৮২ বছরের পুরনো রেকর্ড স্পর্শ ইতালির, হেরেও নকআউটে ওয়েলস

italy wales
ছবি: টুইটার

একাদশে আট পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামা ইতালি ধরে রাখল ছন্দ। টানা তিন ম্যাচ জিতে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো আগেই ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের নকআউট নিশ্চিত করা দলটি। পাশাপাশি ৮২ বছরের পুরনো একটি রেকর্ডেও ভাগ বসাল রবার্তো মানচিনির শিষ্যরা। তাদের কাছে হারলেও পরের পর্বের টিকিট পেল ওয়েলস।

রবিবার রাতে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে রোমের অলিম্পিক স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে জিতেছে স্বাগতিকরা। প্রথমার্ধের শেষদিকে জয়সূচক গোলটি করেন মিডফিল্ডার মাত্তেও পেসসিনা। তুরস্ককে ৩-০ গোলে হারিয়ে আসর শুরুর পর একই ব্যবধানে তারা হারিয়েছিল সুইজারল্যান্ডকে।

১৯৩৫ সালের নভেম্বর থেকে ১৯৩৯ সালের জুলাইয়ের মধ্যে টানা ৩০ ম্যাচে অপরাজিত ছিল ইতালি। গ্যারেথ বেল-অ্যারন রামসেরদের হারিয়ে সেই স্মরণীয় কীর্তি স্পর্শ করেছে তারা। এই নিয়ে টানা ১১ ম্যাচে কোনো গোল হজম করেনি আজ্জুরিরা। এবারের ইউরোতে তিন ম্যাচে ৭ গোল করে নিজেদের জাল অক্ষত রেখেছে তারা।

রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নেওয়া প্রতিপক্ষের গোলমুখে পুরো ম্যাচে মুহুর্মুহু আক্রমণ চালায় ইতালি। তাদের নেওয়া ২৩ শটের ছয়টি ছিল লক্ষ্যে। অন্যদিকে, ওয়েলসের তিনটি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল কেবল একটি। তারা পুরো ১১ জন নিয়ে ম্যাচ শেষ করতে পারেনি। বিরতির পর বিতর্কিত লাল কার্ড দেখে রেকর্ডের পাতায় ঠাঁই নেন ডিফেন্ডার ইথান আমপাডু। ইউরোতে এত কম বয়সে (২০ বছর ২৭৯) লাল কার্ড পাননি আর কেউ।

দ্বাদশ মিনিটে আলেসান্দ্রো বাস্তোনি রক্ষণভাগ ছেড়ে আক্রমণে উঠে এসে দারুণ বল বাড়ান দূরের পোস্টে। ফরোয়ার্ড আন্দ্রেয়া বেলোত্তি অনেক কসরত করেও তাতে পা ছোঁয়াতে পারেননি। নইলে তখনই এগিয়ে যেতে পারত ইতালি।

১৫তম মিনিটে ওয়েলসের গোলরক্ষক ড্যানি ওয়ার্ডকে পরীক্ষায় ফেলেন এমারসন। দুই মিনিট পর রাফায়েল তোলোইয়ের পাসে পেসসিনার শটও ঠেকিয়ে দেন তিনি। ২৫তম মিনিটে ফেদেরিকো কিয়েসা কাছ থেকে বল পেয়ে বেলোত্তির নেওয়া শট লক্ষ্যে না থাকলে হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন ওয়ার্ড।

২৭তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিল ওয়েলস। ড্যানিয়েল জেমসের ক্রসে ক্রিস গান্টারের হেড ক্রসবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে যায়। তিন মিনিট পর ডি-বক্সের ভেতরে তড়িঘড়ি করে শট নিয়ে সুযোগ হারান কিয়েসা।

৩৯তম মিনিটে কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পায় ইতালি। সেট-পিস থেকে তারকা মিডফিল্ডার ভেরাত্তি বল ফেলেন কাছের পোস্টে। এরপর ডান পায়ের ভলিতে জাল খুঁজে নেন পেসসিনা। জাতীয় দলের জার্সিতে সাত ম্যাচে এটি তার তৃতীয় গোল।

৫৩তম মিনিটে ফেদেরিকো বার্নারদেস্কির ফ্রি-কিক পোস্টে লেগে ফিরে আসে। দুই মিনিট পর তাকে ফাউল করায় সরাসরি লাল কার্ড দেখানো হয় আমপাডুকে। তার বুট সামান্য উঁচুতে ছিল এবং তিনি পাড়া দেন বার্নারদেস্কির গোড়ালিতে। রেফারির সিদ্ধান্তটা বেশ বিস্ময় জাগায়।

৭৬তম মিনিটে সমতায় টানার অবারিত সুযোগ নষ্ট করেন বেল। সতীর্থের হেডে একদম ফাঁকায় থেকেও বল উড়িয়ে মারেন তিনি। তার বাম পায়ের ভলি একটুও বিচলিত করতে পারেনি ইতালির গোলরক্ষক জুয়ানলুইজি দোন্নারুমাকে।

৮৮তম মিনিটে পায়ের কারিকুরি দেখিয়ে ডি-বক্সের ভেতরে বেলোত্তির নেওয়া শট রুখে দেন ওয়ার্ড। ছয় গজের বক্সে ফিরতি শটেও তাকে পরাস্ত করা যায়নি। যোগ করা সময়ে বদলি ব্রায়ান ক্রিস্তান্তের শট ফিরিয়ে আবারও ওয়েলসের ত্রাতা বনে যান ওয়ার্ড। সবমিলিয়ে পাঁচটি সেভ করেন তিনি।

গ্রুপের আরেক ম্যাচে আজারবাইজানের বাকুতে তুরস্ককে ৩-১ গোলে হারিয়ে নকআউটের আশা বাঁচিয়ে রেখেছে সুইজারল্যান্ড। ওয়েলসের মতো তাদেরও অর্জন ৪ পয়েন্ট। তবে গোল পার্থক্যে ওয়েলসের (+১) চেয়ে পিছিয়ে থেকে সুইসরা (-১) হয়েছে তৃতীয়। ছয় গ্রুপের তৃতীয় হওয়া সেরা চারটি দল জায়গা পাবে শেষ ষোলোতে।

পূর্ণ ৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে থেকে গ্রুপপর্ব শেষ করেছে ১৯৬৮ সালের ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি। তুরস্ক কোনো পয়েন্ট পায়নি। নিজেরা মোটে একবার লক্ষ্যভেদ করার বিপরীতে তারা খেয়েছে ৮ গোল।

Comments

The Daily Star  | English

No justifiable reason to delay nat'l polls beyond Dec: Salahuddin

We have been able to make it clear that there is not even a single mentionable reason to hold the election after December, says the BNP leader

2h ago