অবিক্রীত পশু নিয়ে তারা ফিরে যাচ্ছেন

ছবি: হেলিমুল আলম

এবার ১৬টি গরু নিয়ে ধুপখোলা হাটে নামার সময় গত বছরের লাভের কথা ভেবে মোহাম্মদ আজগর আলী বেশ আনন্দিত ছিলেন। কিন্তু, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার সেই উদ্দীপনা মিলিয়ে গেছে। কারণ বেশিরভাগ গরু লোকসানে বিক্রি করতে হয়েছে। অবিক্রীতও থেকে গেছে কয়েকটি।

ঝিনাইদহ থেকে আসা এই গরু ব্যবসায়ী বলেন, ‘এগারোটি গরু বিক্রি করে আমার তিন লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। তাই বাকিগুলো বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি।’

আজ ঈদের সকালে আজগরের সঙ্গে যখন কথা হচ্ছিল, তখন তিনি অবিক্রীত গরুগুলো ট্রাকে তোলার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। করোনা মহামারির মধ্যে এবারের কোরবানির মৌসুমে বিক্রি নিয়ে হতাশ এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘ফিরিয়ে নিয়ে গেলে আমার গরুপ্রতি লোকসান হবে ১০ হাজার টাকা করে। আর যদি এখানে বিক্রি করি তাহলে প্রতি গরুতে লোকসান হবে ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা।’

আজগরের কাছ থেকে জানা গেল, ঢাকা শহরের সবগুলো হাটের চিত্র মোটামুটি একই রকম। তার মতো অনেক ব্যবসায়ী বেশি লোকসানের ভয়ে এমনভাবে ট্রাকে করে ডজন ডজন অবিক্রীত গরু নিয়ে বাড়ির পথ ধরেছেন।

আজগর জানান, তিনি ভেবেছিলেন এবার কোরবানির মৌসুমে দেশে পশুর সংকট হবে। তাই বিক্রির জন্য আগেভাগে অতিরিক্ত কিছু গরু কিনে রেখেছিলেন। কিন্তু তার এই ধারণা ছিল ভুল। হাটে পশুর তুলনায় ক্রেতা ছিল কম।

একই হাট থেকেই ইসমাইল হোসেন নামের আরেক ব্যবসায়ী তার চারটি গরু ফিরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবচেয়ে বড় গরুর ওজন প্রায় ২২ মণ। এটার জন্য শুরুতে আমি ১৪ লাখ টাকা চেয়েছিলাম।  কিন্তু, শেষ পর্যন্ত যে অবস্থা দাঁড়ালো, তাতে আমি এটা সাড়ে চার লাখ টাকায় ছেড়ে দিতে রাজি ছিলাম। এর পরেও আমি গরুটি বিক্রি করতে পারিনি।’

যদিও শেষ পর্যন্ত ইসমাইল তার গরুগুলো উপযুক্ত দামে মাংস ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

আজগর ও ইসমাইলের মতো সাইফুল ধুপখোলা হাটে গরু এনেছিলেন ১৫টি। এর মধ্যে পাঁচটি বিক্রি হয়নি। বাকি ১০টি বিক্রি করেছেন পাঁচ লাখ টাকা লোকসানে।

ব্যবসায়ীদের মতে, মহামারি এবং এর অভিঘাতজনিত কারণে এবার অনেকে কোরবানি দেননি। এমনকি ভাগেও না।

এমন একজন ব্যক্তি হচ্ছেন গেণ্ডারিয়া এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ সোহেল। পেশায় ব্যবসায়ী সোহেল প্রতি বছর কোরবানি দেন। কিন্তু, করোনার কারণে আর্থিক দুরবস্থায় পড়ে এবার সেই সঙ্গতি হয়নি তার।

প্রাণীসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রতি বছর দেশে গড়ে এক কোটি ১৯ লাখ পশু লালন-পালন করা হয়। গত বছরেও দেশে এক কোটি এক লাখের বেশি পশু কোরবানি হয়েছিল।

প্রতিবেদনটি ইংরেজি থেকে অনুবাদ করেছেন মামুনুর রশীদ

Comments

The Daily Star  | English

Bangladeshi migrants in Malaysia: Dhaka’s uphill battle to break syndicate chains

Now, as Malaysia prepares to begin fresh labour recruitments, opening the market to Bangladeshis and ensuring migrants' rights will figure high in the upcoming meetings.

13h ago