পাবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব চরমে, রেজিস্টার কার্যালয়ে তালা

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আবারো অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)। গত সপ্তাহে কর্মকর্তাদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী লাঞ্ছিত হওয়ার পর থেকে কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। ছবি: সংগৃহীত

প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে আবারো অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি)। গত সপ্তাহে কর্মকর্তাদের হাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী লাঞ্ছিত হওয়ার পর থেকে কর্মকর্তাদের অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে রূপ নেয়। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।

আজ রোববার সকালে পাবিপ্রবি অফিসার্স সমিতির নেতারা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টারের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে সবাইকে বের করে দেন। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বিভাগের সব কাজ বন্ধ আছে।

পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বিজন কুমার ব্রহ্ম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অফিসার্স সমিতির সভাপতি হারুনুর রশিদ ডন ও সেক্রেটারি সোহাগ হোসেনের নেতৃত্বে সংগঠনের অন্যান্য নেতারা সকালে জোর করে আমার অফিসে প্রবেশ করেন। তারা আমাদের সবাইকে অফিস থেকে বের করে তালা ঝুলিয়ে দেন। ফলে রেজিস্টার অফিসের সব কাজ বন্ধ হয়ে যায়।’

এর আগে, অফিসার্স সমিতির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রধান প্রকৌশলীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. কামরুজ্জামানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার বিজন কুমার ব্রহ্ম দাবি করেন, গতকাল তদন্ত কমিটির চিঠি রেজিস্টারের কার্যালয় থেকে ইস্যু করায় সংগঠনের কর্মকর্তারা উত্তেজিত হয়ে তার কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।

এ বিষয়ে পাবিপ্রবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি হারুনুর রশিদ ডন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কর্মকর্তাদের দাবি মানার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের উদ্যোগ না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে রেজিস্টার কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়েছে।’

ডন আরও জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলীর অপসারণ, কর্মকর্তাদের চাকরি নীতিমালায় বৈষম্য দূর করাসহ ছয় দফা দাবিতে অফিসার্স সমিতির পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

কিন্তু, কর্মকর্তাদের দাবির প্রতি আগ্রহ না দেখিয়ে উল্টো তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করায় বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তারা এ ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে জানান তিনি।

গত মঙ্গলবার অফিসার্স সমিতির নেতারা পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়য়ের প্রধান প্রকৌশলী আমিনুল ইসলামের কার্যালয়ে গিয়ে তার সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি জানান, এক কর্মীর বদলিকে কেন্দ্র করে অফিসার্স সমিতির কর্মীরা প্রকৌশল বিভাগে এসে অশোভন আচরণ করেছেন। এ ঘটনায় সম্মানহানির কারণে সেদিনের পর থেকে তিনি আর অফিস করেননি।

পরিচয় গোপন রাখার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক কর্মকর্তা জানান, প্রকৌশল বিভাগ, অফিসার্স সমিতি ও রেজিস্ট্রার বিভাগের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাজ ব্যাহত হয়েছে। ব্যক্তিগত স্বার্থের কারণেই এই সংঘাতের সূত্রপাত হয়।

তিনি বলেন, ‘কেউ তার পছন্দমতো পোস্টিং পেতে চায়, কেউ নিজের লোকদের নিয়োগ দিতে চায়, কেউ অতিরিক্ত অর্থ উপার্জন করতে চায়। ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য কর্তৃপক্ষকে চাপ দেওয়া হচ্ছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ে অশান্ত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।’

চলমান পরিস্থিতি নিয়ে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম রোস্তম আলী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পর যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Comments

The Daily Star  | English
bd govt logo

25 districts including Dhaka get new DCs

Deputy commissioners were withdrawn from these districts on August 20

1h ago