অমি মানবপাচারকারী: সিআইডি

নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার তুহিন সিদ্দিক অমি কয়েক শ জনকে বিদেশে পাচারের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
তুহিন সিদ্দিক অমি। ছবি: সংগৃহীত

নায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেপ্তার তুহিন সিদ্দিক অমি কয়েক শ জনকে বিদেশে পাচারের মাধ্যমে দেশে-বিদেশে বিপুল পরিমাণ অর্থ-সম্পদের মালিক হয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।

গতকাল মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক শেখ ওমর ফারুক বলেন, ‘সারাদেশে অমির ৫০ থেকে ৬০ জন এজেন্ট আছে, যারা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাই ও আরও কিছু দেশে ভালো চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মানুষকে প্রলুব্ধ করে।’

‘এ মানুষগুলো কোনো চাকরি ছাড়া বিদেশে আটকা পড়েছে। দুবাই, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর ও অন্যান্য দেশে পাঠানোর নাম করে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে লাখো টাকা হাতিয়ে নিয়েছে অমিরা’, যোগ করেন তিনি।

মানবপাচারের অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় হওয়া মামলায় অমির নয় সহযোগীকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য প্রকাশ করল সিআইডি।

গ্রেপ্তার নয় জন হলেন— অমির ঘনিষ্ঠ সহযোগী জসিমউদ্দিন, তার স্ত্রীর বড় ভাই রাকিবুল ইসলাম রানা, গাড়িচালক সালাউদ্দিন এবং মো. মুসা, গোলাপ হোসেন বুলবুল, জাকির হোসেন, মো. নাজমুল, মো. আলম ও শাহজাহান সরকার নামের আরও ছয় সহযোগী।

দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে, সংবাদ সম্মেলনে গ্রেপ্তারের তারিখ জানানো হয়নি।

পুলিশ অমির চারটি বিলাসবহুল গাড়ি, ৩৯৫টি পাসপোর্ট, সম্পত্তির দলিল, ক্রেডিট কার্ড, ২২টি কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক ও কিছু স্ট্যাম্প জব্দ করেছে।

তবে, অমির রিক্রুটিং এজেন্সির লাইসেন্স আছে কি না এবং তিনি কতদিন ধরে মানবপাচারে জড়িত আছেন, সে বিষয়ে কোনো তথ্য দেয়নি সিআইডি।

অমির মাধ্যমে বিদেশে যাওয়া ব্যক্তিদের পরিবার বলছে, তাদের পরিবারের সদস্যরা বিদেশে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। যথাযথ পদ্ধতিতে বিদেশ না যাওয়ায় সেখানে কোনো কাজ খুঁজে পাচ্ছেন না তারা।

ঢাকা মেট্রো (উত্তর) সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট খালিদুল হক জানান, মানবপাচারের মাধ্যমে গড়ে তোলা অর্থ-সম্পদের খোঁজ পেতে তারা অমির বিরুদ্ধে অর্থপাচারের তদন্ত শুরু করবেন।

অমি (৩৩) আশকোণার আয়াত আরাফাত ট্রাভেল ট্যুর সার্ভিসের মালিক এবং সিঙ্গাপুর ট্রেনিং সেন্টার নামের একটি ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক। পরীমনি সাভার থানায় ছয় জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টা মামলা করার পর ১৪ জুন পুলিশ যে পাঁচজনকে উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করে, তিনি তাদের একজন।

ঢাকার দক্ষিণখান এলাকায় ও রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত ক্লাবে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত অমির বিরুদ্ধে পরীমনিকে গত ৯ জুন মধ্যরাতের দিকে কৌশলে ঢাকা বোট ক্লাবে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

মামলার বিবরণে পরীমনি উল্লেখ করেছেন, সেখানে ব্যবসায়ী ও উত্তরা ক্লাব লিমিটেডের সাবেক প্রেসিডেন্ট নাসির ইউ মাহমুদ তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। অমি ও অজ্ঞাত পরিচয়ের চার ব্যক্তির সহায়তায় তাকে ধর্ষণেরও চেষ্টা চালান তিনি।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments