লঞ্চে যাত্রী বেশি, ভাড়াও বেশি
করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করতে গণপরিবহনে ধারণক্ষমতার অর্ধেক যাত্রী নেওয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না লঞ্চে। অথচ, বর্ধিত ৬০ শতাংশ ভাড়া ঠিকই আদায় করা হচ্ছে। আজ শুক্রবার মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা লঞ্চ ঘাটে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, আজ দুপুর ১২টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া প্রান্ত থেকে রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ঘাটের উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে ১০টি লঞ্চ। এসব লঞ্চের ধারণক্ষমতা অনুযায়ী এক শ থেকে ১৯০ জন যাত্রী নেওয়ার মতো। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী, মহামারিকালে অর্ধেক হিসেবে একটি লঞ্চে যাত্রী নেওয়ার কথা আকারভেদে ৫০ থেকে ৯৫ জন করে। আর ৬০ শতাংশ বর্ধিত হিসাবে ভাড়া আদায় করার কথা ২৫ টাকার পরিবর্তে ৪০ টাকা।
কিন্তু, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে চলাচলরত লঞ্চে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে বেশি। অথচ, যাত্রীদের কাছ থেকে ঠিকই বর্ধিত ভাড়া আদায় করা হচ্ছে।
বেলা ২টা ৫মিনিটে পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় লঞ্চ ‘তাজমহল’। ১২৭ আসনের বিপরীতে যাত্রী ওঠানোর কথা সর্বোচ্চ ৬৫ জন। কিন্তু, লঞ্চটিতে যাত্রী ওঠানো হয়েছে প্রায় দেড় শ। এই সময়ের মধ্যে পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সবগুলো লঞ্চেই নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী বহন করে।
রাজবাড়িগামী যাত্রী সাদেক হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে বাসে পাটুরিয়া আসলাম ৬০ শতাংশ বেশি ভাড়া দিয়ে। আবার লঞ্চে উঠলাম ২৫ টাকার ভাড়া ৪০ টাকা দিয়ে। বাসে যাত্রী একটু কমই ছিল। কিন্তু, লঞ্চে তো যাত্রী বেশি। তাহলে ভাড়া বেশি নিচ্ছে কেন? এটা দেখবে কে?’
পাটুরিয়া লঞ্চঘাটের সুপারভাইজার পান্না লাল নন্দী ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে ৩৩টি লঞ্চ চলাচল করছে। এর মধ্যে পাটুরিয়ার ২৫টি ও আটটি চলে আরিচায়। করোনার কারণে দীর্ঘদিন লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকার পর গত দুই দিন ধরে আবার চলছে। আমরা চেষ্টা করছি, সরকারি বিধি-নিষেধ মেনে চলতে। অনেক সময় যাত্রীরা আমাদের কথা শোনেন না। একটু আগে যাওয়ার জন্যে তারা লঞ্চে উঠে পড়েন। পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়ায় যাত্রী একটু বেশি উঠলেও দৌলতদিয়া থেকে পাটুরিয়ায় আসার পথে যাত্রী খুবই কম।’
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথের পাটুরিয়া প্রান্তে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কিছুটা বাড়ছে। ঢাকা থেকে যাত্রীরা যেমন দক্ষিণ অঞ্চলের জেলাগুলোতে যাচ্ছেন, তেমনি ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপও রয়েছে। বিশেষ করে পশুবাহী ট্রাক রাজবাড়ির দৌলতদিয়া ঘাট হয়ে ঢাকা অভিমুখে যাচ্ছে। সে কারণে দৌলতদিয়া ঘাটে পশুবাহী গাড়ির দীর্ঘ লাইন রয়েছে।
তবে, ১৫টি ফেরি সচল থাকায় ফেরি চলাচলে কোনো সমস্যা হচ্ছে না বলে ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) মো. জিল্লুর রহমান।
Comments