রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ব্যর্থতায় হতাশ মাল্টার রাষ্ট্রপতি
রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা পালনের ব্যর্থতায় হতাশা প্রকাশ করেছেন মাল্টার রাষ্ট্রপতি ড. জর্জ ভেল্লা।
শুক্রবার দেশটির রাজধানী ভাল্লেত্তায় রাষ্ট্রপতি ভবন সান এন্টন প্যালেসে মাল্টায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার আসুদ আহমেদের পরিচয়পত্র পেশ অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
মাল্টার রাষ্ট্রপতি গণহত্যা ও নির্যাতনের শিকার মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার সরকারের প্রশংসা করে বলেন, ‘এতে বিদ্যমান সীমাবদ্ধতার মধ্যেও মানবতা রক্ষায় বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে।’
এ সময় হাইকমিশনার আসুদ আহমেদ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমার সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি ও রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রত্যক্ষ ভূমিকা পালনের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে মাল্টা সরকারের সক্রিয় ভূমিকা পালনের অনুরোধ জানান।
বৈঠকে বাংলাদেশ এবং মাল্টার মধ্যে বিদ্যমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক, জলবায়ু পরিবর্তন, রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান, অভিবাসনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এবং আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।
মাল্টার রাষ্ট্রপতি ড. ভেল্লা বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট নিরসনে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকা এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সক্ষম অর্থনৈতিক ভিত্তি বিনির্মাণে বাংলাদেশের প্রশংসা করেন। একইসঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পে মাল্টার কারিগরি সহায়তা এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রস্তাব করেন।
এ ছাড়া, তিনি নিরাপদ ও নিয়মিত অভিবাসন নিশ্চিতকরণে বাংলাদেশের ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন।
রাষ্ট্রপতি ড. জর্জ ভেল্লা সম্প্রতি মাল্টা থেকে অনিয়মিত হয়ে পড়া বাংলাদেশিদের ফেরত নিতে বাংলাদেশ সরকারের আন্তরিক উদ্যোগের সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে বাংলাদেশি পেশাজীবীরা অধিকহারে নিয়মিতভাবে বৈধ কাজের অনুমতি নিয়ে মাল্টায় কর্মসংস্থানের সুযোগ নেবেন বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
হাইকমিশনার আসুদ আহমেদ দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী এভারেস্ট বারতোলোর সঙ্গে তার ফলপ্রসূ আলোচনার বিষয়টি রাষ্ট্রপতিকে জানিয়ে বলেন, ‘দুই দেশ বাংলাদেশ থেকে মাল্টায় দক্ষ ও অর্ধদক্ষ বিভিন্ন পেশাজীবীদের কর্মসংস্থানের জন্য একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে। অচিরেই একটি খসড়া সমঝোতা স্মারক মাল্টা সরকারের বিবেচনার জন্য পাঠানো হবে।’
হাইকমিশনার বলেন, ‘চুক্তিটি স্বাক্ষর হলে বাংলাদেশ যেমন মাল্টার ক্রমবর্ধমান শ্রমিকের চাহিদা পূরণে সহায়তা করতে পারবে তেমনি অবৈধ অভিবাসনের প্রক্রিয়াটিও বন্ধ করা যাবে।’
হাইকমিশনারের আমন্ত্রণের জবাবে রাষ্ট্রপতি জর্জ ভেল্লা সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আশা ব্যক্ত রাখেন এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীকে তার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানান।
Comments