জাতীয় কবির কুমিল্লা আগমনের শতবর্ষ উদযাপন করছে কুবি

হারিয়ে যাচ্ছে নজরুলের স্মৃতি, সংরক্ষণের দাবি
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ছিল কুমিল্লা। ১৯২১ সালের এপ্রিল থেকে ১৯২৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মোট পাঁচবার কুমিল্লায় এসেছিলেন তিনি। তার কুমিল্লা আগমনের শতবর্ষ উদযাপনে ‘চেনা নজরুল অচেনা নজরুল’ শিরোনামে দু’দিনব্যাপী অনলাইন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) বাংলা বিভাগ।

আগামীকাল এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক পবিত্র সরকার। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. এমরান কবীর চৌধুরী। এ ছাড়াও, প্রধান আলোচক বাংলাদেশর রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক বিশ্বজিৎ ঘোষ, বিশেষ আলোচক আসানসোলে কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মোনালীসা দাস। বিশেষ অতিথি ড. মো. আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক ড. এমএম শরিফুল করীম এবং সভাপতিত্ব করবেন শামসুজ্জামান মিলকী।

দ্বিতীয় দিনের প্রধান অতিথি আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য তপোধীর ভট্টাচার্য, প্রধান আলোচক কবি নাতনি খিলখিল কাজী। আলোচক ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শায়ক মুখার্জী, অধ্যাপক আহমেদ মাওলা, অধ্যাপক জি এম মনিরুজ্জামান।

হারিয়ে যাচ্ছে নজরুলের স্মৃতি, সংরক্ষণের দাবি

জাতীয় কবির প্রেম, বিয়ে, প্রকাশ্যে সুরকার-গায়ক ও অভিনয়সহ অনেক কিছুই শুরু হয়েছিল কুমিল্লা থেকে। এখানের বিভিন্ন স্থানে, বাড়িতে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আড্ডা, সংগীতচর্চা ও কবিতা আবৃত্তি করতেন তিনি। পাশাপাশি লিখতেন গান ও কবিতা। কিন্তু, কুমিল্লায় তার স্মৃতি বিজড়িত অনেক নিদর্শন অবহেলার কারণে হারিয়ে যেতে বসেছে। ১৯২২ সালের ২৩ নভেম্বর শহরের ঝাউতলা সড়কের শেষ প্রান্তে রাস্তার দক্ষিণ পাশ থেকে ‘আনন্দময়ীর আগমন’ কবিতার জন্য কবি গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। সেখানে আছে একটি স্মৃতিফলক। কিন্তু, ড্রেন উঁচু করায় সেটি এখন আড়ালে পড়ে আছে।

কবি নজরুলের স্মৃতি ফলকের বেহাল দশা। ছবি: সংগৃহীত

নজরুলের বিভিন্ন ঘটনার সাক্ষী হিসেবে ১৯৮৩ সালে স্থাপন করা হয়েছিলো কুমিল্লা নগরীতে স্থাপিত হয়েছিল ১২টি স্মৃতিফলক। সেগুলোর অধিকাংশরেই এখন করুণ অবস্থা। এছাড়া, নজরুল চর্চা ও গবেষণার জন্য ২০১৩ সালে কুমিল্লায় চালু হয় নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র।

কুমিল্লার নজরুল ইনস্টিটিউটের সহকারী পরিচালক আল আমিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কুমিল্লার স্মৃতি বিজড়িত স্থানগুলো জেলা সিটি করপোরেশন দেখাশোনা করে। কোথাও কোনো অযত্ন, অবহেলা, ক্ষতিগ্রস্তের খবর জানলে জেলা প্রশাসনকে জানাই। তাদের মাধ্যম বাকিটা সমাধান হয়। কিন্তু, সরাসরি আমরা কিছু করতে পারি না। করার সেই সুযোগ ও বাজেট নেই আমাদের।’

জাতীয় কবিকে নিয়ে লেখা গবেষণাধর্মী ১০টি বইয়ের লেখক শিক্ষাবিদ ড. আলী হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘কুমিল্লাকে বাদ দিয়ে কবির জীবনী রচনা করা যাবে না। আমার জানা মতে কেবল কুমিল্লাতেই ৫৩টি রচনা, কবিতা, গান লিখেছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে। যা বাংলাদেশের আর কোথাও নেই। কবির জীবনের প্রথম অনেক কিছুই ঘটেছে কুমিল্লায়। কবি প্রথম প্রেম ও বিয়ে করেছেন কুমিল্লায়, দ্বিতীয় বিয়েও কুমিল্লায়। এমন অনেক কিছুই আছে কবির জীবনে যার প্রথম কুমিল্লায়। এখান থেকে কলকাতায় গিয়ে নজরুল হয়ে উঠেছিলেন বিদ্রোহী কবি।’

নজরুল ইনস্টিটিউট কেন্দ্র, কুমিল্লা। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, ‘সেই কবির স্মৃতিফলকগুলোও এখন নাজুক অবস্থায় আছে। অনেকগুলো এখন আর নেই। ১৯৮৩ সালে নজরুল স্মৃতি সংরক্ষণ পরিষদ গঠন করে প্রাথমিকভাবে এসব স্থান চিহ্নিত করে। পরে ১৯৯৩ সালে জেলা প্রশাসক উদ্যোগ নিয়ে কিছু কাজ করেন। এখন আবার অনেকগুলো নাজুক অবস্থায় আছে। দ্রুত এগুলো সংরক্ষণের দাবি জানাই।’

Comments

The Daily Star  | English

New polls timing: BNP upbeat, process irks Jamaat, NCP

The interim government’s revised election timeline with certain conditions has stirred cautious optimism as well as raised questions among  political parties.

9h ago