মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে জাতিসংঘে প্রস্তাব, ভোটদানে বিরত ছিল বাংলাদেশ

Security Council
নিরাপত্তা পরিষদ। ছবি: রয়টার্স ফাইল ফটো

মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাশ হওয়া প্রস্তাবটিতে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছে বাংলাদেশ।

শুক্রবার ওই প্রস্তাবের পক্ষে সাধারণ পরিষদে ১১৯টি দেশ সমর্থন জানিয়েছে। একমাত্র দেশ হিসেবে এর বিপক্ষে ভোট দিয়েছে বেলারুশ। ভোটদানে বিরত থেকেছে রাশিয়া, চীন, বাংলাদেশসহ ৩৬টি দেশ।

এ ছাড়া, দক্ষিণ এশিয়ার দেশ ভারত, নেপাল, ভুটান, পাকিস্তানও ভোটদানে বিরত থেকেছে বলে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

বিবিসি জানায়, মিয়ানমারে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করে রাশিয়া ও চীন।

শুক্রবার মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ এবং দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রতি নভেম্বরের নির্বাচনের ফল মেনে নিয়ে অং সান সু চিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে একটি প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাশ হয়।

রয়টার্স জানায়, ভোটদানে বিরত থাকা কয়েকটি দেশ জানিয়েছে যে, এই সংকট মিয়ানমারের একটি অভ্যন্তরীণ সমস্যা। তাই তারা এই প্রস্তাব সংকট মোকাবিলায় সহায়ক হবে বলে মনে করে না।

অন্যদিকে, কয়েকটি রাষ্ট্র অভিযোগ করেছে যে, এই প্রস্তাবে সামরিক অভিযানের কারণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হওয়া প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমের দুর্দশা সমাধানের নির্দেশনা নেই।

শুক্রবার মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত ক্রিস্টিন শ্রেনার বার্গনার ভোটের পর সাধারণ পরিষদের উদ্দেশে বলেন, ‘মিয়ানমারে বড় আকারের গৃহযুদ্ধের ঝুঁকি রয়েছে। দেশটিতে সামরিক অধিগ্রহণ থেকে বের হওয়ার সুযোগ সংকুচিত হচ্ছে।’

ইউরোপীয় ইউনিয়নের জাতিসংঘ বিষয়ক রাষ্ট্রদূত ওলফ স্কুজ বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রস্তাব একটি শক্তিশালী বার্তা দিয়েছে যে- এটি সামরিক জান্তার বৈধতা মানে না, তাদের নিজেদের জনগণের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও সহিংসতার নিন্দা করে এবং বিশ্বের চোখে তাদের বিচ্ছিন্নতা প্রদর্শন করে।’

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস আগে থেকেই সাধারণ পরিষদকে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে উদ্যোগ নিতে চাপ দিয়েছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আমরা এমন এক বিশ্বে বাস করতে পারি না, যেখানে সামরিক অভ্যুত্থান একটি আদর্শ হয়ে ওঠে। এটা সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য।’

এর আগে, জাতিসংঘের একটি প্রাথমিক খসড়া প্রস্তাবে মিয়ানমারের ওপর অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার আহ্বান জানানো হয়েছিল। গত মাসে রয়টার্সের হাতে আসা একটি প্রস্তাব অনুযায়ী, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার নয়টি দেশ চেয়েছিল প্রস্তাবটি বাতিল করা হোক।

জাতিসংঘের ১৫ সদস্যের নিরাপত্তা পরিষদের মতো সাধারণ পরিষদে কোনো দেশের ভেটো ক্ষমতা নেই। সাধারণ পরিষদের প্রস্তাবগুলো আইনত বাধ্যতামূলক না হলেও এগুলো রাজনৈতিক গুরুত্ব বহন করে।

জাতিসংঘের প্রস্তাবে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীকে ‘অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা বন্ধ’ এবং ইন্টারনেট ও সামাজিক প্রচার মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ারও আহ্বান জানানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, মিয়ানমারে নভেম্বরের নির্বাচনে জালিয়াতির অভিযোগ তুলে নির্বাচিত সরকারকে অস্বীকৃতি জানিয়ে দেশটিতে অভ্যুত্থান করে সামরিক বাহিনী। তবে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা বলেছেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ছিল।

অ্যাসিস্ট্যান্স এসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স(এপিপিপি) জানিয়েছে, অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর হাতে ৮৬০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যদিও সামরিক জান্তা বলছে, এই সংখ্যা আরও অনেক কম।

আরও পড়ুন:

মিয়ানমারে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের

Comments

The Daily Star  | English

Police struggle as key top posts lie vacant

Police are grappling with operational challenges as more than 400 key posts have remained vacant over the past 10 months, impairing the force’s ability to combat crime. 

9h ago