মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী ৩ গ্রামে ১৪ দিনের লকডাউন
মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার সীমান্তবর্তী তিনটি গ্রামে আজ মঙ্গলবার থেকে ১৪ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। গ্রাম তিনটি হলো--মুজিবনগর উপজেলার আনন্দবাস এবং গাংনী উপজেলার তেঁতুলবাড়িয়া ও হিন্দা।
বিষয়টি নিশ্চিত করে মেহেরপুরের সিভিল সার্জন ডা. নাসির উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, হিন্দা ও তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামের অধিকাংশ বাসিন্দাদের করোনা উপসর্গ আছে। হিন্দা গ্রামে এক দিনে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২৩ জন এবং তেঁতুলবাড়িয়া গ্রামে শনাক্ত হয়েছে ১৭ জন।
এছাড়া, গত শুক্রবার জেলায় করোনায় মারা যাওয়া দুজনের আনন্দবাস গ্রামে বলে জানান তিনি।
সিভিল সার্জন জানান, গত এক সপ্তাহের পর্যবেক্ষণে সীমান্ত এলাকাগুলো করোনা সংক্রমণে এগিয়ে আছে। এ এলাকাগুলোতে হঠাৎ সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ডা. নাসির জানান, আজ জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভায় ওই তিন গ্রামে ১৪ দিনের লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সীমান্ত এলাকাগুলোতে করোনা আক্রান্তদের ভ্যারিয়েন্ট কী, তা জানার চেষ্টা চলছে।
মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনছুর আলম খান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ওই তিন গ্রামের বাসিন্দাদের বাইরে চলাফেরা এবং বহিরাগতদের গ্রামে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করা হয়েছে।
একইসঙ্গে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সূত্র জানায়, ভারতের সঙ্গে মেহেরপুর সদর, গাংনী ও মুজিবনগর দিয়ে বাংলাদেশের ১১১ কিলোমিটার সীমান্ত। ভারত অংশের এলাকাগুলো হলো--নবীননগর, শিকারপুর, তাজপুর, করিমপুর, ধাড়াসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। দুই দেশের এই এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের মধ্যে আত্মীয়তার সম্পর্ক আছে। সীমান্ত পার হয়ে তারা দুই দেশেই কৃষিকাজ করে থাকেন। এমনকি দুই দেশে বসবাসরত আত্মীয়দের মধ্যে খাদ্য বিনিময়ও করেন তারা।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্র জানায়, মেহেরপুরের ১১১ কিলোমিটার সীমান্তে ৭৪টি সীমান্ত গেট আছে। গেটগুলো দিয়ে প্রতিদিন পাশ জমা দিয়ে অন্তত এক হাজার ভারতীয় বাংলাদেশে কৃষিকাজ করতে আসে। বিজিবি টহল থাকলেও কাজের মধ্যেই অনেকেই এদেশে থাকা তাদের আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে।
মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের মেডিকেল অফিসার ডা. শোভন মল্লিক জানান, করোনা সংক্রমণে সীমান্তবর্তী গ্রামগুলো ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনতে পারে। নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন এমন ভ্যারিয়েন্ট প্রবেশ করলে তার পরিণতি ভাল হবে না।
৬ বিজিবির অধিনায়ক কর্নেল খালেকুজ্জামান জানান, সীমান্তবর্তী ওই এলাকাগুলোতে টহল বাড়ানো হয়েছে। সিভিল প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ চলছে।
Comments