প্রবাসে

জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করছে জাপান

জাপানের প্রধান মন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। ছবি: রয়টার্স

করোনার সংক্রমণে প্রতিরোধে জাপানের টোকিওসহ অন্য নয়টি প্রিফেকচারে জারি করা জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হচ্ছে। জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার করা হলেও আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত এসব এলাকা বিশেষ নজরদারির আওতায় রাখা হবে।

আজ বৃহস্পতিবার  (১৭ জুন) দেশটির প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা তার কার্যালয়ে ডাকা এক সংবাদ সম্মেলনে এ জরুরি অবস্থা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। আগামী ২১ জুন থেকে এ ঘোষণা কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।

তবে, পূর্বের ঘোষণা অনুযায়ী আগামী ২০ জুন পর্যন্ত এই জরুরি অবস্থা বহাল থাকবে। এছাড়া, ওকিনাওয়া প্রিফেকচারে আগামী ১১ জুলাই পর্যন্ত জরুরি অবস্থা বর্ধিত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা জনগণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, ‘জনগণের সহযোগিতায় করোনা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়েছে। পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না এলেও আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য  গ্রীষ্মকালীন টোকিও অলিম্পিক ও প্যারালিম্পিক ২০২০ আয়োজনের পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা একটি সফল আয়োজনের গর্বিত অংশীদার হতে যাচ্ছি।’

সুগা বলেন, ‘অলিম্পিকে অংশ নেওয়া প্রায় ১০ হাজার প্রতিযোগীকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়া, প্রতিদিন স্বাস্থ্য পরীক্ষা, কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকদের একই হোটেলে রেখে বিশেষ ব্যবস্থায় যাতায়াতসহ নজরদারিতে রাখা হবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সুগা বলেন, ‘আগামী নভেম্বর মাসকে লক্ষ্য করে চলমান কোভিড-১৯ ভ্যাকিসন কর্মসূচির রোড ম্যাপ তৈরি এবং তা সম্পন্নের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। ইতোমধ্যে আমরা প্রবীণদের ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ সম্পন্ন করেছি। গতকাল পর্যন্ত মোট ২ কোটি ৭০ লাখ ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে।’

তিনি জানান, চলতি মাসে ৪ কোটি ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ২১ জুন থেকে ১৮-৬৪ বছর পর্যন্ত বয়স্কদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হবে। সবাইকে ভ্যাকসিন নেওয়ার অনুরোধও জানান তিনি।

সাইতামা, চিবা এবং কানাগাওয়া প্রিফেকচারগুলোতে স্থানীয় প্রশাসন নিজ নিজ এলাকার সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন বলে সুগা জানান।

জরুরি অবস্থা কিংবা আংশিক জরুরি অবস্থায় থাকা জেলাগুলোতে বড় ধরনের অনুষ্ঠানে দর্শক ধারণে সামর্থ্য গ্যালারিগুলোতে আগস্ট মাসের শেষ সময় পর্যন্ত ৫ হাজারে বজায় রাখার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এমনকি নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার পরও দর্শক সংখ্যা ১০ হাজারে সীমিত রাখার জন্য আহবান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

একইসঙ্গে পানশালা, রেস্তোরাঁ এবং কারাওকেগুলোকে সন্ধ্যা ৮টার মধ্যে বন্ধ এবং ৭টার মধ্যে অ্যালকোহল অর্ডার শেষ করে দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়।

উল্লেখ্য, জাপানে গত বছরের ১৫ জানুয়ারি প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর বিশেষজ্ঞ কমিটির পরামর্শে গত বছরের ৮ এপ্রিল প্রথমে ৭টি প্রিফেকচার এবং ১৬ এপ্রিল দেশব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়। পরে ৪৭টি প্রিফেকচারের মধ্যে ৮টিতে বহাল রেখে বাকি ৩৯টি থেকে জরুরী অবস্থা প্রত্যাহার করা হয়।

এদিকে বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির কারণে থমকে যাওয়া অর্থনীতিকে সচল করতে জাপান সরকার দেশটিতে বসবাসরত প্রত্যেক নাগরিককে নগদ এক লাখ ইয়েন দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং একইসঙ্গে দ্বিতীয়বারের মতো দেশব্যাপী জরুরী অবস্থা ঘোষণা করা হয়। জাপানে বসবাসরত বিদেশি নাগরিকরাও এই আর্থিক সাহায্য পেয়ে থাকে।

চলতি বছরে করোনার সংক্রমণ বাড়ায় রাজধানী টোকিওসহ চারটি প্রিফেকচারে তৃতীয়বারের মতো জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ইয়োশিহিদে সুগা। অন্যান্য প্রদেশগুলো হচ্ছে- ওসাকা, হিয়োগো এবং কিয়োটো। ২৫ এপ্রিল রোববার থেকে এই জরুরী অবস্থা কার্যকর শুরু হয় এবং ১১ মে মঙ্গলবার পর্যন্ত তা বহাল থাকে। এরপর ৮টি প্রিফেকচার যোগ করে ৩১ মে পর্যন্ত এবং সর্বশেষ জরুরি অবস্থার মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০ জুন পর্যন্ত করা হয়। জরুরি অবস্থার আওতায় থাকা অন্যান্য প্রিফেকচারগুলো হচ্ছে- ওসাকা, কিয়োতো, হিয়োগো, হোক্কাইদো, ওকায়ামা, আইচি, হিরোশিমা এবং ফুকুওকা।

আজ জাপানে ১ হাজার ৫৫৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়।

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English

US strikes on Iran: what you need to know

Trump said the United States struck three main Iranian nuclear sites: Fordo, Natanz and Isfahan, with the former being hit with a "full payload of bombs."

50m ago