আবাসিক হল ও পরিবহন বন্ধ, তবু ফি দিতে হবে ঢাবি শিক্ষার্থীদের

Dhaka University logo

প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ আছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলগুলো। চলাচল করছে না বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনও। এরপরও, এগুলোর ফি দিতে বলা হয়েছে শিক্ষার্থীদের।

বিষয়টি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে অনেক শিক্ষার্থী বলছেন, এটি তাদের জন্য বাড়তি একটি অর্থনৈতিক চাপ হয়ে দাঁড়াবে।

অন্যদিকে ঢাবি কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সীমিত পরিসরে এর পরিবহন ও হলের কার্যক্রম চলছে। ফলে ফি আদায় করতে হচ্ছে তাদের।

মহামারির কথা বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবার ‘বিলম্বে ভর্তি ফি’ মওকুফের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর আগে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভাগীয় উন্নয়ন ফি ৫০ শতাংশ কমিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

গত ১ জুন একাডেমিক কাউন্সিলের সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে, ১৫ মাস ধরে আটকে থাকা বিভিন্ন বিভাগ ও ইন্সটিটিউটের চূড়ান্ত পরীক্ষা নেবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ পরীক্ষায় বসার আগে শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগের বছরের ফি সংক্রান্ত ফর্ম পূরণ করতে হবে। আগামীকাল সোমবার থেকে অনলাইনে এসব ফর্ম জমা নেওয়া শুরু হবে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজয় একাত্তর হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘হল কার্ড নবায়ন না করে ভর্তি হওয়ার অনুমতি নেই আমাদের। আর হল কার্ড নবায়ন করতে হলে অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের এক হাজার টাকা এবং আবাসিক শিক্ষার্থীদের ১ হাজার ৭০০ টাকা করে দিতে হবে।’

‘গত দেড় বছর ধরে হলের বাইরে থাকা সত্ত্বেও কেন এ টাকা দিতে হবে আমাদের?’ প্রশ্ন তোলেন তিনি।

শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন সুবিধা না নিলেও, এ বাবদ কেন তাদের ১ হাজার ৮০ টাকা দিতে হবে- সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

সাধারণ শিক্ষার্থীসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সাবেক নেতারা এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের নেতারা কর্তৃপক্ষের এ সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। কর্তৃপক্ষকে শিক্ষার্থী-বান্ধব সিদ্ধান্ত নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

অনেকেই সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জনিয়েছেন।

ফি আদায়ের সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়ে ডাকসুর সাবেক সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মহামারির মধ্যে ঢাবি কর্তৃপক্ষের শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা উচিত ছিল। কিন্তু, তারা তা করেননি। তাদের সিদ্ধান্ত একেবারেই অযৌক্তিক ও অনৈতিক।’

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমরা দ্রুত কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলব।’

বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ফয়েজ উল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কথা ভেবে শুরু থেকেই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে টিউশন ফি মওকুফের আহ্বান জানিয়ে আসছি আমরা। কিন্তু, ঢাবি কর্তৃপক্ষ পরিবহন, আবাসন, পাঠাগার ও অন্যান্য ফিসহ বাড়তি ফি নিচ্ছে। এটা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন অফিস সূত্রে জানা গেছে, বিআরটিসির সঙ্গে ঢাবির যে চুক্তি আছে, তাতে চলাচলের ওপর ভিত্তি করে চার্জ নির্ধারণের কথা বলা আছে। চলাচল না করলে কর্তৃপক্ষকে বিআরটিসিকে কোনো টাকা দিতে হবে না।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘সার্ভিস ফি কমানো হবে না। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারীদের জন্য সীমিত পরিসরে এসব সেবা চালু আছে। তবে মহামারির কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা এগুলো ব্যবহার করছে না।’

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments

The Daily Star  | English
price hike of essential commodities in Bangladesh

Essential commodities: Price spiral hits fixed-income families hard

Supply chain experts and consumer rights activists blame the absence of consistent market monitoring, dwindling supply of winter vegetables, and the end of VAT exemptions granted during Ramadan.

13h ago