‘দুর্নীতি, অনিয়মের ঢালাও অভিযোগ গ্রহণযোগ্য নয়’ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে সংসদে হইচই

স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স নিয়োগ না হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বক্তব্যের প্রতিবাদে সংসদে হইচই হয়েছে।
সংসদ ভবন
ফাইল ফটো

স্বাস্থ্যখাতের বিভিন্ন অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা, প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স নিয়োগ না হওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের বক্তব্যের প্রতিবাদে সংসদে হইচই হয়েছে।

বিএনপি এবং জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে এমপিদের তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

আজ সংসদে বাজেট পাসের সময় মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সম্পর্কিত ৫৯টি মঞ্জুরি দাবির তিনটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ নিয়ে আলোচনা হয়। এগুলো হলো আইন মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ।

জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের সদস্যরা ছাটাই প্রস্তাবের ওপর তাদের বক্তব্য দেন।

স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের ছাঁটাই প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার সময় জাতীয় পার্টির পীর ফজলুর রহমান বলেন, ‘কতবার ডিও লেটার দেবো? আমার এলাকার হাসপাতালে অ্যাম্বুলেন্স নেই, ডাক্তার কবে পাবো? এক্সরে মেশিন কবে পাবো? রেডিওলজিস্ট কবে পাবো? স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে যতবার বলি উনি ডিও লেটার দিতে বলেন। কতবার দেবো?’

মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ দাবি সম্পর্কে পীর ফজলু বলেন, ‘চলমান বরাদ্দের টাকাই খরচ করতে পারেননি। আবার বরাদ্দ চেয়েছেন।’

জাতীয় পার্টির শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় টাকা খরচ করতে পারেনি। ফেরত দিয়েছিল। এটা আমরা চাই না। খরচ করতে না পারলে এখানে ৩৫০ জন এমপিকে ভাগ করে দেন। আমরা খরচ করি। স্বাস্থ্য সেবা আমরা দেখবো। আপনাদের দরকার নেই। ডাক্তার-নার্স নিয়োগ করতে পারছেন না। ৩৫০ এমপিকে দায়িত্ব দেন। আমরা নিয়োগের ব্যবস্থা করি।’

বিএনপির হারুনুর রশীদ বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাত সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতি দূর করতে হলে ডালপালা কেটে লাভ নেই। গাছের শেকড় উপড়ে ফেলতে হবে। স্বাস্থ্যের কেনাকাটায় ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। দুর্নীতি নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই।’

এছাড়া বিএনপির মোশাররফ হোসেন, জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী, মুজিবুল হক চুন্নুও স্বাস্থ্যের বিভিন্ন অনিয়ম তুলে ধরেন। করোনাভাইরাসের টিকার অপ্রতুলতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন বিরোধী দলের সদস্যরা।

জবাবে স্বাস্থ্যখাতের দুর্নীতি, অনিয়মের বিষয়ে ঢালাও অভিযোগ ‘গ্রহণযোগ্য নয়’ বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সংসদকে জানান।

বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদেরকে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের কথা বলেন।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এক পর্যায়ে বিরোধী দলের সদস্যেদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা হাসপাতালের চেয়ারম্যান। আপনাদের দায়িত্ব আছে। আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে।’

তার এই মন্তব্যের পর বিরোধী দলের বেঞ্চ থেকে হইচই হয়। স্বাস্থ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্যের বিরোধিতা করেন জাতীয় পার্টি ও বিএনপির এমপিরা।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী একটু থেমে গেলে সামনে বসা তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী তাকে বক্তব্য চালিয়ে যেতে ইশারা করেন।

মন্ত্রী বলেন, ‘স্বাস্থ্যখাতে এক বছর ধরে সব বন্ধ। কেউ বাড়িতে যেতে পারছে না। তারা কাজ করছে। কাজ করছে বলেই আপনারা সুস্থ আছেন। কেউতো বাইরেও যেতে পারছেন না।’

মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম ও দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ প্রসঙ্গে জাহিদ মালেক বলেন, ‘সুনির্দিষ্ট করে বলতে হবে। ঢালাওভাবে অনিয়মের কথা বললে গ্রহণযোগ্য হবে না। সুনির্দিষ্ট বলতে হবে কোথায় দুর্নীতি হয়েছে?’

এসময় বিরোধী দলের দিকে থেকে আবার হইচই হলে মন্ত্রী বলেন, ‘মাস্কের কোনো টাকাইতো দেওয়া হয়নি। সুনির্দিষ্ট করে বলতে হবে। ঢালাওভাবে বললে হবে না।’

এ পর্যায়ে আবারও হইচই হলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিরোধী দলের সদস্যদের ছাঁটাই প্রস্তাব গ্রহণ করা হবে না বলে জানান।

Comments

The Daily Star  | English

Houses for homeless: A project destined to fall into ruin

At least a dozen homes built for the homeless and landless on a river island in Bogura’s Sariakandi upazila have been devoured by the Jamuna while dozens of others are under threat of being lost.

5h ago