তিস্তা গর্ভে বিলীন হচ্ছে গ্রামবাসীর তৈরি বাঁধ

বালুর বাঁধটির প্রায় ২৫০ মিটার ধসে গিয়ে তিস্তার বুকে বিলীন হয়েছে। ছবি: স্টার

দেড় মাস আগে চাঁদা তুলে গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগেই তৈরি করেছিলেন ৪০০ মিটারের বালুর বাঁধটি। আশা ছিল, বাঁধের কল্যাণে এ বছর বন্যার কবল থেকে রক্ষা পাবেন। কিন্তু বন্যা আসার আগেই তাদের স্বপ্ন তলিয়ে গেল তিস্তা নদীর পানিতে।

ঘটনাটি লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের কুটিরপাড় গ্রামের। গত এক সপ্তাহে তিস্তা নদীর পাড়ের এ বালুর বাঁধটির প্রায় ২৫০ মিটার ধসে গিয়ে তিস্তার বুকে বিলীন হয়েছে। 

বাঁধের বাকি ১৫০ মিটার অংশেও ভাঙন ধরেছে। ভাঙন আতঙ্কে ৩০টি পরিবার তাদের ঘরবাড়ি সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে গেছে। বসতভিটা বিলীন হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে আরও শতাধিক পরিবার।

মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, গ্রামবাসী নিজ উদ্যোগে বালুর বাঁধটি তৈরি করেছিলেন। জিও-ব্যাগ ফেলে বাঁধটি রক্ষা করা গেলে তার ইউনিয়নের কুটিরপাড়সহ ৬-৭টি গ্রাম বন্যার কবল থেকে রক্ষা পেতো। তবে, জিও-ব্যাগ ফেলার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে কয়েকবার অনুরোধ করেও কোনো লাভ হয়নি। 

তিনি বলেন, ‘বালুর বাঁধটি ধসে যাওয়ায় ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে শতাধিক পরিবার। ইতোমধ্যে অনেক পরিবার তাদের বাড়িঘর সরিয়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছে।’

কুটিরপাড় গ্রামের মজনু মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বালুর বাঁধটি তৈরিতে গ্রামের প্রত্যেক পরিবার ৫০০ থেকে শুরু করে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত চাঁদা দিয়েছিল। প্রায় ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এক মাস ধরে কাজ করে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু, জিও-ব্যাগ কেনার সামর্থ্য ছিল না গ্রামবাসীর।

বসতভিটা বিলীন হওয়ার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে আরও শতাধিক পরিবার। ছবি: স্টার

একই গ্রামের আতাউর রহমান বলেন, ‘বাঁধের যে অংশটি এখনো নদীগর্ভে চলে যায়নি, সেটি রক্ষা করা গেলে গ্রামবাসীর ভাঙন আতঙ্ক কিছুটা কমবে। কিন্তু, পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’

জানতে চাইলে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বালুর বাঁধটি অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণ করেছিলেন স্থানীয়রা। পানি উন্নয়ন বোর্ড এটির পক্ষে ছিল না। বন্যা শুরুর আগেই বাঁধটি ধসে যাচ্ছে।’

ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘বালুর বাঁধটির অবশিষ্ট অংশ রক্ষায় বরাদ্দ চেয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখেছি।’

বরাদ্দ পেলে শিগগিরই জিও-ব্যাগ ফেলে বাঁধের বাকি অংশ রক্ষা করা হবে বলে জানান তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

'Don't merge SIBL'

Shareholders urge BB, ministry in separate letters

2h ago