প্রবাসে

বাহরাইনে টিকার আওতায় অনিবন্ধিত প্রবাসী বাংলাদেশিরা

বাহরাইনের রাজধানী মানামায় সিতরা মল ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে টিকা নিতে আসা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। ছবি: স্টার

বাহরাইনে অনিবন্ধিত বা অবৈধ হয়ে পড়া প্রবাসী বাংলাদেশিরাও করোনার টিকা নেওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন। দেশটির সরকারের সহযোগিতায় বাংলাদেশ দূতাবাস তাদের টিকার আওতায় আনার ব্যবস্থা করেছে।

উপসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে প্রায় দুই লাখ বাংলাদেশি প্রবাসী আছেন এরমধ্যে আনুমানিক ২৫ হাজারের মতো অনিবন্ধিত প্রবাসী, যারা নানা কারণে দেশটিতে অবৈধ হয়ে পড়েছেন।

দেশটির নাগরিক ও বৈধ ভিসার প্রবাসীরাই টিকা কর্মসূচির আওতায় থাকায় বঞ্চিত ছিলেন অনিবন্ধিত প্রবাসী কর্মীরা। কারণ, তাদের টিকার নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়নি।

গত শুক্রবার রাজধানী মানামায় সিতরা মল ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে অনিবন্ধিত প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য এই বিশেষ কার্যক্রম শুরু হয়। প্রথম দিনে ২০০ জন বাংলাদেশি টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন। দূতাবাসের মাধ্যমে নিবন্ধন করে তারা এই সুযোগ পান।

বাহরাইনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. নজরুল ইসলাম প্রথম দিনে  ভ্যাকসিনেশন সেন্টারে উপস্থিত থেকে টিকা কার্যক্রম তদারকি করেন। এ সময় দূতাবাসের কাউন্সেলর (শ্রম) শেখ মোহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশি সোসাইটির সভাপতি আসিফ আহমেদেসহ কমিউনিটি সংগঠকরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সময় রাষ্ট্রদূত প্রবাসী বাংলাদেশিদের টিকা নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে রক্ষায় টিকার বিকল্প নেই। বাহরাইন সরকার নাগরিক ও প্রবাসী সবাইকে বিনামূল্যে টিকার ব্যবস্থা করেছে এবং পর্যাপ্ত টিকাও সংগ্রহে রেখেছে। তা ছাড়া টিকার সনদ ছাড়া অনেক জায়গায় প্রবেশ নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। কাজেই দ্রুত টিকা নেওয়াই এখন ভাল উপায়।’

রাষ্ট্রদূত এই বিশেষ কার্যক্রম সফল করার জন্য বাংলাদেশ কমিউনিটি সংগঠন ও সচেতন ব্যক্তিদের প্রচার প্রচারণা চালাতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন।

প্রবাসী সংগঠকরা বলেন, অনিবন্ধিত বাংলাদেশিরা বৈধ ভিসাতেই এদেশে এসেছিলেন। ভিসা নবায়ন, চাকরি হারানোসহ নানা কারণে তারা এখন অনিবন্ধিত বা অবৈধ হয়ে পড়েছেন। মানবিক কারণে দূতাবাসের অনুরোধে বাহরাইন সরকারের এমন সুযোগ দেওয়ায় এসব প্রবাসী কর্মীদের দুশ্চিন্তার অবসান হবে।

বাহরাইন সরকারের নিবন্ধিত কমিউনিটি সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটির স্বেচ্ছাসেবক দল টিকার বিশেষ কার্যক্রমে সহযোগিতা করছে। তারা প্রবাসীদের নিবন্ধনসহ নানা সমস্যায় সহায়তা করছে বলে জানিয়েছে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বাইরাইন সরকার মসজিদ, শপিংমল, রেস্তোরাঁ, জিম সেন্টার, পার্টি সেন্টার, সিনেমা হলে অথবা কোনো অফিসে প্রবেশ করার জন্য টিকার সনদ প্রদর্শন বাধ্যতামূলক করেছে। এছাড়া সনদ ছাড়া পাসপোর্ট সেবা নেওয়ার জন্য বাহরাইন পোস্ট অফিসেও যেতে পারবেন না প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

উপসাগরীয় দ্বীপ রাষ্ট্রটিতে নাগরিক ও প্রবাসী মিলিয়ে প্রায় ১৮ লাখ মানুষের বসবাস। শুক্রবার পর্যন্ত করোনা টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন ১০ লাখ ৩৭ হাজার ১৬২ জন এবং দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ৮ লাখ ৮০ হাজার ১৪৬ জন। দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার ১৪ দিন পর সনদপত্র দেওয়া হচ্ছে। সনদ নিশ্চিত হলে মোবাইলে BeAware অ্যাপসে ছবিসহ গ্রিন চিহ্ন আসে ।

বর্তমানে সিনোফার্ম, ফাইজার/বায়োএনটেক, অ্যাস্ট্রাজেনিকার কোভিশিল্ড, জনসন ও জনসন, স্পুটনিক ভি এবং স্পুতনিক লাইট টিকা ব্যবহার করা হচ্ছে।

যারা এখনো বিভিন্ন সমস্যার কারণে টিকা নিতে পারেন নি এবং দূতাবাসের লিংকে রেজিস্ট্রেশন করেননি, তাদের https://forms.gle/4NoQyS7WPomdvt4J6 লিংকে গিয়ে নিবন্ধিত হওয়ার জন্য দূতাবাসের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English

Govt looking to defuse trade tensions with India

Bangladesh does not want any further escalation in tension with India, as the recent retaliatory moves are affecting bilateral trade

8h ago