ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ অবশেষে শুরু

ঢাকা বাইপাস রোডকে চার লেনের এক্সেস কন্ট্রোল এক্সপেসে উন্নীত করার কাজ শেষ পর্যন্ত শুরু হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) প্রথম পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রকল্পের অধীনে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে এটি। 

তবে, বেসরকারি অংশীদার বাছাই, ভূমি অধিগ্রহণ ও তহবিল সংগ্রহের কাজে পাঁচ বছর লেগে যাওয়ায় এ প্রকল্পের ব্যয় অনেক বেড়ে যাচ্ছে। ২০২০ সালের জুন মাসের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু, সওজকে এখন ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ বাড়াতে হচ্ছে।

‘সাপোর্ট টু জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়ক (ঢাকা বাইপাস) পিপিপি প্রকল্প’ নামের প্রকল্পটির শুরুতে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২৩৬ দশমিক ৫০ কোটি টাকা। এখন সাপোর্ট প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে হচ্ছে ৬৭৪ দশমিক ৩৪ কোটি টাকা, যা আগের চেয়ে ১৮৫ দশমিক ৩০ শতাংশ বেশি।

সময়সীমা ও ব্যয় বাড়ানোর কারণে নির্মাণ প্রকল্পের ব্যয় প্রাথমিক আনুমিত ব্যয় ৩ হাজার ৩৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৩ হাজার ২৬২ কোটি টাকা হচ্ছে এখন।

তবে, প্রকল্পের বেসরকারি অংশীদার ইতোমধ্যে তহবিলের ব্যবস্থা করে কাজ শুরু করে দিয়েছে। সওজও প্রকল্পের ৭৩ শতাংশ ভূমি অধিগ্রহণ করতে পেরেছে।

প্রকল্পটির উপ-পরিচালক এবিএম সেরতাজুর রহমান গতকাল সোমবার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মূল চ্যালেঞ্জ ছিল বেসরকারি অংশীদারের তহবিল সংগ্রহের বিষয়টি। তবে এ কাজটি হয়ে গেছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে মাঠ পর্যায়ের কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করছি আমরা।’   

সওজের প্রথম পিপিপি প্রকল্প

এক সময় ঢাকা বাইপাস রোড নামে পরিচিত দুই লেনের জয়দেবপুর-দেবগ্রাম-ভুলতা-মদনপুর সড়কটিকে সম্প্রসারিত করে চার লেনে উন্নীত করার মাধ্যমে, মূলত চট্টগ্রামের সমুদ্র বন্দরগুলোর সঙ্গে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে চায় সরকার।

প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ঢাকা শহরে প্রবেশ না করেই বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন সহজেই দেশের উত্তরাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চল ও পূর্বাঞ্চলে চলাচল করতে পারবে।

২০১২ সালের সেপ্টেম্বরে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি পিপিপির অধীনে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের নীতিগত অনুমোদন দেয়। ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও ইউটিলিটি লাইন স্থানান্তরের জন্য ২০১৬ সালে সহায়ক প্রকল্পটির অনুমোদন দেয় একনেক।

সড়কটিকে চার লেনের অ্যাক্সেস কন্ট্রোলড এক্সপ্রেসওয়ে হিসেবে উন্নীত করার লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ৬ ডিসেম্বর একটি চীনা-বাংলাদেশ কনসোর্টিয়ামের সঙ্গে চুক্তি সই করে সওজ। 

দেরি ও ব্যয় বৃদ্ধির কারণ

কর্মকর্তাদের দেওয়া তথ্য অনুসারে, চুক্তি সই করার নয় মাসের মধ্যে মহাসড়ক সম্প্রসারণের কাজ শুরু হওয়ার কথা ছিল। ২০২২ সালে যানবাহন চলাচলের জন্য সড়কটি খুলে দেওয়ার কথা ছিল। 

কিন্তু, বেসরকারি অংশীদার চলতি বছরের এপ্রিলের আগ পর্যন্ত তহবিল সংগ্রহ করতে না পারায় এবং সওজ ভূমি অধিগ্রহণের কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হয়ে যায়।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কিন্তু, মূলত মহামারির কারণেই পরে আর প্রকল্পের অগ্রগতি হয়নি বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

সাপোর্ট প্রকল্পের ব্যয় বাড়ার কারণ জানতে চাইলে সেরতাজুর জানান, ২০১৬ সালে যখন প্রকল্পটি অনুমোদন পায়, সে সময় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে তাদের জমির প্রকৃত দামের দ্বিগুণ অর্থ পরিশোধ করার নিয়ম ছিল। কিন্তু, ২০১৭ সালে নতুন ভূমি অধিগ্রহণ আইন কার্যকর হওয়ায়, সরকারকে এখন জমির প্রকৃত দামের তিনগুণ এবং জমিতে থাকা অবকাঠামোর প্রকৃত দামের দ্বিগুণ অর্থ পরিশোধ করতে হবে।

‘তাই সরকারকে বাড়তি খরচ করতে হবে’, উল্লেখ করেন তিনি। 

এ ছাড়া, সড়কের নকশার কিছু সংশোধনীর কারণে সওজকে আরও ১৩ একর জমি অধিগ্রহণ করতে হবে। এখানেও ব্যয় বাড়বে।

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

সংক্ষেপিত: ইংরেজিতে পুরো প্রতিবেদনটি পড়তে ক্লিক করুন Dhaka Bypass Expressway Project: Moves ahead finally

Comments

The Daily Star  | English

Nation mourns lost children

The death toll from the jet crash at Milestone School and College rose to 32 yesterday, as the nation reeled from shock and grief following the country’s deadliest aviation tragedy in years.

8h ago