শেষ ওভারের উত্তেজনায় আবাহনীর দারুণ জয়
সহজ রান তাড়ায় খেই হারানো আবাহনী লিমিটেডকে পথে রেখেছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে তার আউটের পর বদলে যায় সব হিসেব-নিকেশ। বারবার রঙ বদলানো ম্যাচে শেষ ওভারে জিততে দরকার ছিল ৯ রান। টেল এন্ডারদের বীরত্বে তা তুলে নাটকীয় জয় পেয়েছে আবাহনী।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স- আবাহনী লিমিটেড ম্যাচে ছড়িয়েছে টান টান উত্তেজনা। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির সুপার লিগের লো স্কোরিং ম্যাচ ১ উইকেটে জিতেছে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। ২০ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষেও চলে গেছে মুশফিকুর রহিমের দল
আগে ব্যাট করে মাত্র ১৩০ রান করে গাজী গ্রুপ। ওই রান তুলতে গিয়ে খাদের কিনারে চলে যাওয়া আবাহনী ম্যাচ জিতেছে ১ বল আগে।
সহজ রান তাড়ায় দারুণ দুই বাউন্ডারিতে শুরু পেয়েছিলেন লিটন দাস। কিন্তু এরপরই হারিয়ে ফেলেন ছন্দ, হয়ে যান নড়বড়ে। আরেক ইনফর্ম ওপেনার মুনিম শাহরিয়ারই আগে আউট হয়েছেন। নাসুম আহমেদের বলে ইনসাইড আউট শট খেলে বাউন্ডারি লাইনে সৌম্য সরকারের দারুণ ক্যাচে পরিণত হন তিনি।
দুইবার জীবন পাওয়া লিটন ১৭ বলে ২২ রান করে শেখ মেহদী হাসানের বলে আউট হন।
অধিনায়ক মুশফিক এদিন রান পাননি। ১৬ বল খেলে ধুঁকে ধুঁকে ১২ রান করে মুকিদুল ইসলামের শিকার হন তিনি। মুকিদুল ওই ওভারে দারুণ এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানান মোসাদ্দেক হোসেনকেও।
পাঁচে নামা নাঈম শেখ ৪ বলে ২ রান করে শেখ মেহেদীর বলে হয়ে যান বোল্ড। ৬৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় আবাহনী। এই জায়গা থেকে আফিফ হোসেনকে নিয়ে জুটি গড়ে দলকে টেনে আনেন শান্ত। তাদের ৪৯ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে আবাহনী। তবে শেষ চার ওভারে রানরেটের চাপ বেড়ে যায় অনেক। ওভারপ্রতি ১১ রানের বেশি নেওয়ার লক্ষ্য দাঁড়ায় তাদের।
১৮তম ওভারে বল করতে এসে মাহমুদউল্লাহ ঘুরিয়ে দেন খেলা। একই ওভারে আফিফ ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনকে তুলে নেন তিনি।
শেষ দুই ওভারে ১৮ রানের প্রয়োজন দাঁড়ায় আবাহনীর। মুকিদুলের দারুণ ওভারে ছড়ায় উত্তেজনা। একটি ওয়াইড নিয়ে আম্পায়ারের সঙ্গে বিবাদে জড়ান মাহমুদউল্লাহ। ওই ওভারে ৪৯ বলে ৫৮ করা শান্তকে বোল্ড করে দেন মুকিদুল। ম্যাচও হেলে পড়েছিল গাজীর দিকেই। কিন্তু শেষ বলটাতেই হয়ে যায় গড়বড়।
১৯তম ওভারের প্রথম ৫ বলে এসেছিল কেবল ৫ রান। দারুণ ওই ওভার নষ্ট করেন শেখ মেহেদী। মেহেদী হাসান রানার লং অফে ঠেলে দেওয়া শট বাউন্ডারি লাইনে ধরে ফেরাতে গিয়ে পায়ের ফাঁক দিয়ে চার দিয়ে দেন তিনি। এই চারই গড়ে দেয় ব্যবধান।
শেষ ওভার করতে এসেছিলেন নাসুম আহমেদ। প্রথম বলে ১ রান নেন তানজিম সাকিব। দ্বিতীয় বলে রানা চার মেরে দেন নাসুমকে। তৃতীয় বলে ২ রান নিতে গিয়ে রান আউট হন রানা। শেষ দুই বলে দরকার ছিল ২ রান। পঞ্চম বলে সাকিব লং অফে পাঠিয়েই ২ রান নিয়ে আনেন দারুণ জয়।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে ভালো শুরু পায়নি গাজী গ্রুপ। শেখ মেহেদী ৮ বলে ৩ রান করে সাইফুদ্দিনের বলে আউট হন। দারুণ বলে করে সাইফুদ্দিন পরে নিয়েছেন আরও ২ উইকেট। সৌম্য অবশ্য সেটা সামলে খেলছিলেন ভালোই।
জাকির হাসানকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৪৫ রান এনেছিলেন তিনি। সাকিবকে পুল, ফ্লিকে দুই ছক্কার পর মোসাদ্দেকের বলে কাভার ড্রাইভে বাউন্ডারি মেরেছিলেন। কিন্তু লফটেড কাভার ড্রাইভ খেলতে গিয়েই হয় বিপত্তি। ২৪ বলে ৩০ করে থামেন তিনি। পরে সৌম্যের ওই রানই দলের সর্বোচ্চ।
১৭ বলে ১৬ করা অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহকে কাটেন মেহেদী রানা। ১০৫ রানে ৭ উইকেট হারানো গাজীকে গুরুত্বপূর্ণ রান এনে দেন সাতে নামা মুমিনুল হক। টেস্ট অধিনায়ক ৫ চারে ১২ বলে করেছেন ২৫।
মন্থর উইকেটে ওই পুঁজিই হয়ে গিয়েছিল চ্যালেঞ্জিং।
Comments