অ্যান্টি-ফ্রড সিস্টেমের মাধ্যমে সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করল ইমো
সামগ্রিক সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে অ্যান্টি-ফ্রড সিকিউরিটি মেকানিজমসহ নতুন নানা ফিচার যোগ করেছে তাৎক্ষণিক যোগাযোগের প্ল্যাটফর্ম ‘ইমো’।
ইমো থেকে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বর্তমানের ডিজিটাল বিশ্বে ব্যবহারকারীরা ক্রমবর্ধমান সাইবার ঝুঁকির সম্মুখীন হচ্ছেন। ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির বিষয়টিকে গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করে নিজেদের মূল্যবান ব্যবহারকারীদের সুরক্ষায় তাৎক্ষণিক যোগাযোগের জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্ম ইমো বিস্তৃত পরিসরের একটি অ্যান্টি-ফ্রড সিকিউরিটি মেকানিজম উন্মোচন করাসহ এর সামগ্রিক সুরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে নতুন নানা ফিচার নিয়ে এসেছে।
ইমো’র ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্রিস্টোফার শু বলেন, ‘আমরা সুরক্ষার বিষয়টিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করি এবং নিজেদের প্ল্যাটফর্মের যেকোনো অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ দিয়ে লড়াইয়ে প্রতিশ্রুতিতবদ্ধ ইমো।’
‘ক্রমবর্ধমান প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন অপরাধীদের বিরুদ্ধে এ লড়াই নিরন্তর। আমরাও এক্ষেত্রে আমাদের বিনিয়োগ বাড়ানোর পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি এ সমস্যা সমাধানে শিল্পসংশ্লিষ্ট সহযোগী ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করার বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ’, বরেন তিনি।
ব্যবহারকারীরা ইমো থেকে যতবার ভেরিফিকেশন কোড পাবে, এই নতুন অ্যান্টি-ফ্রড সিস্টেম ততবার তাদেরকে সিকিউরিটি রিমাইন্ডার দেবে। এই রিমাইন্ডারের মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যবহারকারীদের কোড অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করাকে প্রতিরোধ করা। নতুন এ সুরক্ষা ব্যবস্থা মিউচুয়াল ফ্রেন্ড নয় এমন অপরিচিত কারও পাঠানো ইউআরএল প্রিভিউ ও লিংক অকার্যকর করে দেবে। কন্ট্যাক্ট লিস্টে নেই এমন ওয়ান-ওয়ে ফ্রেন্ডদের বিষয়ে ব্যবহারকারীদের সাবধান করতে চ্যাট পেজে সিকিউরিটি রিমাইন্ডার দেখানো হবে। যাতে করে ব্যবহারকারী সাবধান হতে পারেন এবং কোনো ব্যক্তিগত তথ্য শেয়ার না করেন।
পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের আইডি হ্যাক করা থেকে সুরক্ষা দিতে বিভিন্ন ডিভাইসে লগইন করার চেষ্টা করা হলে ইমো ব্যবহারকারীকে সিকিউরিটি রিমাইন্ডার পাঠাবে এবং কারো সঙ্গে ভেরিফিকেশন কোড শেয়ার না করতে অবহিত করবে। ইমো থেকে প্রদান করা সিকিউরিটি নোটিশে লগ ইনের চেষ্টা করার বিষয়ে নতুন ডিভাইসের তথ্যসহ বিস্তারিত দেওয়া থাকবে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ‘ম্যানেজ ডিভাইসেস’ অপশনে গিয়ে কোনো ডিভাইস সন্দেহজনক মনে হলে সেই ডিভাইসটি ডিলিট করে দিতে পারবেন। নতুন যুক্ত করা ডিভাইসের ক্ষেত্রেও ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ব্যবহৃত নম্বর পরিবর্তন কিংবা অ্যাকাউন্ট ডিলিট করার বিষয়ও সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হবে।
ইমোর নীতিমালা লঙ্ঘন করে আপত্তিজনক এমন সব কন্টেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থানে নিজেদের প্রচেষ্টা জোরদার করেছে ইমো এবং এর ধারাবাহিকতায় প্রতিষ্ঠানটি এর কন্টেন্ট মডারেশন টিম সম্প্রসারণ করেছে। ২০২১ সালের প্রথমার্ধ্বে তিন হাজারের বেশি কর্মীদের নিয়ে গঠিত কন্টেন্ট মডারেশন টিমে ১৩০ জনেরও বেশি বাংলাদেশি কর্মীকে যুক্ত করেছে ইমো। যেকোনো ধরনের আপত্তিজনক কন্টেন্ট সরিয়ে ফেলতে এবং যেকোনো রিপোর্টেড কন্টেন্ট গড়ে ৬০ সেকেন্ডের মধ্যে যেন প্রসেস করা হয়, তা নিশ্চিতে ইমো’র কন্টেন্ট মডারেশন টিম সবসময় নিরলস কাজ করছে।
ক্রিস্টোফার বলেন, ‘কন্টেন্ট কমপ্লায়েন্স নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম অগ্রাধিকারের বিষয়। আপত্তিজনক কন্টেন্টের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আমরা স্থানীয় আইন মেনে এবং সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কঠোর কমিউনিটি নীতিমালা ও নির্দেশনা তৈরি করেছি। শুধুমাত্র এ বছরের অর্ধেক সময়ে আমরা সর্বমোট পাঁচ দশমিক এক কোটি আপত্তিজনক পোস্ট ও আট লাখ অ্যাকাউন্ট সরিয়ে ফেলেছি। এর মধ্যে মোট সাড়ে তিন কোটি পাবলিক কন্টেন্ট ব্যবহারকারীরা দেখার আগেই সরিয়ে ফেলা হয়েছে।’
ব্যবহারকারীরা অ্যাপে যদি নিষিদ্ধ কোনো কন্টেন্ট বা আচরণের প্রকাশ দেখতে পান, তবে তা রিপোর্ট করার বিষয়ে দৃঢ়ভাবে উৎসাহিত করে ইমো। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দায়িত্বশীল ব্যবহারের বিষয়ে উৎসাহিত করতে ইমো বাংলাদেশে একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন শুরু করেছে।
ক্রিস্টোফার আরও বলেন, ‘অশোভন বা অনুপযুক্ত যেকোনো কন্টেন্ট শনাক্ত ও মডারেট করতে আমরা এআই-সমর্থিত সার্বক্ষণিক মাল্টি-স্টেপ কন্টেন্ট মডারেশন প্রক্রিয়া তৈরি করেছি। আমাদের ব্যবস্থা কেবল স্বয়ংক্রিয়ভাবে পাবলিক কন্টেন্ট শনাক্ত করতে পারে। প্রাইভেট চ্যাটের ক্ষেত্রে আমাদের কর্মীদল এই অশোভন আচরণ বন্ধে ব্যবহারকারীদের রিপোর্ট করার ওপর নির্ভর করে। কেননা প্রাইভেট চ্যাট এনক্রিপ্ট করা থাকে। আর এজন্যই, আমরা আমাদের ব্যবহারকারীদের প্ল্যাটফর্মে যেকোনো অশোভন আচরণ দেখলে তা রিপোর্ট করতে উৎসাহিত করতে এ ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। যাতে আমরা অশোভন আচরণের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারি।’
এর আগে, ইমোর ‘সিক্রেট চ্যাট’ ফিচারটি ব্যবহারকারীদের দ্বারা প্রশংসিত হয়েছে। ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখতে ইমো ফোন নম্বর ভেরিফিকেশন পদ্ধতিও অন্তর্ভুক্ত করেছে। এ ধরনের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ফলে ইমোতে অনাকাঙ্ক্ষিত হয়রানিমূলক রিপোর্টের সংখ্যা কমেছে।
ক্রিস জোর দিয়ে বলেন, ‘কমিউনিটির সুরক্ষায় ও কমিউনিটিতে সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে ইমো ধারাবাহিকভাবে রিসোর্স ও প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করবে। বাংলাদেশের ব্যবহারকারীদের জন্য সেরা ইনস্ট্যান্ট মেসেজিং প্ল্যাটফর্ম হওয়া আগেও আমাদের লক্ষ্য ছিল, ভবিষ্যতেও আমরা এ লক্ষ্যে কাজ করব।’
Comments