বাংলাদেশে ট্রায়ালের অনুমোদন পেল চীনের ‘ভেরো সেল’ টিকা

ছবি: সংগৃহীত

করোনাভাইরাসের একটি চীনা টিকা মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের (ট্রায়াল) অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ উদ্যোগ স্থানীয়ভাবে টিকা উৎপাদনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা বাড়াতে সহায়তা করবে।

গতকাল বুধবার ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল বায়োলজি চাইনিজ একাডেমি অব মেডিকেল সায়েন্সের (আইএমবিক্যামস) ভেরো সেল নামের এ টিকার তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি)।

দুই সপ্তাহের মধ্যেই এই ট্রায়াল শুরু হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

এর আগে আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ১৮ বছর বা তার বেশি বয়সীদের ওপর টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালানোর অনুমোদনের অনুরোধ জানায়।

এ ট্রায়াল কখন ও কোথায় শুরু হবে— গতকাল আইসিসিডিআরবিকে তা জানাতে বলেন বিএমআরসির পরিচালক অধ্যাপক রুহুল আমিন। অনুমোদনের অপেক্ষায় থাকা আরও দুটি টিকার বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত জানায়নি কাউন্সিল।

২০২০ সালের আগস্টে চাইনিজ একাডেমি ও আইসিডিডিআরবি ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পরিচালনা সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই করে।

ট্রায়াল পরিচালনার জন্য আইসিডিডিআরবিকে প্রায় এক দশমিক শূন্য পাঁচ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দিয়েছে চাইনিজ একাডেমি। এ ছাড়া, ওয়ান ফার্মাকে স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে নিয়োগ দেয় একাডেমি।

এখন পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার তিন শতাংশেরও কম মানুষকে করোনাভাইরাসের টিকা দিতে পেরেছে বাংলাদেশ। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে টিকাদান কর্মসূচি  শুরু হয়। তবে, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ায় বাধার মুখে পড়ে এ কর্মসূচি।

ওয়ান ফার্মার ব্যবস্থাপনা পরিচালক কেএসএম মোস্তাফিজুর গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘দুই সপ্তাহের মধ্যেই ভেরো সেলের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু হবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসি বিভাগের সাবেক ডিন অধ্যাপক এবিএম ফারুক বলছেন, ট্রায়ালের মাধ্যমে বাংলাদেশ উপকৃত হবে।

জীবনযাপন পদ্ধতি, জলবায়ু, দৈনন্দিন অভ্যাস ও মানুষের আচরণ একেক দেশে একেক রকম হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হলে, এ টিকা আমাদের জনগণের ওপর কেমন কাজ করে তা জানতে পারব আমরা। এর কার্যকারিতা, এটি কতটা ভালো কাজ করে এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কী— তাও জানা যাবে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নির্ধারিত গাইডলাইন অনুসরণ করে এ ট্রায়াল পরিচালনা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এর কোনো ব্যতিক্রম গ্রহণযোগ্য হবে না।’

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) বে-নজির আহমেদ বলেন, ‘ট্রায়াল সফল হলে টিকার প্রাপ্যতা নিশ্চিত হবে। আরও আগেই এ অনুমোদন দেওয়া উচিত ছিল সরকারের। একেবারে কিছু না হওয়ার চেয়ে দেরিতে শুরু হওয়াও ভালো। ট্রায়াল প্রক্রিয়ায় স্থানীয় বিশেষজ্ঞরা যুক্ত থাকবেন। ফলে ভবিষ্যতে টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে দক্ষতা তৈরি হবে।’

পোলিও ও ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকার মতো একটি নিষ্ক্রিয় টিকা ভেরো সেল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে মালয়েশিয়াতে এ টিকার তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল হয়।

আইএমবিক্যামস ছাড়াও ভারতের ভারত বায়োটেক ও বাংলাদেশের গ্লোব বায়োটেক গত বছর মানবদেহে এ টিকা ট্রায়ালের অনুমোদন চায়।

বিএমআরসি নির্ধারিত শর্তগুলো পূরণ করতে পারলে গ্লোব বায়োটেক এ অনুমোদন পেতে পারে বলে জানান রুহুল আমিন।

‘তবে, ভারতের বায়োটেকের আবেদনের বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত নিইনি আমরা’, তিনি উল্লেখ করেন।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন জারীন তাসনিম

Comments

The Daily Star  | English
Eid-ul-Azha 2025

Main Eid congregation held at National Eidgah

With due religious solemnity and fervour, the main congregation of Eid-ul-Azha was held at the National Eidgah.

55m ago