স্পেনকে রুখে দিল সুইডেন
৮৫ শতাংশ বল পায়ে। পাস ৮৩০টি। যার ৯১ শতাংশই সঠিক। শট ১৭টি। কিন্তু তার কোনো কিছুই কাজে আসলো সুইডেনের জমাট রক্ষণভাগে। ভিন্নভাবে বলা যায় তাদের সব প্রচেষ্টাই ভেস্তে যায় ফরোয়ার্ডের ব্যর্থতায়। ফলে সুইডেনের সঙ্গে ড্র মেনেই ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু করল আসরের অন্যতম ফেভারিট দল স্পেন।
সোমবার রাতে স্তাদিও অলিম্পিকো দি সেভিয়ায় সুইডেন ও স্পেনের লড়াই গোলশূন্য ড্র হয়। চলতি আসরে এটাই প্রথম যে ম্যাচে কোনো গোল হয়নি। এর আগে ১৯৮০ সালে শেষবার গ্রুপ পর্বে ইতালির বিপক্ষে গোলশূন্য ড্র করেছিল স্পেন। আর গত জানুয়ারিতে হওয়া এ দুই দলের শেষ ম্যাচও হয়েছিল গোলশূন্য ড্র।
স্পেনের একচ্ছত্র দাপটের এ ম্যাচে তাদের গোলবঞ্চিত রাখার অন্যতম প্রধান কারিগর সুইডিশ গোলরক্ষক রবিন ওলসেন। অবিশ্বাস্য কিছু সেভ করেছেন তিনি।
তবে সপ্তম মিনিটে দানি ওলমোর দূরপাল্লার লক্ষ্যভ্রষ্ট শটের কথা বাদ দিলে সুইডিশ শিবিরে গোল করার মতো প্রথম সম্ভাবনা তৈরি করে ১৬তম মিনিটে। তবে সে যাত্রায় অবিশ্বাস্য এক সেভে করে সুইডেনকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক। কোকের ক্রস থেকে দারুণ এক হেড নিয়েছিলে ওলমো। তবে তার চেয়ে দারুণ দক্ষতায় বাঁ দিকে ঝাঁপিয়ে তাকে গোলবঞ্চিত করেন ওলসেন।
২৩তম মিনিটে বিপদ প্রায় ডেকে এনেছিল সুইডিশ ডিফেন্ডার ভিক্টর লিনদোলেফ। ডি-বক্সে বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে ফাঁকায় থাকা কোকের পায়ে বল তুলে দেন তিনি। তবে তার কোণাকোণি শট অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে সে যাত্রা বেঁচে যায় দলটি। ছয় মিনিট পর আবারও একেবারে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন কোকে। এবারও লক্ষ্যে শট নিতে পারেননি তিনি। ওলমোর বাড়ানো বল ছোট ডি-বক্সে গোলরক্ষককে একা পেয়েও বাইরে মারেন এ অ্যাতলেতিকো মাদ্রিদ মিডফিল্ডার।
৩৬তম মিনিটে স্প্যানিশ শিবির প্রথম শট নিতে পারে সুইডেন। তাও ডান প্রান্তের দুরূহ কোণ থেকে নেওয়া সাবিস্তিয়ান লারসনের দূরপাল্লার শট। তবে কর্নারের বিনিময়ে সে শট ফিরিয়ে দেন স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমন।
দুই মিনিট পর দিনের সবচেয়ে সহজ সুযোগটি নষ্ট করেন মোরাতা। জর্দি আলবার বাড়ানো বল সুইডিশ ডিফেন্ডার মার্কাস ডেনিলসন বিপদমুক্ত করতে না পারলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান এ জুভেন্টাস ফরোয়ার্ড। কিন্তু তার শট লক্ষ্যেই থাকেনি। পরের মিনিটে ফেরান তোরেসের দুর্বল শট ধরতে কোনো সমস্যা হয়নি ওলসেনের জন্য।
ধারার বিপরীতে ৪১তম মিনিটে প্রায় গোল খেয়ে বসেছিল স্পেন। সতীর্থের বাড়ানো বল পেয়ে আইমেরিক লাপোর্তেকে কাটিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে শট নিয়েছিলেন আলেকজান্ডার ইসাক। তার শট মার্কাস লোরেন্তের পায়ে লেগে প্রায় জালের দিকেই যাচ্ছিল। বারপোস্টে লেগে বেরিয়ে গেলে বড় বাঁচা বেঁচে যায় দুইবারের ইউরো চ্যাম্পিয়নরা। প্রথমার্ধের নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আবারও দুর্দান্ত ওলসেন। ওলমোর শট ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকান এ এভারটন গোলরক্ষক।
৫০তম মিনিটে আবারো সুইডিশ ডিফেন্ডারের ভুলে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন মোরাতা। এবারও বাইরে শট নেন তিনি। ১১ মিনিট পর পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল প্রায় পেয়ে যাচ্ছিল সুইডেন। খালি পোস্টে ইসাকের ক্রসে মার্কাস বার্গ ঠিকভাবে পা লাগাতে পারলেই এগিয়ে যেতে পারতো তারা। কিন্তু বারপোস্টের উপর দিয়ে লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে বেঁচে যায় স্বাগতিকরা।
৭৩তম মিনিটে ওলমোর শট ডেনিলসন ব্লক না করলে গোল পেতে পারতো স্বাগতিকরা। ৭৮তম মিনিটে বদলি খেলোয়াড় সারাবিয়ার শট ফিস্ট করে ফেরান ওলসেন। ১২ মিনিট পর ফের অবিশ্বাস্য ওলসেন। সারাবিয়ার নিখুঁত ক্রস থেকে দারুণ হেড নিয়েছিলেন আরেক বদলি খেলোয়াড় জেরার্দ মোরেনো। কিন্তু দারুণ দক্ষতায় পা দিয়ে ঠেকান সুইডিশ গোলরক্ষক। ম্যাচের যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে জর্দি আলবার ক্রস থেকে সারাবিয়ার শটও লাইফ নেন এ গোলরক্ষক। ফলে ড্র মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় দুইবারের চ্যাম্পিয়নদের।
Comments