মেসির গোলে এগিয়ে গিয়েও পয়েন্ট হারাল আর্জেন্টিনা

‘বি’ গ্রুপে দুদলের ম্যাচটি শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়।
ছবি: এএফপি

আর্জেন্টিনার ফুটবলারদের একগাদা সুযোগ নষ্টের মহড়ার মাঝে প্রথমার্ধে অসাধারণ ফ্রি-কিকে জাল খুঁজে নিলেন লিওনেল মেসি। কিন্তু গোলমুখে গিয়ে ভজকট পাকিয়ে ফেলার খেসারত দিতে হলো তাদের। দ্বিতীয়ার্ধে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যদের ছন্দ হারানোর ফাঁকে এদুয়ার্দো ভারগাসের গোলে পয়েন্ট আদায় করে নিল চিলি।

২০২১ কোপা আমেরিকার অন্যতম ফেভারিট আর্জেন্টিনার শুরুটা হয়নি প্রত্যাশামাফিক। মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় ভোরে ব্রাজিলের রিও দি জেনেইরোতে ‘বি’ গ্রুপে চিলির বিপক্ষে তাদের ম্যাচটি শেষ হয়েছে ১-১ সমতায়।

গোটা ম্যাচে চিলি বল দখলে অল্প ব্যবধানে এগিয়ে থাকলেও প্রাধান্য ছিল আর্জেন্টিনার। তাদের নেওয়া ১৮ শটের পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়ানো চিলির পাঁচ শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল চারটি। তবে বারবার ফাউলের কারণে খেলার স্বাভাবিক গতি নষ্ট হয়েছে। আর্জেন্টিনার দুই ও চিলির তিন জনকে দেখানো হয় হলুদ কার্ড।

অষ্টম মিনিটে ম্যাচের প্রথম সুযোগটি পায় আর্জেন্টিনা। লেফট-ব্যাক নিকোলাস তাগলিয়াফিকোর হেডের পর ডি-বক্সের ভেতর থেকে লিওনেল মেসির শট দূরের পোস্টের অনেকটা বাইরে দিয়ে চলে যায়। চার মিনিট পর সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করেন লাউতারো মার্তিনেজ। বাম প্রান্ত থেকে টটেনহ্যাম হটস্পারের মিডফিল্ডার জিওভান্নি লো সেলসোর বাড়ানো বল অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন তিনি।

messi and vidal
ছবি: টুইটার

১৬তম থেকে ১৮তম মিনিটের মধ্যে আরও তিনটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় আলবিসেলেস্তেদের। প্রত্যেকটির সঙ্গে জুড়ে আছে নিকোলাস গঞ্জালেজের নাম। লো সেলসোর ফ্লিকে ডি-বক্সের প্রান্ত থেকে তার ডান পায়ের জোরালো শট ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন চিলিয়ান গোলরক্ষক ক্লদিও ব্রাভো। পরের মিনিটে কর্নার থেকে হেড লক্ষ্যে রাখতে পারেননি তিনি।

তবে শেষ সুযোগটি নষ্ট করার জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায় গঞ্জালেজকে। লো সেলসোর রক্ষণচেরা পাসে ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও সরাসরি তার গায়ে শট মেরে হতাশা বাড়ান জার্মান ক্লাব স্টুটগার্টের ফরোয়ার্ড।

৩৩তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় কোপা আমেরিকার ১৪ বারের চ্যাম্পিয়নরা। প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে বাঁ পায়ের চোখ ধাঁধানো ফ্রি-কিকে বল জালে পাঠান বার্সেলোনার অধিনায়ক মেসি। ব্রাভো ঝাঁপিয়ে পড়ে সর্বোচ্চ চেষ্টাই করেছিলেন আটকাতে। কিন্তু তার হাতে লেগে গোললাইন অতিক্রম করে যায় বল।

দুই বছরেরও বেশি সময় পর জাতীয় দলের জার্সিতে পেনাল্টি ছাড়া কোনো গোল পেলেন মেসি। তার সবশেষ পাঁচটি গোল এসেছিল স্পট-কিক থেকে। এর আগে ২০১৯ সালের জুনে নিজেদের মাঠে নিকারাগুয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচে শেষবার পেনাল্টি ছাড়া লক্ষ্যভেদ করেছিলেন রেকর্ড ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা।

পাঁচ মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ করতে পারত আর্জেন্টিনা। তবে আরও এক দফা তালগোল পাকিয়ে ফেলেন ইন্টার মিলানের ফরোয়ার্ড লাউতারো। ডি-বক্সে জটলার মধ্যে সতীর্থের পাসে তার দুর্বল শট প্রতিপক্ষ গোলরক্ষককে পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি। যদিও অরক্ষিত আর বিপজ্জনক অবস্থান ছিলেন তিনি।

বিরতির পর খোলস পাল্টে রক্ষণ সামলানোর চেয়ে আক্রমণে মনোযোগী হয় চিলি। ৫৩তম মিনিটে প্রথমবারের মতো আর্জেন্টাইন গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে মঞ্চে আবির্ভূত হতে হয়। গোলপোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে তিনি নস্যাৎ করে দেন স্ট্রাইকার এদুয়ার্দো ভারগাসের প্রচেষ্টা।

vargas
ছবি: টুইটার

তারপর আলগা বল পেয়ে আর্তুরো ভিদালের নেওয়া শট নিশানা খুঁজে পায়নি। তবে তাগলিয়াফিকোর দেরি করে করা ট্যাকলে পড়ে যান ইতালিয়ান ক্লাব ইন্টারের মিডফিল্ডার। রেফারি ভিএআরের দ্বারস্থ হলে অনেকটা সময় নিয়ে দেওয়া হয় পেনাল্টির সিদ্ধান্ত। ৫৭তম মিনিটে ভিদালের স্পট-কিক মার্তিনেজ অসাধারণ দক্ষতায় রুখে দেওয়ার পর বল ক্রসবারে লেগে ফিরে আসে। সুযোগসন্ধানী ভারগাস মাথা ছুঁইয়ে ফাঁকা জালে করেন লক্ষ্যভেদ।

গোল শোধ করে উজ্জীবিত হয়ে ওঠা চিলি ছয় মিনিট পর ফের হানা দেয় আর্জেন্টিনার রক্ষণে। ফরোয়ার্ড জ্যাঁ মেনেসেসের ক্রসে বিপজ্জনক জায়গা থেকে ভিদাল করেন হেড। তবে তা সহজেই লুফে নেন মার্তিনেজ।

খেই হারিয়ে ফেলা আর্জেন্টিনা ধীরে ধীরে ফের নিজেদের গুছিয়ে নেয়। ৭১তম মিনিটে মেসি জোরালো নিলেও তা শট পরাস্ত করতে পারেননি ব্রাভোকে। ৮০তম মিনিটে ট্রেডমার্ক ড্রিবলিংয়ে প্রতিপক্ষের রক্ষণভাগ পেরিয়ে ডি-বক্সে বল ফেলেন তিনি। কিন্তু গঞ্জালেজের হেড এবারও চলে যায় ক্রসবারের ওপর দিয়ে।

বাকি সময়ে একটানা চাপ ধরে রেখেও সাফল্যের মুখ আর দেখেনি আর্জেন্টাইনরা। রক্ষণ জমাট রেখে তাদের রুখে দেওয়ার উল্লাস নিয়ে মাঠ ছাড়ে চিলি। ম্যাচের এমন ফলে আকাশি-সাদা জার্সিধারীদের কোচ স্কালোনির কপালে নিঃসন্দেহে ভাঁজ পড়ার কথা। কারণ, শেষ তিন ম্যাচেই এগিয়ে গিয়েও জিততে পারেনি তারা।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago