রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে জাতিসংঘ থেকে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘মানবিক বিবেচনায় আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে এই সঙ্কট নিরসন নিহিত রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপর। যা গত চার বছরে সম্ভব হয়নি। আমরা চাই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘ স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক।’
নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস. বাৰ্গনারের সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। ছবি: বাংলাদেশে মিশন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘মানবিক বিবেচনায় আমরা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছি। তবে এই সঙ্কট নিরসন নিহিত রয়েছে মিয়ানমারে তাদের নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপর। যা গত চার বছরে সম্ভব হয়নি। আমরা চাই প্রত্যাবর্তন বিষয়ে জাতিসংঘ স্পষ্ট একটি রোডম্যাপ তৈরি করুক।’

গতকাল বুধবার নিউইয়র্কে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের বঙ্গবন্ধু লাউঞ্জে জাতিসংঘ মহাসচিবের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত ক্রিস্টিন এস. বাৰ্গনারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকের সময় এসব কথা বলেন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা উপস্থিত ছিলেন।

কক্সবাজারে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের দীর্ঘসময় ধরে অবস্থানের নেতিবাচক দিক বিশেষ করে ওই এলাকায় বসবাসরত মূল জনগোষ্ঠীর উপর এর বিরূপ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, অতিসত্ত্বর যদি প্রত্যাবাসন শুরু না হয় তাহলে এটি কেবল এই এলাকারই সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে না, বরং তা এই অঞ্চল ও এর বাইরেও অস্থিরতা তৈরি করবে।

ভাষানচরে মানবিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভাষানচর প্রকল্প বিশেষ দূতের কাছে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এখানে রোহিঙ্গাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হওয়ার সুযোগ আছে।

কোভিড-১৯ পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিশেষ দূতকে ভাষানচর পরিদর্শনে যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান আব্দুল মোমেন। বিশেষ দূত ভাষানচর পরিদর্শনে তার আগ্রহের কথা জানান।

পরে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘের পিস অপারেশন বিভাগের প্রধান আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্য পিয়েরে ল্যাকুয়ার সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠকে করেন। এসময় তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অব্যাহত সমর্থন ও অংশগ্রহণের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার উদাহরণ টেনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী শান্তিরক্ষী বিশেষ করে নারী শান্তিরক্ষীদের ত্যাগের কথা স্মরণ করেন। তিনি আন্ডার সেক্রেটারির কাছে নারী শান্তিরক্ষীদের আরও উৎসাহিত করতে বিশেষ ডকুমেন্টারিসহ পিস অপারেশন বিভাগের  প্রচারণা বাড়ানোর অনুরোধ জানান।

এছাড়া জাতিসংঘ সদর দপ্তর ও মাঠ পর্যায়ের পিস কিপিং সংশ্লিষ্ট উচ্চ পদগুলোতে আরও বেশি বাংলাদেশি সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তা নিয়োগের জন্য জেনারেল ল্যাকুয়াকে অনুরোধ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ।

আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ল্যাকুয়া, দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের তাৎপর্যপূর্ণ অংশগ্রহণ ও সাফল্যমন্ডিত অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বাংলাদেশি শান্তিরক্ষীদের পেশাদারত্ব ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেন।

ল্যাকুয়া আশা করেন, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও বাড়বে।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

2h ago