কোভ্যাক্স: মডার্নার ২৫ লাখ ডোজ টিকা আসছে ১০ দিনের মধ্যে

আসছে সিনোফার্মের টিকাও
MODERNA.jpg
ছবি: রয়টার্স

বৈশ্বিক টিকা সরবরাহ কর্মসূচি কোভ্যাক্সের আওতায় বাংলাদেশ আগামী ১০ দিনের মধ্যে ২৫ লাখ ডোজ মডার্না ভ্যাকসিন পাবে।

পূর্ব প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী এই ভ্যাকসিনগুলো পাঠানো হবে বলে কোভ্যাক্স থেকে বাংলাদেশ সরকারকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এটি হবে কোভ্যাক্সের কাছ থেকে আসা ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় চালান।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কোভ্যাক্স সম্প্রতি আমাদেরকে মডার্না ভ্যাকসিনের ডোজ সম্পর্কে জানিয়েছে। আমরা টিকাগুলো সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে হাতে পাব।’

তিনি বলেন, এই ডোজগুলো চলমান টিকাদান কর্মসূচিকে আরও গতিশীল করবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, চীনের সিনোফার্মের কাছ থেকে কেনা ভ্যাকসিনের ডোজের প্রথম চালানটি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে দেশে এসে পৌঁছাবে।

বাংলাদেশ এখনো জরুরি ব্যবহারের জন্যে মডার্নার কোভিড ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়নি। তবে, স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা গতকাল জানিয়েছেন, খুব দ্রুতই এটি অনুমোদন পাবে।

কোভ্যাক্স প্রকল্পটির নেতৃত্ব দিচ্ছে গ্যাভি, ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস অ্যান্ড ইনোভেশন (সেপি)।

কোভ্যাক্স প্রকল্পটি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর জন্যে কোভিড ভ্যাকসিনপ্রাপ্তি নিশ্চিতে কাজ করছে।

এই সুবিধার আওতায় বাংলাদেশের ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা ছিল, যা দেশের জনসংখ্যার ২০ শতাংশ মানুষের জন্যে যথেষ্ট হতো। তবে, এ পর্যন্ত মাত্র একটি চালানে ফাইজারের এক লাখ ছয় হাজার ডোজ টিকা এসেছে।

গত ২ মার্চ কোভ্যাক্স সরকারকে জানিয়েছিল, তারা মে’র মধ্যে বাংলাদেশে এক কোটি নয় লাখ ডোজ অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন পাঠাবে। তবে, তারা সেটি সরবরাহ করেনি।

ইতোমধ্যে কর্মকর্তাদের বরাতে জানা গেছে, অর্থ মন্ত্রণালয় চীনের কোভিড ভ্যাকসিনের প্রথম চালানটি কেনার জন্য তহবিলের অনুমোদন দিয়েছে।

চীনের বেইজিং ইনস্টিটিউট অব বায়োলজিক্যাল প্রোডাক্ট কোং লিমিটেডের কাছ থেকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ভ্যাকসিন কেনার প্রস্তাবের বিপরীতে অর্থ মন্ত্রণালয় তহবিল বরাদ্দ করেছে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের প্রথম চালানটি আগামী মাসের প্রথম সপ্তাহে পাব।’

ভ্যাকসিনের মূল্য ও পরিমাণ সম্পর্কে জানতে চাইলে উত্তর দেননি স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

সরকার বলেছিল, তারা এক কোটি ৫০ লাখ ডোজ সিনোফার্ম ভ্যাকসিন কিনবে এবং সেগুলো তিন কিস্তিতে দেশে পৌঁছাবে।

বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত মোট জনসংখ্যার তিন শতাংশেরও কম মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে। গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া টিকাদান কর্মসূচিটি ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে ভ্যাকসিনের সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে স্থগিত করা হয়।

ভারতে করোনার কারণে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার হঠাৎ করে অনেক বেড়ে যাওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউট বাংলাদেশেকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের ডোজগুলো পাঠাতে পারেনি।

চুক্তি অনুযায়ী, ছয় চালানে জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে বাংলাদেশের তিন কোটি ডোজ ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা ছিল।

সেরাম চুক্তি অনুযায়ী জানুয়ারিতে প্রথম ৫০ লাখ ডোজ পাঠিয়েছে। কিন্তু, এরপর ফেব্রুয়ারিতে তারা মাত্র ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠায়। এরপর থেকে আর কোনো চালান আসেনি বাংলাদেশে।

ইতোমধ্যে ভারত সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে ৩৩ লাখ ডোজ অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিন পেয়েছে বাংলাদেশ।

ভ্যাকসিনের পর্যাপ্ত মজুত না থাকায় বাংলাদেশ গত ২৬ এপ্রিল প্রথম ডোজের কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়াটিকেও ৫ মে থেকে স্থগিত করে দেওয়া হয়।

চীন সরকারের কাছ থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ১১ লাখ ডোজ সিনোফার্ম ভ্যাকসিনের মাধ্যমে ১৯ জুন থেকে আবারও সীমিত আকারে সরকার প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া শুরু করেছে।

ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মোহাম্মদ ইশতিয়াক খান

Comments

The Daily Star  | English
Anti-Terrorism Act

Govt issues ordinance amending Anti-Terrorism Act

Activities of certain entities, and activities supporting them can now be banned

3h ago