নান্দনিক লিটনের জবাবে উত্তাল আশরাফুল, হারল আবাহনী
নাঈম শেখের শুরুর ঝড়ের পর দলের হাল ধরলেন লিটন দাস। মাঝের ওভারে কিছু উইকেট পড়ায় ইনিংস টানলেন শেষ অবধি। পরে ঝড় তুলে পুষিয়ে দিলেন সবটা, তার ব্যাটে বড় পুঁজি পেল আবাহনী লিমিটেড। রান তাড়ায় বিপদে পড়া দলকে উদ্ধার করে মোহাম্মদ আশরাফুল মনে করিয়ে দিলেন পুরনো দিনের ছবি। তার ব্যাট হয়ে উঠল উত্তাল। শেখ জামাল ধানমন্ডির কাছে আবাহনী হেরে যাওয়ায় জমে উঠল শিরোপার দৌড়।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার দুপুরে ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য ছিল বিনোদন ভরপুর ম্যাচ। আগে ব্যাট করে লিটনের ৫১ বলে ৭০ রানে ভর করে আবাহনী করেছিল ১৭৩ রান। ১২ রানে ২ উইকেট হারানোর অবস্থা থেকে আশরাফুল করলেন ৪৮ বলে ৭২ রান । ৯ বল আগে ৬ উইকেটে ম্যাচ জিতল শেখ জামাল ধানমন্ডি।
এই জয়ে লিগ জেতার দৌড়ে আসতে পারেনি শেখ জামাল। তবে হেরে যাওয়ায় কাজটা কঠিন হয়ে গেল বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর। এখন নিজেদের জেতার পাশাপাশিও প্রাইম ব্যাংকের ম্যাচের দিকে নজর রাখতে হবে তাদের।
১৭৪ রানের কঠিন লক্ষ্য তাড়ায় গিয়ে দ্বিতীয় ওভারেই সৈকত আলিকে হারায় শেখ জামাল। দলের ১২ রানে ৪ বলে ৩ রান করা ইমরুল হয়ে যান মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বলে বোল্ড। এই অবস্থায় ওপেন করতে নামা আশরাফুল সঙ্গী হিসেবে পান নাসির হোসেনকে। দুজনে মিলে তুলোধুনো করতে থাকেন আবাহনীর বোলিং।
৪৩ বলে দুজনের জুটিতে আসে ৬৯ রান। মারের শুরুটা করেন আশরাফুলই। লফটেড ড্রাইভ, ইনসাইড আউটে চোখ ধাঁধানো শট মারতে থাকেন তিনি। নাসির উঠে খেলতে থাকেন আগ্রাসী ক্রিকেট। নেমেই দুই ছক্কা মেরে দেন তিনি।
৪ বাউন্ডারি, ২ ছক্কায় ২২ বলে ৩৬ করা নাসির আউট হলে ভাঙ্গে এই জুটি। নাসিরের বিদায়েও ছেদ পড়েনি আশরাফুলের তাণ্ডবে। ৩৬ বলে ফিফটি তোলা এই অভিজ্ঞ তারকা পরের ২২ রান এনেছেন আরও ১২ বলে। স্কুপ করে চার, সুইচ হিটে চার দেখা গেছে আশরাফুলের ব্যাটে। ৪৮ বলের ইনিংসে মেরেছেন ৮ চার, ২ ছক্কা।
আশরাফুলকে যোগ্য সঙ্গত করেন নুরুল হাসান সোহান। তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটিতে আসে ৬০ রান। তাতে ৩ ছক্কা, ১ চারে নুরুলের অবদান ২২ বলে ৩৬।
শেষ দিকে নেমে ২ ছয়, ২ চারে মাত্র ৯ বলে ফিনিশিং টাচটা দেন জিয়াউর রহমান।
এর আগে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নিয়ে প্রথম ওভারেই ছন্দে থাকা মুনিম শাহরিয়ারকে হারায় আবাহনী। এই ক্ষত অবশ্য বুঝতে দেননি লিটন-নাঈম। দ্বিতীয় উইকেটে ৬৮ রান আনেন তারা। লিটন সময় নিয়ে খেললেও আগ্রাসী খেলে ২৮ বলে ৪২ করে যান নাঈম। নাঈমের পর নাজমুল হোসেন শান্ত রান আউটে কাটা পড়েন দ্রুত। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত নেমে বলে রানে তাল মেলাতে পারেননি। মাঝের ওভারে কিছুটা মন্থর হয়ে পড়ে আবাহনী।
আফিফ হোসেনকে নিয়ে অবশ্য সবটা পুষিয়ে দিয়েছিলেন লিটন। শেষ ৫ ওভারে তুলেন ঝড়। এই সময় আবাহনী যোগ করে আরও ৫৮ রান। একদম শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে ৫১ বলে ৭০ করে যান লিটন। তাতে আছে দৃষ্টিনন্দন ৮ চার আর ১ ছক্কা। আফিফ করেন ১৫ বলে ১৯ রান।
ইনিংস বিরতিতে মনে হয়েছিল যথেষ্ট রানই আছে আবাহনীর বোর্ডে। কিন্তু কে জানত পুরনো দিন ফিরিয়ে এনে তা মামুলি বানিয়ে দেবেন আশরাফুল!
Comments