গানে প্রতিনিয়ত ‘রাজনীতি’র শিকার হই: কোনাল

সোমনূর মনির কোনালের সংগীতে অভিষেক হয়েছিল গানের প্রতিযোগিতা দিয়ে। নিজের মেধা-মনন দিয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন গানের ভুবনে।
কোনাল

সোমনূর মনির কোনালের সংগীতে অভিষেক হয়েছিল গানের প্রতিযোগিতা দিয়ে। নিজের মেধা-মনন দিয়ে আলাদা জায়গা করে নিয়েছেন গানের ভুবনে।

২০০৯ সালে চ্যানেল আই 'সেরা কণ্ঠ' প্রতিযোগিতার বিজয়ী কণ্ঠশিল্পী তিনি। তারপর গানের পথে তার শুধু এগিয়ে যাওয়ার গল্প রচিত হয়েছে।

আধুনিক গানের পাশাপাশি সিনেমার প্লেব্যাকে বেশকিছু শ্রোতাপ্রিয় গান উপহার দিয়েছেন তিনি। নিজের গান জীবনের ভ্রমণ, বর্তমান গানের ব্যস্ততা, আগামীর পরিকল্পনা, গানের রাজনীতি নিয়ে অকপট দ্য ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

একজন কণ্ঠশিল্পী হিসেবে নিজেকে নির্দিষ্ট কোনো ঘারানায় বন্দি রাখতে চান? নাকি সব ধরনের গানে নিজেকে ছড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে?

আমি হিন্দুস্থানি ক্ল্যাসিক্যাল সংগীত শিখেছি। সেটার চর্চা করছি, করি। সেই কারণে সেমি ক্ল্যাসিক্যাল সংগীত মেলোডিয়াস, সফট রোমান্টিক গান গাইতে বেশি ভালোবাসি। একজন প্লেব্যাক শিল্পী হিসেবে সব ধরনের গান গাইতে হয়। আমি চেষ্টা করি সব ধরনের গান গাইতে। তাই অনেকেই আমাকে ভার্সেটাইল শিল্পী বলে। কিছু টেলিভিশন অনুষ্ঠানে আমার গাওয়া লোক গান শ্রোতাদের পছন্দ হয়েছে। সেই গানগুলোর ইউটিউবে লাখ লাখ ভিউ আছে। তাই, আমি সব ধরনের গান গাইতে পছন্দ করি।

নিজের গাওয়া কোন গানগুলো গুনগুন করেন নিজের মধ্যে? কোন গানটার পর সংগীত জীবনের অনেককিছু বদলে গেল?

বেশিরভাগ সময় অন্যের গান শোনা হয় আমার। প্রিয় শিল্পীদের ভালো লাগা গানগুলো শুনি। সেগুলোই গুনগুন করি। তবে নিজের গানগুলোর মধ্যে আমার ভীষণ প্রিয় 'ঘুম জড়ানো' ও 'ভুল'।

পাসওয়ার্ড সিনেমার 'আগুন লাগাইলো' গানটি আমার জীবনের অনেককিছু বদলে দিয়েছে। এই গানটির মাধ্যমে দর্শকরা আমাকে পছন্দ করেছেন। নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করেছি। সাধারণ শ্রোতাদের কাছে পৌঁছেছি। এই গানটি তাই আমার কাছে অনেক প্রিয়।

সংগীত-জীবনে টার্নিং পয়েন্টেগুলো কী কী?

আমার সংগীত-জীবনের টার্নিং পয়েন্ট হলো সেরাকণ্ঠে অংশগ্রহণ। এই প্রতিযোগিতা দিয়েই আমার সংগীতের জীবন বদলে গিয়েছিল। একজন শিল্পী হিসেবে শ্রোতাদের কাছে তখন থেকেই কমিটেড হয়েছি। এ ছাড়া, 'মন', 'খোদা জানে', 'ঘুম জড়ানো', 'আগুন লাগাইলো' গানগুলো সংগীত জীবনে এক একটা টার্নিং পয়েন্ট।

দীর্ঘদিন গানের বড় কোনো কনসার্ট নেই। দর্শকের হাততালির সঙ্গে সেভাবে আর দেখা হচ্ছে না। এটি আপনার কতোটা মন খারাপ করে?

আমার অনেক খারাপ লাগে। কী যে খারাপ লাগে তা বোঝাতে পারবো না। স্টেজে উঠার আগের মুহূর্তে উপস্থাপক যখন নাম ডাকেন আর নাম শুনে যখন দর্শকরা হাততালি দেন, চিৎকার করেন তখন অন্যরকম শক্তি, ভালো লাগা জড়িয়ে থাকে। এখন সেটা অনেক মিস করি। দর্শকরা যখন আমার সঙ্গে আমার গাওয়া গান চীৎকার করে গান, নাচেন তখন অন্য রকম অনুভূতি হয়। আমার প্রিয় স্টেজ, ভালো লাগা দর্শকদের মিস করছি।

সংগীতে এক ধরনের 'রাজনীতি' হয় সেটা কী বিশ্বাস করেন? নাকি সংগীতেই বিশ্বাস করেন? 

আমি সংগীতেই বাঁচি, সংগীতেই শান্তি খুঁজি। এটা আমার জীবনদর্শন। সবসময় এটাই বিশ্বাস করি। শিল্প-সংগীত জগতে 'রাজনীতি' চলে না। জ্ঞানহীন আর হীনমন্যতায় ভোগারা এমন করেন। সংগীতে 'রাজনীতি'র শিকার হই প্রতিনিয়ত। আমিও এমন 'রাজনীতি'র শিকার হয়েছি বহুবার।

এবারো ঈদের একটা নাটকের গানের জন্য এক তারকাশিল্পী সংগীত পরিচালককে ফোন করে জেরা করেছেন, কেন গানের জন্যে তাকে না নিয়ে আমাকে নেওয়া হলো। শুধু আমার সঙ্গেই না, অন্য অনেকের সঙ্গেও এমন হয়। এমন ব্যাকডেটেড রাজনীতি করলে আমার কিছুই আসে-যায় না।

আমি ২০০৯ সাল থেকে কোটি দর্শকের সম্মান পাওয়া এক শিল্পী। তখন থেকেই প্লেব্যাক করছি। এক যুগ ধরে দর্শকের ভালোবাসা নিয়ে গান গাইছি। এমন রাজনীতির জবাব আমার দর্শকরাই দেন। আমি ভালো গান গেয়ে যাই। ভালো কাজ করি। মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করি।

নতুন গানের কথা বলেন। আগামীতে কী গান শুনতে পাবেন আপনার শ্রোতারা?

ঈদে আমার ইউটিউব চ্যানেলে আমার খুব প্রিয় একটা গান 'লা ভি অঁ রোজ' প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া, চারটি নাটকের গান এসেছে। সামনে অনেকগুলো সিনেমার গান মুক্তি পাবে। কিছু দ্বৈত গান গেয়েছি সেগুলো মুক্তির অপেক্ষায়।

আমার নিজের গাওয়া কয়েকটি গান রেকর্ড করা আছে। করোনা মহামারির কারণে ভিডিও শুট করতে পারছি না। এই গানগুলো মুক্তির অপেক্ষায় আছে।

Comments

The Daily Star  | English

Where should I invest my money?

Amid persistently higher inflation in Bangladesh for more than a year, the low- and middle-income groups are struggling to meet their daily expenses.

13h ago