মানিকগঞ্জে বিধিনিষেধে: গণপরিহন ছাড়া সবই চলছে
মানিকগঞ্জে লকডাউনের চতুর্থ দিন চলছে আজ শুক্রবার। তবে, গণপরিবহন ছাড়া সব ধরনের যানবাহনই চলাচল করছে জেলা শহরে। জরুরি সেবার সঙ্গে সম্পর্কিত নয় এমন অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানই খোলা আছে। স্বাস্থ্যবিধি না মেনে সেখানে কেনাকাটা করছেন মানুষজন।
আজ সকালে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও প্রাইভেটকার, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক, রিকশা ও মোটরসাইকেলে করে যাত্রীরা চলাচল করছেন। চেকপোস্টে নানা অজুহাত দেখাচ্ছেন তারা।
গণপরিবহন বন্ধ থাকায় কর্মজীবীদের কর্মস্থলে যাতায়াতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ছোট ছোট যানবাহনে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে ভেঙে ভেঙে পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় যেতে হচ্ছে তাদের।
মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌর সুপার মার্কেট ছাড়া সব ধরনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা দেখা গেছে। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে মানুষজনকে কেনাকাটা ও সেবা নিতে দেখা গেছে।
জেলা শহরের বিভিন্ন সড়কের পাশের অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানও আংশিকভাবে খোলা রাখতে দেখা গেছে। শহীদ রফিক সড়কের দুই পাশে অবস্থিত পোশাক ও কাপড়ের দোকানগুলো আংশিকভাবে খোলা আছে। এসব দোকানের সামনে চেয়ারে বসে ক্রেতাদের ডেকে পণ্য বিক্রি করতেও দেখা গেছে।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে পণ্যবাহী গাড়ির পাশাপাশি দুই পাড়ের যাত্রীদেরই চলাচল করতে দেখা গেছে। তবে, আজ নৌপথে পারাপারের যাত্রী ছিল তুলনামূলকভাবে কম। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় পৌঁছার পর ঢাকাগামী যাত্রীদের বিপাকে পড়তে হচ্ছে। একই পরিস্থিতি আরিচা-কাজিরহাট নৌপথেও।
জানতে চাইলে বিআইডব্লিউটিসির আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘এ নৌপথের ১৬টি ফেরির মধ্যে ১০টি দিয়ে পণ্যবাহী গাড়ির পাশাপাশি লাশ ও রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স পারাপার করা হচ্ছে। গণপরিবহন বন্ধ থাকায় খুব অল্পসংখ্যক যাত্রী ঘাট এলাকায় আসছেন। জরুরি পণ্যবাহী যানবাহন পারাপারের সময় এ যাত্রীরা ফেরিতে উঠে পড়ছেন। এক রকম বাধ্য হয়েই তাদের পারাপার করতে হচ্ছে।’
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের সূত্র মতে, গত কয়েকদিনে মানিকগঞ্জে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় নতুন করে আরও ৯ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। ৮৬টি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে আক্রান্তের হার ১০ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় সাটুরিয়া উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে।
এ পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছে দুই হাজার ৪৭০ জনের। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন দুই হাজার ৩০৭ জন। মারা গেছেন ৫০ জন।
সিভিল সার্জন ডা. আনোয়ারুল আমিন আখন্দ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বিধি-নিষেধের মধ্যেও কেউ কেউ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে রাস্তাঘাটে চলাচল করছেন। এতে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকেই যাচ্ছে।’
জেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ বলেন, ‘করোনা সংক্রমণ কিছুটা বেড়েছে। লকডাউনের বিধিনিষেধ কার্যকর করতে পাটুরিয়া ঘাট ও জেলা শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালত কাজ করছেন।’
উল্লেখ্য, সীমন্তবর্তী জেলাগুলোতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় রাজধানী ঢাকায় এসব জেলাগুলোর মানুষের চলাচল বন্ধে গত সোমবার মানিকগঞ্জসহ সাতটি জেলায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। জেলা প্রশাসনের বিধিনিষেধ সংক্রান্ত গণবিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ২২ জুন সকাল ৬টা থেকে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত জেলায় নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ও জরুরি সেবা ছাড়া গণপরিবহন, বিপণিবিতান ও অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে।
Comments