লকডাউনের সুফল নিয়ে রাজশাহীর ২ সরকারি কর্মকর্তার ‘বিপরীত’ তথ্য

কমপক্ষে ২ সপ্তাহের লকডাউন প্রয়োজন: রামেক পরিচালক, সুফল পেতে শুরু করেছি: জেলা প্রশাসক
বিকেলে শহরের লকডাউন পরিস্থিতি পরিদর্শনে বের হন রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল। ছবি: স্টার

রাজশাহীতে গত শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া লকডাউনের সুফল পেতে কেমন সময় লাগতে পারে? এই এক প্রশ্নের জবাবে রাজশাহীর উচ্চপর্যায়ের দুজন সরকারী কর্মকর্তা ভিন্ন ও বিপরীত তথ্য দিয়েছেন।

আজ রোববার সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেছেন, ‘লকডাউনের সুফল বোঝার সময় এখনো আসেনি।’

তিনি বলেন, ‘একটি ভালো ফলাফল পেতে কমপক্ষে দুই সপ্তাহের প্রকৃত অর্থের লকডাউন প্রয়োজন।’

অপরদিকে, বিকেলে শহরের লকডাউন পরিস্থিতি পরিদর্শনে বেরিয়ে রাজশাহীর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যেই সুফল পেতে শুরু করেছি। রাজশাহীতে করোনায় মৃত্যু ও সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে।’

আব্দুল জলিল বলেন, ‘ইতোমধ্যেই আমরা সুফল পাচ্ছি। আপনারা দেখেছেন যে, আজকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেসব (১৩ জন) রোগী মারা গেছেন, তাদের মধ্যে দুজন আছেন রাজশাহীর, তবে বাকিরা অন্যান্য জেলার। আজকে আমার কাছে গত ২৪ ঘণ্টার যে প্রতিবেদন আছে, সেখানে রাজশাহী জেলায় করোনা সংক্রমণের হার ২৪ শতাংশ। আমি আশা করছি- আগামী ১৭ জুন পর্যন্ত (সাত দিনের লকডাউন শেষে) সংক্রমণের হার অনেক কমে যাবে। যদি কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না আসে তখন হয়তো আমাদের কৌশল পরিবর্তন করতে হবে।’

সকালে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী তার সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘লকডাউনের তিনদিন পার হলেও এত অল্প সময়ে লকডাউনের সুফল পাওয়া যাবে না। কমপক্ষে দুই সপ্তাহ পার না হলে কোনো ফলাফলই পাওয়া যাবে না।’

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী। ছবি: স্টার

তিনি বলেন, ‘এখন যেসব রোগী আমরা পাচ্ছি, তারা লকডাউনের আগেই সংক্রমিত হয়েছেন এবং তারা (সংক্রমিতরা) আগামী দুই সপ্তাহ পর্যন্ত হাসপাতালে আসতে থাকবেন। (করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে) লকডাউনের কার্যকারিতা গোটা বিশ্বে প্রমাণিত। আমাদের দেশেও সংক্রমণের আগে কঠোর লকডাউন আরোপ করে দুই বার ভালো ফল পাওয়া গেছে। প্রশাসনে যারা আছেন, আশাকরি- তারা বিষয়টি ভালোভাবে নজরদারি করবেন। লকডাউনের ফল ভালোই হবে।’

শহর পরিদর্শনের বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল জলিল বলেন, ‘সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ আছে, শুধু অল্প কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার খোলা আছে। আর কিছু উৎসুক জনতা রাস্তায় নামছেন।’

জেলা প্রশাসক সবার সহযোগিতা কামনা করে বলেন, ‘এই শহরের সব মানুষকে আমি বিনয়ের সঙ্গে অনুরোধ করছি যে, এটা (লকডাউন) আপনাদের জন্য। আপনাদের জানমালের নিরাপত্তার জন্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সরকারের সিদ্ধান্ত শ্রদ্ধা করুন, সহযোগিতা করুন এবং এই কয়েকটা দিন বাড়িতে থাকুন।’

উল্লেখ্য, মে মাসের মধ্যভাগে চাঁপাইনবাবগঞ্জে করোনাভাইরাসের ভারতীয় ডেল্টা রূপের সংক্রমণ শুরু হয়। তখন এই জেলায় লকডাউন আরোপ করা হলেও রাজশাহী, নওগাঁ ও নাটোর জেলায় লকডাউন ছিল না। সেই সুযোগে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাইরে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে।

এই পরিস্থিতিতে গত শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে রাজশাহী শহরে লকডাউন আরোপ করে প্রশাসন। লকডাউন চলবে আগামী ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত।

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহীতে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ দশমিক ৬৭ শতাংশে। একই সময়ে মারা গেছেন ১৩ জন।

নাটোরে ও চাঁপাইনবাবগঞ্জে সংক্রমণের হার কমলেও বেড়েছে নওগাঁ জেলায়।

Comments

The Daily Star  | English

Please don't resign: An appeal to Prof Yunus

Every beat of my patriotic heart, every spark of my nation building energy, every iota of my common sense, every conclusion of my rational thinking compels me to most ardently, passionately and humbly appeal to Prof Yunus not to resign from the position of holding the helm of the nation at this crucial time.

6h ago