বাংলাদেশের চাই ৭ উইকেট, জিম্বাবুয়ের টিকে থাকার কঠিন চ্যালেঞ্জ

Brandon Taylor
ছবি: জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট

বাংলাদেশের চাপানো বিশাল রান তাড়া করার লক্ষ্য নিশ্চয়ই জিম্বাবুয়ের ছিল না। এই ধরণের পরিস্থিতিতে চার সেশন ব্যাট করে ড্রর চেষ্টাই থাকে সেরা বিকল্প। এমন পরিস্থিতিতে অধিনায়ক ব্র্যান্ডন টেইলর খেললেন টি-টোয়েন্টি মেজাজে, তাকুদজাওয়ানশে কাইটানো আবার তার ঠিক বিপরীত নিলেন টিকে থাকার ব্রত। অদ্ভুত সমন্বয়ে অস্বস্তি দেওয়া এই দুজনকেই শেষ বিকেলে তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। হারারে টেস্টে বড় জয় পাওয়া এখন মুমিনুল হকদের জন্য অনেকটা সময়ের ব্যাপার।

৪৭৭ রানের লক্ষ্যে নেমে চতুর্থ দিন শেষে ৩ উইকেটে ১৪০ রান করেছে জিম্বাবুয়ে। ৭৩ বলে ৯২ করে ফিরেছেন টেইলর। ১০০ বলে ৭ করে বিদায় নিয়েছেন কাইটানো। ১৮ রান নিয়ে ডিওন মেয়ার্স আর ৭ রান নিয়ে খেলছেন ডোনান্ড টিরিপানো।

শনিবার হারারেতে ঘটনাবহুল চতুর্থ দিনে দুদল মিলিয়ে সেঞ্চুরি হয়েছে দুটি, হতে পারত আরেকটি। অর্থাৎ উইকেট এখনো ব্যাট করার জন্য বেশ ভালো। তবে অনভিজ্ঞ জিম্বাবুয়ের ব্যাটিং লাইনআপ বেশ নড়বড়ে। যিনি হতে পারতেন বিপদের কারণ সেই টেইলর ধৈর্য ধরে টিকে থাকার পথে না গিয়ে মেরে খেলে বিনোদন দিয়ে সেরেছেন দায়।

দলের ১৫ রানে ওপেনার মিল্টন শুম্বা তাসকিন আহমেদের বলে স্লিপে ক্যাচ দিলে ক্রিজে এসেছিলেন টেইলর। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে কাইটানোকে নিয়ে গড়েন ৯৪ রানের জুটি। যাতে ৯২ রান একারই তার। জুটিতে কাইটানোর অবদান ৭৮ বলে ২!

টেইলরের ৯২ রানও এসেছে মাত্র ৭৩ বলে। ফিফটি করেছেন মাত্র ৩৩ বলে। মনে হচ্ছিল টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমেছেন তিনি। সারাক্ষণই ছিলেন স্কোরিং শটের খুঁজে। তাসকিন, সাকিব, মিরাজ, ইবাদত হোসেনদের বল থেকে তা আদায়ও করেছেন দারুণভাবে।

দেখার মতো কাভার ড্রাইভ, লফটেড স্ট্রেট ড্রাইভ, পুল, আপার কাট, সুইপ , রিভার্স সুইপ- বাহারি শটের যেন পসরা মেলে ধরেছিলেন তিনি। টেইলরের এমন আগুনে মেজাজে খানিকের জন্য তালগোল পাকিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।

তবে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও একদম কাছে গিয়ে হাতছাড়া করলেন সেঞ্চুরি। সেবার ৮১ রান করে মিরাজের বলে উইকেট বিলিয়ে দিয়েছিলেন  বাজে শটে। ৯২ রান করে এবারও তাই। মিরাজের অতি সাধারণ এক বল এগিয়ে এসে খেলতে গিয়ে ক্যাচ দেন বোলারের হাতেই। সেঞ্চুরি হলে নিজ দেশের হয়ে টেস্টে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড হয়ে যেত, রেকর্ড হতে পারত বাংলাদেশের বিপক্ষে দ্রুততম সেঞ্চুরিরও।

টেইলরের একদম ১৮০ ডিগ্রি বিপরীতে ছিলেন কাইটানো। তার একটাই ব্রত ছিল- ঠেকাও। ৩৯ বলে গিয়ে তিনি পান প্রথম রানের দেখা। অবশ্য ২ রানেই থামতে পারত তার দৌড়। মিরাজের বলে পুল করতে গিয়ে লোপ্পা ক্যাচ দিয়েছিলেন । ইবাদত সেই ক্যাচটা কীভাবে ফেলে দিলেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন।

সেই কাটানোর লড়াই থামান সাকিব। ১০২ বল খেলে ৭ করা করা এই ওপেনার সাকিবের আর্ম বল ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে পায়ে লাগান। এলবিডব্লিউর  আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। যদিও রিপ্লে দেখে মনে হয়েছে বল লেগ স্টাম্প মিস করে যাচ্ছিল। কিন্তু রিভিউ না থাকায় পুড়তে হয় জিম্বাবুয়েকে।

১৩২ রানে তারা হারায় তৃতীয় উইকেট। এরপর দিনের বাকিটা সময়  পার করে দেন টিরিপানো-মেয়ার্স।

শেষ দিনে হাতে থাকা ৭ উইকেট নিয়ে তিন সেশন টিকে থাকার কঠিন পরীক্ষা দিতে হবে স্বাগতিকদের। ম্যাচের এই পরিস্থিতিতে বলা যায় হারারে টেস্ট এখন অনেকটাই বাংলাদেশের পকেটে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

(চতুর্থ দিন শেষে)

বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৪৬৮

জিম্বাবুয়ে প্রথম ইনিংস: ২৭৬

বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংস:   ২৮৪/১ (ইনিংস ঘোষণা)

জিম্বাবুয়ে দ্বিতীয় ইনিংস : ৪০ ওভারে ১৪০/৩ (লক্ষ্য ৪৭৭)   (শুম্বা ১১, কাইটানো ৭, টেইলর ৯২, মেয়ার্স ১৮*, টিরিপানো ৭* ;  সাকিব ১/২৩, মিরাজ ১/৪৫, তাসকিন ১/৩৯, ইবাদত ০/১৯, মাহমুদউল্লাহ ০/৯)

 

Comments

The Daily Star  | English

US officials preparing for possible strike on Iran in coming days, Bloomberg reports

Iran and Israel continue to attack each other on Wednesday night, as Donald Trump weighs US involvement

10h ago