মাহমুদউল্লাহর শিশুতোষ আচরণের ম্যাচে প্রাইম ব্যাংকের নায়ক অলক
লো স্কোরিং ম্যাচটা রূপ নিচ্ছিল শেষ দিকের উত্তেজনায়। হঠাৎ খেলার সমীকরণ ভুলিয়ে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স অধিনায়ককে দেখা গেল শিশুতোষ আচরণ করতে। মাটিতে ঘুষি মেরে মাঠেই গড়াগড়ি খেলেন তিনি। এই ঘটনার পরে শেষ ওভারে যাওয়া ম্যাচে ছয়-চার মেরে নায়ক বনেছেন অভিজ্ঞ অলক কাপালি। এদিন বোলিংয়েও তিন উইকেট নিয়ে সবার সেরা তিনি।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রাইম ব্যাংক লিমিটেড, গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের ম্যাচটা ছিল ঘটনাবহুল। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির সুপার লিগের এই ম্যাচে ১ উইকেটে জিতেছে প্রাইম ব্যাংক। আবাহনীকে ছাড়িয়ে পয়েন্ট টেবিলেরও শীর্ষে তারা।
আগে ব্যাট করে মাত্র ১২৫ রান করতে পারে গাজী। গাজীর ইনিংস চেপে ৪ ওভার বল করে ১৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন অলক। রান তাড়ায় বিপদে পড়া প্রাইমকে বাঁচাতেও অগ্রণী আটে নামা অলক।
শেষ ওভারে জেতার জন্য দরকার ছিল ১০ রান। রুবেল হোসেন এক রান নিয়ে অলককে স্ট্রাইক দিলে মহিউদ্দিন তারেককে ছক্কা মেরে দেন অলক। ম্যাচ হয়ে যায় সহজ। এক বল আগে ৪ মেরে জেতার কাজটাও এসেছে অলকের হাত ধরে।
তবে চার ওভার আগেই ঘটে এক অবাক করা কাণ্ড। ১৬তম ওভারের পঞ্চম বলের ঘটনা। নাসুম আহমেদের টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়া বলে পরাস্ত হয়েছিলেন অলক। কট বিহাইন্ডের জোরালো আবেদন করে গাজী গ্রুপের ক্রিকেটাররা। আম্পায়ার মাহফুজুর রহমান নাকচ করে দিলে মাটিতে ঘুষি মেরে শুয়ে একবার গড়াগড়ি দেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর মাঠেই বসে থাকেন কিছুক্ষণ। মিনিট খানেক বসে থাকার পর উঠে ফিল্ডিংয়ে যান তিনি।
তখন ম্যাচ জিততে গাজী গ্রুপের দরকার ২৪ বলে ৩৮ রান। পরের ওভারে নিজে বল করতে এসে প্রথম দুই বলেই নাহিদুল ইসলামের হাতে ছক্কা খান মাহমুদউল্লাহ। তৃতীয় বলে অবশ্য নাহিদুলকে ফেরান তিনি। তবে ৩ ছক্কায় নাহিদুলের ৩৯ রানের ইনিংসটি গড়ে দিয়েছে তফাৎ।
আগের ম্যাচেও একটি ওয়াইড ঘিরে অস্বাভাবিক আচরণ করতে দেখা যায় মাহমুদউল্লাহকে। আবাহনী লিমিটেডের বিপক্ষে সে ম্যাচে বোলার মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ লাইনের উপরেই বল ফেলেছিলেন। অন দ্য লাইন বল থাকলে ওয়াইডেরই নিয়ম। কেন ওয়াইড দেওয়া হয়েছে জানতে চেয়ে আম্পায়ারের দিকে আপত্তিকর ভাষায় কথা বলেন তিনি। পরে আম্পায়ারের কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছিলেন।
১২৬ রান তাড়ায় নেমে আগের ম্যাচের হিরো রুবেল মিয়াকে প্রথম বলেই হারায় প্রাইম। অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় ৯ আর মোহাম্মদ মিঠুন ফেরেন ১ রান করে। রনি তালুকদার ১৯ বলে আউট হন ১১ রানে। রকিবুল হাসান ২০ করে ফিরলে ৫১ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল প্রাইম ব্যাংক।
চরম বিপর্যস্ত অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ান নাহিদুল-নাঈম হাসান। দুজনে আনেন ৩৬ রান। ১৬ করা নাঈমকে ফিরিয়ে এই জুটি ভেঙ্গেছিলেন নাসুম। ক্যাচ ছেড়ে নাঈমকে একবার সুযোগ দেন মাহমুদউল্লাহ। পরে নাহিদুল আর অলকের বীরত্বে ম্যাচ জিতে নেয় শিরোপা প্রত্যাশীরা।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে গিয়ে সৌম্য সরকার ফেরেন প্রথম ওভারেই। রান আসেনি মুমিনুল হক, ইয়াসির আলি, মাহমুদউল্লাহর ব্যাটেও। এক প্রান্ত আগলে শেখ মেহেদী হাসান রান করলেও বিপদ বাড়ছিল। অলক বল করতে এসে চেপে ধরার সঙ্গে উইকেটও নিতে থাকেন। ইয়াসির তার বলে শর্ট মিড উইকেটে দেন ক্যাচ, অনেক শর্ট বলে স্কয়ার লেগে ক্যাচ দেন মাত্র ২ রান করা মাহমুদউল্লাহ।
জাকির হাসানকে লং অনে ক্যাচ বানান অলক। এর আগে রুবেল মিয়ার বলে বিদায় নেন সর্বোচ্চ ৩৩ করা শেখ মেহেদী।
৬৫ রানে ৬ উইকেট হারানো দলটি মন্থর উইকেটে দিশা পায় আরিফুল হক- আকবর আলির ব্যাটে। সপ্তম উইকেটে দুজনে আনেন ৩৮ রান। আটে নামা আকবর ২২ বলে করেন ২৪ রান। আরিফুল একদম শেষ বলে রানআউটের আগে করেন ২৮ বলে ৩১ রান।
Comments