জেসমিন হত্যার বিচার ও এক জীবন আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ দাবি

তৈরি পোশাক শ্রমিক জেসমিন বেগম হত্যার বিচার ও এক জীবনের আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গার্মেন্ট শ্রমিকদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ। ছবি: সংগৃহীত

তৈরি পোশাক শ্রমিক জেসমিন বেগম হত্যার বিচার ও এক জীবনের আয়ের সমান ক্ষতিপূরণ প্রদানের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির উদ্যোগে ঢাকা ইপিজেডের লেনি ফ্যাশন, এ ওয়ান বিডি লিমিটেড, রিং শাইন, শাইন ফ্যাশন, জিবি, বেক্সিমকোসহ কয়েকটি বন্ধ কারখানার শ্রমিকদের ন্যায্য পাওনা ও বকেয়া বেতন অবিলম্বে পরিশোধের দাবিতে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় সংগঠনের সভাপ্রধান তাসলিমা আখতার বলেন, ‘গতকাল লেনি ফ্যাশন কর্তৃপক্ষ বকেয়া বেতন দেওয়ার জন্য শ্রমিকদের মোবাইল এসএমএসের মাধ্যমে ডেকে নিয়ে আসেন এবং আসার পর তারা পাওনা পরিশোধ করতে অস্বীকৃতি জানায়। এটি শ্রমিকদের সঙ্গে তামাশা। শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করতে পুরো আশুলিয়া ঢাকা ইপিজেড অঞ্চলকে রণক্ষেত্রে পরিণত করা হয়েছে। জলকামান নিক্ষেপ করে, টিয়ারশেলের ধোয়ায় আচ্ছন্ন করে, লাঠিপেটা করে, গুলি করে পুরো এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করা হয়েছে। জেসমিন বেগম লেফি ফ্যাশনের শ্রমিক না হয়েও পুলিশের নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। পুলিশ দাবি করছে, বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে আঘাত পেয়েছেন। কিন্তু তার মুখে নির্যাতনের ছবি স্পষ্ট।’

‘করোনা মহামারির পর থেকে একের পর এক কারখানা বন্ধ হয়েছে। এ ওয়ানের শ্রমিকরা গত ১৭ মাস ধরে আন্দোলন করছেন। রিং শাইন, শাইন ফ্যাশন, বেক্সিমকোসহ অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের অধীনে কাজ করা ইপিজেডগুলোতে শ্রমিকদের দাবি দাওয়ার প্রতি কোনো তোয়াক্কা করা হয় না। সবাই ভয় পায় ন্যায্য পাওনা চাইতে। স্বাধীন দেশে কেন তাদের ভয় পেতে হবে। বেপজা একটি মুনাফেক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তারা বার বার শ্রমিকদের আশ্বাস দেয়, কিন্তু তা রাখতে পারেন না। সেটা আমরা এ ওয়ানের শ্রমিকদের সঙ্গেও হতে দেখেছি। শ্রম মন্ত্রণালয়ও দায়িত্ব নেয় না’, বলেন তিনি।

এই শ্রমিক নেত্রী আরও বলেন, ‘ঈদের আগে ছুটির দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনে কাঞ্চন মিয়ার পেটে বন্দুক ঠেকিয়ে ছড়রা গুলি ছোড়া হয়। এতে তার অন্ত্র কেটে ফেলতে হয় এবং তিনি কর্মক্ষমতা হারান। তার চিকিৎসা খরচ এবং ক্ষতিপূরণ এখনো দেওয়া হয়নি। গতকাল জেসমিন বেগমকে হত্যা করা হলো। গত সপ্তাহে বয়লার বিস্ফোরণে দুজন শ্রমিক দগ্ধ হয়ে মারা যান। শ্রমিকের জীবন এখন খরচের, সস্তা।’

কাঞ্চন মিয়া এবং জেসমিনের এক জীবনের আয়ের সমপরিমাণ ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি করেন তিনি।

সমাবেশে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সাধারণ সম্পাদক জুলহাসনাইন বাবু, অর্থ সম্পাদক প্রবীর সাহা, এ ওয়ান বিডি লিমিটেডের শ্রমিক নেতা ও আশুলিয়া থানা শাখার সংগঠক আশরাফ আলী ও আব্দুর রাজ্জাক, নারায়ণগঞ্জ জেলা সম্পাদক কাওসার হামিদসহ অনেকেই বক্তব্য রাখেন।

পরে তারা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে থাকা নিহত জেসমিন বেগমের মরদেহ দেখতে যান এবং তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন।

Comments

The Daily Star  | English

Over 5,500 held in one week

At least 738 more people were arrested in the capital and several other districts in 36 hours till 6:00pm yesterday in connection with the recent violence across the country.

14h ago