রাজবাড়ীতে পদ্মার ভাঙনে আতঙ্কে স্থানীয়রা

গোদার বাজার ভাঙন কবলিত এলাকা। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ীতে পদ্মার তীরে ভয়াবহ ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে নদী রক্ষায় ব্যবহৃত কয়েক হাজার সিসি ব্লক। দুই মাসের ব্যবধানে দুইশ গজের মধ্যে তিন জায়গায় ভাঙন দেখা গেছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন স্থানীয়রা।

গতকাল সন্ধ্যা থেকে আবার ভাঙন শুরু হয় এবং আজ বুধবারও তা অব্যাহত আছে। সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, রাজাবাড়ীর গোদার বাজার এলাকার প্রায় দুইশ মিটার পদ্মায় বিলীন হয়ে গেছে। নতুন করে আরও চারটি স্পটে ফাটল দেখা দিয়েছে। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। আতঙ্কে আছে বহু পরিবার। ব্লক ধসে যাওয়ার খবর শুনে তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত জায়গায় নতুন করে জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

নদীর প্রকৃতি ও আচরণে সিমেন্টের ব্লক, জিও ব্যাগ কোনো কাজে আসবে না বলে জানান অনেকেই।

স্থানীয় বাসিন্দা আলামিন জানান, নদীর গভীরতা অনুসারে সাইড ওয়াল হয়নি, ব্লক ডাম্পিং যে অনুসারে করা হয় সেটা হলে এই ভাঙন হতো না। প্রয়োজন ছিল ঘূর্ণায়মান এলাকায় স্পার্ক করে বড় ব্লক দেওয়া।

দুই মাসের ব্যবধানে দুইশ গজের মধ্যে তিন জায়গায় ভাঙন দেখা গেছে। ছবি: সংগৃহীত

রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর আহাদ বলেন, 'প্রকল্প বাস্তবায়ন করাই শুধু আমাদের কাজ। নদীর গতিবিধি, মাটির ধরন সবকিছু পরীক্ষা করেই প্রকল্প তৈরি এবং বাজেট করা হয়। প্রকল্পে ত্রুটি আছে। এখানে উচিত ছিল কোনো কোনো জায়গায় স্পার্কিং করে ঘূর্ণায়মান অংশে ব্লক দেওয়া।'

তিনি আরও বলেন, 'এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০১৭ সালে। তিনশ কোটি টাকা ব্যয়ে আট কিলোমিটারের মতো নদী খনন ও সাড়ে চার কিলোমিটার নদী তীরে ব্লক বসানো এবং পরে ৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে আড়াই কিলোমিটার নদী তীর সংরক্ষণের কাজ শুরু হয়। কাজটি খুলনা শিপইয়ার্ড পেলেও তারা সেটি ডিবিএল নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে হস্তান্তর করে। ২০২০ সালে কাজটি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে শেষ হয়নি। ইতোমধ্যে ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে।'

স্থানীয়দের অভিযোগ, শহর রক্ষা বাঁধের কাজে ত্রুটি আছে। ফলে গোদার বাজারের একটু উজানে নদীর ডান তীরের প্রতিরক্ষা ব্লক দুই মাস না যেতেই তিনটি স্থানে ধসে গেছে। কর্তৃপক্ষ শুধু বর্ষা মৌসুম এলেই কাজ করে। শুষ্ক মৌসুমে কাজ করলে এই ক্ষতি হতো না।

তারা আরও জানান, যেভাবে ধস শুরু হয়েছে, দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত জায়গা সংস্কার না করলে এলাকার অনেক বাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। রাজবাড়ী শহর পড়বে হুমকিতে।

নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুর আহাদ আরও বলেন, 'পানির ঘূর্ণনে ডাম্পিং সরে গিয়ে হয়তো এ ঘটনা ঘটেছে। খবর পাওয়ার পর দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে স্টকের জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধে ডাম্পিংয়ের কাজ শুরু হয়েছে।'

Comments

The Daily Star  | English

DU JCD leader stabbed to death on campus

Shahriar Alam Shammo, 25, was the literature and publication secretary of the Sir AF Rahman Hall unit of Jatiyatabadi Chhatra Dal

2h ago