেছে আরও এমন অনেক ঘটনা। যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, উপাচার্য হয়ে যারা অনৈতিকতা ও আর্থিক দুর্নীতিতে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছেন, সেইসব উপাচার্যরা পরিচালনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়। নারী কেলেঙ্কারির অভিযোগ পর্যন্ত উঠেছে দু’একজনের বিরুদ্ধে। তাদের অপসারণ করা হয়নি। শিক্ষার্থী-শিক্ষকদের আন্দোলনকেও ধর্তব্যের মধ্যে নেওয়া হয়নি। ইউজিসি তদন্ত করে দুর্নীতি, অনৈতিকতার প্রমাণ পেয়েছে। ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছে। ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এমন সব উপাচার্যদের দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা করে আমরা হা-হুতাশ করছি, কেন পৃথিবীর সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় আমাদের নাম নেই! দুর্নীতির অভিযুক্তদের দিয়ে প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করলে, দুর্নীতির তালিকায় স্থান পাওয়া যেতে পারে, সেরা বা শ্রেষ্ঠের তালিকায় নয়।

আমরা অনেক সূচকে আশপাশের অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলি। যা অসত্যও নয়। কিন্তু মানবসম্পদ উন্নয়নে আমরা যে ক্রমাগতভাবে পিছিয়ে পড়ছি, তা আড়াল করা সুযোগ নেই। প্রাথমিক, মাধ্যমিক,উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবন নির্মাণ করেছি। শিক্ষকের মান উন্নয়ন করিনি।

ভবন-রাস্তা-সেতু-ফ্লাইওভার-মেট্রোরেল-টানেল উন্নয়নের জন্যে অপরিহার্য। কিন্তু এগুলো মূল উন্নয়ন নয়, উন্নয়নের সহায়ক। মূল উন্নয়ন মানবসম্পদ উন্নয়ন। সেদিকে আমাদের মনোযোগ নেই, তাই শুধু নয়—মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছি। ঢাকা এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকালে দেখব, যেখানে যে খালি জায়গা ছিল সেখানে ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। শিক্ষার মান উন্নয়নে, শিক্ষার্থীদের বাসস্থান,খাদ্য-জীবনমান তথা শিক্ষা উন্নয়নে কোনো উদ্যোগ নেই। করোনাকালেও নেই। আমরা মূল উন্নয়ন বাদ দিয়ে যা উন্নয়নের সহায়ক তার পেছনে সময় ব্যয় করছি। ফলশ্রুতিতে আইকনিক চরিত্র উপাচার্যরা এখন অর্থের বিনিময়ে চাকরি দেন, অনৈতিকতার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। ক্রমশ দৃশ্যমান আমাদের শিক্ষা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবনতি।

 

[email protected]

Comments

The Daily Star  | English

Horrors inside the Gaza genocide: Through a survivor’s eyes

This is an eye-witness account, the story of a Palestinian in Gaza, a human being, a 24-year-old medical student, his real human life of love and loss, and a human testimony of war crimes perpetrated by the Israeli government and the military in the deadliest campaign of bombings and mass killings in recent history.

7h ago