প্যারাগুয়েকে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে আর্জেন্টিনা
প্রথমার্ধে আক্রমণের ডালি সাজিয়ে বসা আর্জেন্টিনা দ্বিতীয়ার্ধে ঢুকে গেল খোলসে। প্যারাগুয়ের চাপ সামলে শুরুর দিকে পাওয়া লিড ধরে রেখে তারা তুলে নিল টানা দ্বিতীয় জয়। তাতে লিওনেল স্কালোনির শিষ্যরা পেল কোপা আমেরিকার কোয়ার্টার ফাইনালের টিকিট।
মঙ্গলবার সকালে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে ব্রাসিলিয়ার মানে গারিঞ্চা স্টেডিয়ামে ১-০ গোলে জিতেছে আর্জেন্টিনা। দশম মিনিটে আনহেল দি মারিয়ার পাস থেকে জয়সূচক গোলটি করেন আলেহান্দ্রো গোমেজ।
একাদশে মোট ছয়টি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে আর্জেন্টিনা। রক্ষণভাগে নিকোলাস ওতামেন্দি ও মার্কোস আকুনিয়ার পরিবর্তে খেলেন জার্মান পেজ্জেয়া ও নিকোলাস তাগলিয়াফিকো। মাঝমাঠে লেয়ান্দ্রো পারেদেস ও গোমেজকে জায়গা দিতে বাইরে যেতে হয় রদ্রিগো দি পল ও জিওভান্নি লো সেলসোকে। আক্রমণভাগের লাউতারো মার্তিনেজ ও নিকোলাস গঞ্জালেজের জায়গা হয় বেঞ্চে। তাদের শূন্যস্থান পূরণ করেন সার্জিও আগুয়েরো ও দি মারিয়া।
প্রত্যাশিত পারফরম্যান্স উপহার দিতে পারেনি আর্জেন্টাইনরা। দ্বিতীয়ার্ধে গোল করার চেয়ে রক্ষণ সামলানোয় বাড়তি মনোযোগ ছিল তাদের। প্রতিপক্ষের গোলমুখে আটটি শট নেয় তারা। ছয়টিই ছিল প্রথমার্ধে। যার মধ্যে লক্ষ্যে ছিল চারটি। অন্যদিকে, প্যারাগুয়ের নেওয়া দশটি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল কেবল দুটি।
অষ্টম মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার দারুণ একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন আগুয়েরো। প্যারাগুয়ের দুই ডিফেন্ডারের বোঝাপড়ার অভাবে ডি-বক্সে পেনাল্টি স্পটের কাছে ফাঁকায় বল পেয়ে যান তিনি। কিন্তু সম্প্রতি বার্সেলোনায় যোগ দেওয়া এই স্ট্রাইকার উড়িয়ে মেরে হতাশ করেন।
দুই মিনিট পরই অবশ্য গোলের উল্লাস করে আলবিসেলেস্তেরা। ডান দিক থেকে পিএসজির উইঙ্গার দি মারিয়ার থ্রু বল প্যারাগুয়ের রক্ষণকে এলোমেলো করে দেয়। বাকি কাজটা দারুণভাবে সারেন গোমেজ। সেভিয়ার এই মিডফিল্ডার চিপ করে পরাস্ত করেন গোলরক্ষক আন্তনি সিলভাকে।
জাতীয় দলের জার্সিতে ১৪৭তম ম্যাচ খেলতে নেমে সাবেক তারকা হাভিয়ের মাসচেরানোর রেকর্ড স্পর্শ করা লিওনেল মেসি ১৮তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই গিয়েছিলেন। তার ফ্রি-কিক অল্পের জন্য থাকেনি লক্ষ্যে।
এরপর ধীরে ধীরে বল দখলে প্রাধান্য দেখাতে শুরু করে প্যারাগুয়ে। যার রেশ থাকে ম্যাচের শেষ পর্যন্ত। তাদের পায়ে ৫৭ শতাংশ সময়ে ছিল বল। কিন্তু আর্জেন্টিনার গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্তিনেজকে কঠিন কোনো পরীক্ষায় ফেলতে পারেনি তারা।
৪২তম মিনিটে দি মারিয়ার ক্রসে পেজ্জেয়ার হেড সহজেই লুফে নেন সিলভা। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে আরেকবার বল ঢুকেছিল প্যারাগুয়ের জালে। কিন্তু অফসাইডের কারণে তা বাতিল করেন রেফারি।
বিরতির পর আর্জেন্টিনার খেলোয়াড়দের মধ্যে আক্রমণে যাওয়ার প্রবণতা একদমই কমে যায়। বার্সেলোনা তারকা মেসিকে মাঝবৃত্তের দিকে হাঁটাহাঁটি করতে দেখা যায়। তার বাকি সতীর্থরা তখন চালকের আসনে থাকা প্যারাগুয়ের আক্রমণগুলো ভেস্তে দিতে ব্যস্ত ছিলেন।
নিজেদের জাল অক্ষত রাখার কৌশলে ফের সফল হয় আর্জেন্টিনা। আগের ম্যাচে উরুগুয়ের বিপক্ষে দ্বিতীয়ার্ধে রক্ষণাত্মক কৌশল বেছে নিয়ে একই ব্যবধানে জিতেছিল তারা। চলতি আসরে ৩ ম্যাচ খেলে এখন পর্যন্ত তারা হজম করেছে মোটে ১ গোল।
এই গ্রুপের আগের ম্যাচে ১-১ ব্যবধানে ড্র করেছে চিলি ও উরুগুয়ে। ২৬তম মিনিটে এদুয়ার্দো ভারগাসের লক্ষ্যভেদে এগিয়ে যায় চিলি। ৬৬তম মিনিটে উরুগুয়ে সমতায় ফেরে আর্তুরো ভিদালের আত্মঘাতী গোলে।
গ্রুপের শীর্ষে থাকা আর্জেন্টিনার পয়েন্ট ৩ ম্যাচে ৭। সমান ম্যাচে ৫ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে আছে চিলি। ২ ম্যাচে প্যারাগুয়ের অর্জন ৩ পয়েন্ট। সমান ম্যাচ খেলা উরুগুয়ের নামের পাশে রয়েছে ১ পয়েন্ট। ২ ম্যাচ খেলে বলিভিয়া এখনও পয়েন্টের খাতা খুলতে পারেনি।
Comments