শেষের রোমাঞ্চে প্রাইম ব্যাংককে হারিয়ে আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা
নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের গুরুত্বপূর্ণ দুই ইনিংসের পর ছোট্ট ঝড় এল মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের ব্যাটে, জুতসই পুঁজি এনে বল হাতেও জ্বলে উঠলেন সাইফুদ্দিন। রান তাড়ায় শেষ দিকে অলক কাপালি ঝড় তুললেও তীরে তরি ভেড়ানো হয়নি প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবের। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে টানা তৃতীয় শিরোপা জিতল আবাহনী লিমিটেড।
মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রাইম ব্যাংককে ৮ রানের ব্যবধানে হারিয়েছে আবাহনী। শনিবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির সুপার লিগের শেষ দিনের ম্যাচটা হয়ে উঠেছিল অলিখিত ফাইনাল। তাতে আগে ব্যাট করে আবাহনীর করা ৭ উইকেটে ১৫০ রানের জবাবে প্রাইম করতে পেরেছে ১৪২ রান।
দলের জয়ে ৩৬ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন সাইফুদ্দিন। এই জয়ে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে টানা চ্যাম্পিয়ন হলো আকাশী-নীল দল। ঢাকা শীর্ষ লিগের ইতিহাসে আবাহনীর এটি ২১তম শিরোপা।
প্রাইমের ইনিংসের মাঝপথেই ম্যাচ হেলে পড়ে আবাহনীর দিকে। তবে শেষ দিকে উত্তেজনা জমিয়ে তুলেন অলক। শেষ দুই ওভারে প্রাইমের ম্যাচ জিততে দরকার ছিল ৩২ রান। সাইফুদ্দিনের ১৯তম ওভার থেকে ছয়-চারে ১৬ তুলেন অলক। কিন্তু শেষ ওভারে গিয়ে আর হয়নি। শহিদুল ইসলামের প্রথম বলটি কোমরের বেশি উচ্চতায় থাকলেও নো বল দেননি আম্পায়ার। পরের দুই বল ডট হওয়ার পর ছক্কা মারেন অলক। বাকি দুই বল থেকে আসে কেবল ১ রান। আট নম্বরে নেমে ১৭ বলে ৩৪ রান করে অলক তখন কেবল আক্ষেপেরই নাম।
১৫১ রানের লক্ষ্যে নেমে সবচেয়ে মূল্যবান উইকেটটি প্রথম ওভারেই হারিয়ে ফেলে প্রাইম। সাইফুদ্দিনের বলে মাত্র ১ রান করে আউট হয়ে যান ছন্দে থাকা ওপেনার রনি তালুকদার।
অধিনায়ক এনামুল হক বিজয় এসে ১ ছয়, ১ চারে আশা জাগালেও তা নিভে যায় দ্রুত। সাইফুদ্দিনের বলে তিনি সহজ ক্যাচ উঠিয়ে ফেরেন ১৩ রান করে। এরপর রকিবুল হাসান, মোহাম্মদ মিঠুন ফেরেন তড়িঘড়ি।
৪৪ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারে পড়া প্রাইম উঠে দাঁড়ানোর মধ্যেই হারায় নাহিদুল ইসলামকেও। ৬৬ রানে ৫ উইকেট পড়ার পর অলকের আগে সাত নম্বরে নামানো হয় নাঈম হাসানকে। রুবেল মিয়ার সঙ্গে জুটি বাধেন তিনি। ওপেন করতে নামা রুবেলের ইনিংস ছিল ম্যাচের পরিস্থিতির বিপরীত। চাহিদা মেটেনি নাঈমের ব্যাটেও।
শেষ পর্যন্ত ৪৩ বলে ৪১ করে ফেরেন রুবেল। নাঈম আউট হন ১৮ বলে ১৯ রান। পরে অলকই হারতে বসা ম্যাচে জমিয়েছিলেন রোমাঞ্চ।
টস জিতে ব্যাট করতে গিয়ে প্রথম বলেই নাঈম শেখের উইকেট হারায় আবাহনী। দ্বিতীয় ওভারে ফেরেন আরেক ওপেনার মুনিম শাহরিয়ার। তিনে নেমে আগের ম্যাচে বড় রান পেয়েছিলেন লিটন দাস। তিনি এবার শুরুটা পেলেও টানতে পারলেন না। ১৩ বলে ১৯ রান করে নাহিদুলের বলে আকাশে ক্যাচ উঠিয়ে থামে তার দৌড়।
এরপর আবাহনীর রান বাড়িয়েছেন মূলত শান্ত আর মোসাদ্দেক। চতুর্থ উইকেটে তারা আনেন ৭০ রান। ৪০ বলে ৪৫ আসে শান্তর ব্যাটে। ৩৯ বলে ৪০ করেন মোসাদ্দেক। দুজনের এই ভিত থেকেই ১৩ বলে ২১ রানের ইনিংস খেলে দলকে দেড়শোতে নিয়ে যান সাইফুদ্দিন।
Comments