বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট: মহাসড়কে ভোগান্তি বাড়িয়েছে বৃষ্টি

গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত দেশের প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। এই বিপুল কর্মযজ্ঞের জন্য সড়কের জায়গায় জায়গায় তৈরি হওয়া গর্ত ও ফেলে রাখা নির্মাণসামগ্রীর কারণে প্রতিদিনই তৈরি হচ্ছিল যানজট। তবে গত কয়েক দিনের টানা বর্ষণে যানজটের পাশাপাশি এই পথে চলাচলকারী মানুষের ভোগান্তিও বেড়ে গেছে বহুগুণ।

এমনকি কখনো কখনো এই মহাসড়কে সৃষ্ট যানজটের রেশ পৌঁছে যাচ্ছে রাজধানী পর্যন্তও। ছড়িয়ে যাচ্ছে খিলখেত, বনানী, মহাখালী থেকে আশপাশের বিভিন্ন সড়কে।

ট্রাফিক পুলিশ ও যানবাহন চালকদের ভাষ্য, চান্দনা চৌরাস্তা থেকে আবদুল্লাহপুর পর্যন্ত পুরো সড়কটি এখন কাটা। এর মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা গাজীপুর থেকে টঙ্গী বাজার পর্যন্ত। এটুকু সড়কের পুরোটা জুড়েই খানাখন্দ। বৃষ্টিতে এসব জায়গায় হাঁটুপানি জমে যায়। গর্তে পড়ার ভয়ে কোনো যানবাহন স্বাভাবিক গতিতে এগোতে পারে না। ফলে একবার বৃষ্টি হলেই পরবর্তী চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত দুর্ভোগের মাত্রা অনেকাংশে বেড়ে যাচ্ছে।

কথা হয় এই পথে চলাচলকারী অনাবিল পরিবহনের চালক জহিরুল মোল্লার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়া গর্ত এড়িয়ে গাড়ি চালানো কঠিন। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণও বটে। তাই গাড়ি আস্তে আস্তে চালানো ছাড়া উপায় থাকে না।’

শরীয়তপুর থেকে সুজাত আলী নামের এক ব্যক্তি গাজীপুরের একটি কলেজে চাকরির পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন। ফেরার পথে মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘কোথাও কোথাও গাড়ি আধঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে থাকছে। এভাবে চললে ঢাকা পর্যন্ত পৌঁছাতে চার-পাঁচ ঘণ্টা লেগে যাবে।’

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের ভাষ্য, বিআরটি প্রকল্পের কাজের জন্য সড়কের খানাখন্দ বাড়ছে। পাশাপাশি বৃষ্টির কারণে যানজট পরিস্থিতি সামাল দেওয়া কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ বিষয়ে উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মামুন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, পরিস্থিতি সামাল দিতে ট্রাফিক সদর দপ্তর থেকে অতিরিক্ত ৪০ জন সদস্য আনা হয়েছে। এ ছাড়া শহরের গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি পয়েন্টে ট্রাফিক পুলিশের কমপক্ষে ২২ জন সদস্য সার্বক্ষণিক কাজ করছেন। তা সত্ত্বেও কাজ হচ্ছে না।

এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য, যানজটের ভোগান্তি কমাতে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নিজস্ব ট্রাফিক ও কমিউনিটি পুলিশের সদস্যরাও তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু বৃষ্টি হলে সড়কের গর্ত থেকে তাৎক্ষণিকভাবে পানি সরানোর কোনো উপায় থাকে না। তাই ভোগান্তিও দীর্ঘ হয়।

বিআরটি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক এ এস এম ইলিয়াস শাহ জানান, প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে আগামী বছরের জুনে। তার দাবি, এই সড়কে নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। কিন্তু বৃষ্টির কারণে একদিকের কাজ শেষ হওয়ার আগেই অন্যদিকে সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

দুর্ভোগ কমাতে বিশেষ ট্রেন চলাচল শুরু

যানজটে মানুষের দুর্ভোগ কমাতে গাজীপুরের জয়দেবপুর জংশন থেকে কমলাপুর পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন চালু হয়েছে।

আজ সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে জয়দেবপুর জংশন থেকে কমলাপুর উদ্দেশে ছেড়ে যায় তুরাগ এক্সপ্রেস। এরপর সকাল ৮টায় ছেড়ে যায় টাঙ্গাইল কমিউটার। এর আগে জনদুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে আজ থেকে ঢাকা-গাজীপুর-ঢাকা রেলপথে বিশেষ ট্রেন চালুর কথা জানিয়েছিলেন গাজীপুর-২ আসনের সাংসদ এবং যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

রেলওয়ের উপপরিচালক রেজাউল হক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যাত্রীচাহিদা বিবেচনায় দুর্ভোগ লাঘবের জন্য তুরাগ এক্সপ্রেস ১, ২, ৩ ও ৪ এবং টাঙ্গাইল কমিউটার ১ ও ২ ট্রেন ২০ জুন থেকে চলবে। মোট আসনের ৫০ শতাংশ টিকিট বিক্রি করে ট্রেন চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

Comments

The Daily Star  | English

UN says cross-border aid to Myanmar requires approval from both govts

The clarification followed Foreign Adviser Touhid Hossain's statement on Sunday that Bangladesh had agreed in principle to a UN proposal for a humanitarian corridor to Myanmar's Rakhine State

1h ago