প্রবাসীদের উদ্যোগে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আসছে আরও ৩১২ ভেন্টিলেটর

american_doctor1_18aug21.jpg
(উপরের সারিতে বা থেকে) কার্ডিওলজিস্ট প্রফেসর ডা. চৌধুরী হাফিজ আহসান, নেফ্রলজিস্ট প্রফেসর ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক, কার্ডিওলজিস্ট প্রফেসর ডা. মাসুদুল হাসান, (নিচের সারিতে বা থেকে) সাবেক সিনিয়র ইউএন অফিসিয়াল মাহমুদ উস শামস চৌধুরী, প্রফেসর ডা. ফাতিমা আহমেদ ও ডা. আরিফুর রহমান।

করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় যুক্তরাষ্ট্র থেকে আরও ৩১২টি ভেন্টিলেটর দেশে আসছে। ভেন্টিলেটরগুলো বহনকারী কাতার এয়ারওয়েজের ফ্লাইটটি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১৮ আগস্ট সকাল ৭টা ২৫ মিনিটে ছেড়ে দোহা হয়ে ২০ আগস্ট মধ্যরাতে ঢাকায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছাবে। নিউ ইয়র্ক থেকে প্রফেসর ডা. মাসুদুল হাসান টেলিফোনে দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কার্ডিওলজিস্ট প্রফেসর ডা. মাসুদুল হাসান, নেফ্রলজিস্ট প্রফেসর ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক, প্রফেসর ডা. ফাতিমা আহমেদ, কার্ডিওলজিস্ট প্রফেসর ডা. চৌধুরী হাফিজ আহসান, জাতিসংঘের সাবেক কর্মকর্তা মাহমুদ উস শামস চৌধুরী এবং কানাডা প্রবাসী ডা. আরিফুর রহমানের উদ্যোগে এই ভেন্টিলেটরগুলো দেশে আসছে।

বিমানবন্দরে ভেন্টিলেটরগুলো গ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এবিএম আবদুল্লাহ। এ ছাড়া, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

ডা. এবিএম আবদুল্লাহ ডেইলি স্টারকে বলেন, '২০ আগস্ট ভেন্টিলেটরগুলো ঢাকায় পৌঁছাবে। আমি বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে ভেন্টিলেটর গ্রহণ করবো। এর আগেও যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমরা ভেন্টিলেটর পেয়েছি। সেগুলো বিভিন্ন জায়গা বিতরণ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের ভেন্টিলেটর পরিচালনার প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়েছে।'

এই ৩১২টি ভেন্টিলেটর সংগ্রহ করেছেন ওই ছয় প্রবাসী বাংলাদেশি। এই উদ্যোগে টিম লিডার হিসেবে কাজ করেছেন প্রফেসর ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক ও প্রধান সমন্বয়কারী প্রফেসর ডা. মাসুদুল হাসান। ভেন্টিলেটরগুলো মিনেসোটার ইউনাইটেড হেলথ কেয়ার কোম্পানি ও এনজিও অপসিনির সৌজন্যে পাওয়া গেছে। টিম লিডার প্রফেসর ডা. জিয়াউদ্দিন আহমেদ সাদেক এগুলো সংগ্রহ করেন। আমেরিকার তৈরি সম্পূর্ণ নতুন ভেন্টিলেটরগুলোর প্রতিটির দাম প্রায় ১৫ হাজার ডলার। বাংলাদেশের শুধু পরিবহন খরচ বাবদ প্রতিটিতে ১০০ ডলার করে ব্যয় হবে। এগুলো অত্যন্ত মানসম্পন্ন ও আকারে ছোট, যা খুব সহজে বহন করা যায়।

বাংলাদেশি চিকিৎসকরা এর আগেও বিনামূল্যে ভেন্টিলেটর পাঠানোর ব্যবস্থা করেছেন। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারাই উদ্যোগ নিয়ে এর আগে মোট ৩৭৭টি ভেন্টিলেটর বাংলাদেশে পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে ১২৭টি বারডেম হাসপাতালকে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশে করোনা মহামারি প্রকোট আকার ধারণ করেছে। সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিনই। হাসপাতালগুলো পূর্ণ, আইসিইউতে শয্যা পাওয়া কঠিন। দেশের এমন পরিস্থিতিতে ভেন্টিলেটর ও টিকা পাঠাতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন এই প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

ভারত ভ্যাকসিন রপ্তানি বন্ধ করে দেওয়ার পরে আমেরিকা থেকে কোভ্যাক্সের আওতায় প্রথমে মডার্নার ২৫ লাখ ও পরে আরও ৩০ লাখ এবং ফাইজারের এক লাখ ছয় হাজার ডোজ টিকা বাংলাদেশে আসার নেপথ্যেও ছিল তাদের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবদান।

আজ বুধবার প্রফেসর ডা. মাসুদুল হাসান দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, কোভ্যাক্সের আওতায় তারা যুক্তরাষ্ট্র ও সুইডেন থেকে বাংলাদেশের জন্য আরও ভ্যাকসিন সংগ্রহের চেষ্টা করছেন।

সুইডিশ গবেষণা প্রতিষ্ঠান হোল্ডিং এবি (আইএসআর) উৎপাদিত নাজাল ভ্যাকসিনের গবেষণা ও উন্নয়নের তৃতীয় এবং চূড়ান্ত ট্রায়াল আগামী মাসে বাংলাদেশে শুরু হবে। নাজাল ভ্যাকসিন ও কোভ্যাক্সের আওতায় ভ্যাকসিন তদারকিতে ডা. আরিফুর রহমান বর্তমানে সুইডেনে অবস্থান করছেন। তিনি টেলিফোনে ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যে উদ্দেশ্যে সুইডেনে অবস্থান করছি আশা করি তা সফল হবে এবং অল্প সময়ের মধ্যে আরও বড় সুখবর জানাতে পারবো।'

Comments

The Daily Star  | English

Life insurers mired in irregularities

One-fourth of the life insurance firms in the country are plagued with financial irregularities and mismanagement that have put the entire industry in danger.

7h ago