শামি-ইশান্তের দুর্দান্ত বোলিংয়ের পর শেষ দিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষা

সাউদাম্পটনে মঙ্গলবার ছিল কার্যত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের শেষ দিন। কিন্তু একদিন রিজার্ভ ডে থাকায় খেলা হবে বুধবারও। মঙ্গলবার যা খেলা হয়েছে তাতে শেষটায় অতি নাটকীয় কিছু হলে অবাক হওয়ার থাকবে না।
Mohammad Shami
উইকেট পাওয়া মোহাম্মদ শামিকে ঘিরে ভারতের উল্লাস। ছবি: আইসিসি

পুরো দুই দিন ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। বাকি দুই দিনের অনেকটা সময় কেড়ে নিয়েছে প্রতিকূল আবহাওয়া। একদিন রিজার্ভ ডে থাকলেও বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে নিষ্প্রাণ ড্র দেখছিলেন বেশিরভাগ। দারুণ বল করে এই অবস্থা থেকেই ম্যাচে প্রাণ সঞ্চার করেছেন মোহাম্মদ শামি আর ইশান্ত শর্মা। নিউজিল্যান্ডকে বড় লিড না দিয়ে গুটিয়ে দেওয়ার পর অপেক্ষা করছে শেষ দিনের রোমাঞ্চ।

সাউদাম্পটনে মঙ্গলবার ছিল কার্যত টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের শেষ দিন। কিন্তু একদিন রিজার্ভ ডে থাকায় খেলা হবে বুধবারও। মঙ্গলবার যা খেলা হয়েছে তাতে শেষটায় অতি নাটকীয় কিছু হলে অবাক হওয়ার থাকবে না।

হাতে ৮ উইকেট নিয়ে ভারত এগিয়ে আছে ৩২ রানে। নিউজিল্যান্ডকে ২৪৯ রানে গুটিয়ে দিয়ে ২ উইকেটে ৬৪ তুলেছে বিরাট কোহলির দল। ৮ রান নিয়ে খেলছেন অধিনায়ক কোহলি, ১২ রানে অপরাজিত চেতশ্বর পূজারা। টেস্টের ৬ষ্ঠ ও শেষ দিনে খেলা হবে ৯৮ ওভার। তাতে যেকোনো ফলেরই অল্প বিস্তর সম্ভাবনা আছে।

আগের দিনের ২ উইকেটে ১০১ রান নিয়ে নেমেই শামির তোপে পড়ে নিউজিল্যান্ড। দারুণ সিম প্রেজেন্টেশন, অসাধারণ লেন্থ আর মুভমেন্টে খেল দেখান এই ডানহাতি। দলের ১১৭ রানে রস টেইলর ক্যাচ দেন শামির বলে। মিড অফে ঝাঁপিয়ে ছোবল মেরে সে ক্যাচ লুফেন শুভমান গিল।

হেনরি নিকোলসকে নিয়ে বিপর্যয় সামালের চেষ্টায় ছিলেন কেইন উইলিয়ামস। ইশান্ত এসে থামান এই জুটি। ইশান্তের বেরিয়ে যাওয়া বলে ব্যাট ছুঁইয়ে স্লিপে রোহিত শর্মার নিরাপদ হাতে ক্যাচে পরিণত হন বাঁহাতি নিকোলস।

পরের ওভারেই ভেতরে ঢোকা দারুণ এক ডেলিভারিতে বিজে ওয়েটলিংকে বোল্ড করে দেন শামি। কেঁপে উঠে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং। প্রথম সেশনে ৩ উইকেট হারিয়ে লাঞ্চে যায় কিউইরা।

লাঞ্চের পর ঘুরে দাঁড়ানোর অ্যাপ্রোচ দেন নিউজিল্যান্ড। রান বাড়ানোর চিন্তা করেন তারা। তবে ২৭ রানের জুটির পর আবার আঘাত। শামির আরেকটি স্বপ্নীল ডেলিভারিতে কাবু কলিন ডি গ্যান্ডহোম। গুড লেংথে বল পড়ে ভেতরে ঢোকা বল খেলার আগেই গিয়ে লাগে গ্যান্ডহোমের পায়ে। আম্পায়ারের দেওয়া এলবিডব্লিউ আউট রিভিউ করার দরকার মনে করেননি তিনি।

উইলিয়ামসন হয়েছিলেন ভারতের পথে কাঁটা। তবে এরপরের দুই পেসার কাইল জেমিসন আর টিম সাউদি বাড়িয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ কিছু রান। জেমিসন নেমেই টি-টোয়েন্টি মেজাজ নেন। দ্রুত রান বাড়ানোই ছিল তার কৌশল। তাতে বেশ কিছুটা সফলও তিনি।

শামিকে ছক্কায় উড়ানোর পর সেই প্রচেষ্টাই বিপদ আনে তার। শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে ধরা পড়েন স্কয়ার লেগে। তবে ১৬ বলে ২১ রানের ইনিংসটা নিশ্চিতভাবে ম্যাচের প্রেক্ষিতে ভীষণ প্রয়োজনীয়।

আরও প্রয়োজনীয় রান আসে সাউদির ব্যাটে। শেষ ব্যাটসম্যান হিসেবে জাদেজার বলে বোল্ড হওয়ার আগে ৪৬ বলে ৩০ রান করেছেন তিনি। তবে এর আগেই নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে বড় ধাক্কা দিয়ে দিয়েছিলেন ইশান্ত। স্লিপ আর গালির মাঝামাঝি জায়গায় ফিল্ডার রেখে অফ স্টাম্পের বাইরে লাফানো বল দিয়েছিলেন। তাতে শাফল করে ক্যাচ দেন উইলিয়ামসন। ১৭৭ বলে ৪৯ করা নিউজিল্যান্ড কাপ্তান ধরা পড়েন ভারত কাপ্তানের হাতেই।

Tim Southee
গিলকে আউট করে ৬০০ আন্তর্জাতিক উইকেট টিম সাউদির।

৩২ রানে পিছিয়ে থেকে দুই ওপেনার রোহিত-গিল শুরুটা করেছিলেন ধীরস্থির। সাউদি, বোল্টদের মুভমেন্টের মাঝে ফোকাস থাকার চেষ্টায় ছিলেন তারা। রোহিত থিতু হতে সময় নেননি। ১০ ওভার কাটিয়ে দেওয়ার পর ঘটে বিপত্তি। সাউদির বলে আড়াআড়ি খেলতে গিয়ে ৮ করা গিল এলবিডব্লিউ হলে ২৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত।

এরপর চেতশ্বর পূজারাকে নিয়ে জুটি পেয়েছিলেন রোহিত। দুজনে উইকেটে পার করেছিলেন ১৬ ওভারের বেশি। তবে রান আসে কেবল ২৭। আগের ইনিংসের মতো এদিনও সাবলীল খেলে থিতু হওয়া রোহিত একদম শেষ বিকেলে হন কাবু। এলবিডব্লিউ করে তাকেও ছেঁটেছেন সাউদি।

শেষ দিনে খেলা হবে ৯৮ ওভার। বৃষ্টি বাগড়া না দিলে তাতে হতে পারে অনেক কিছু। উইকেট, কন্ডিশন আভাস দিচ্ছে রোমাঞ্চেরও।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

ভারত প্রথম ইনিংস:  ২১৭

নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস: ৯৯.২ ওভারে ২৪৯ (ল্যাথাম ৩০, কনওয়ে ৫৪, উইলিয়ামসন ৪৯,  টেইলর ১১, নিকোলস ৭, ওয়েটলিং ১, গ্র্যান্ডহোম ১৩, জেমিসন ২১, সাউদি ৩০, ওয়েগনার ০, বোল্ট ৭* ; ইশান্ত ৩/৪৮, বুমরাহ ০/৫৭, শামি ৪/৭৬, অশ্বিন ১/২৮, জাদেজা ১/২০)

ভারত দ্বিতীয় ইনিংস: ৩০ ওভারে ৬৪/২  (রোহিত ৩০, গিল ৮, পূজারা ১২*, কোহলি ৮* ; সাউদি ২/১৭, বোল্ট ০/২০, জেমিসন ০/১৫, ওয়েগনার ০/৮)

 

 

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

4h ago