হরিরামপুরে সিমেন্টের খুঁটির ওপর বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকিপূর্ণ চলাচল

সিমেন্টের খুঁটির ওপর বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন গ্রামের মানুষেরা। ছবি: স্টার

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে সিমেন্টের খুঁটির ওপর বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন নদীর উত্তর পাড়ের সাত গ্রামের মানুষ। নদী পারাপারের বিকল্প পথ না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে তাদের।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৭ সালে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিপি) অর্থায়নে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার খলিলপুর এলাকায় ইছামতি নদীর ওপর সিমেন্টের খুঁটির ওপর কাঠের পাটাতন দিয়ে সেতুটি তৈরি করে উপজেলা পরিষদ। কিন্তু, দুই বছরের মাথায় কাঠের পাটাতনগুলো নষ্ট হয়ে গেলে ওই এলাকার মানুষের চলাচলে মারাত্মক অসুবিধা হচ্ছিল। পরে, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে সিমেন্টের খুঁটির উপর বাঁশ ফেলে সাঁকো তৈরি করা হয়।

স্থানীয় চালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুল আলম বিশ্বাস শিরু দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ইছামতি নদীর উত্তর পাড়ে সাতটি গ্রাম অবস্থিত। সেগুলো হলো—খলিলপুর, আগ্রাইল, সট্টি, পশ্চিম চালা, লাওতা, সুলতানপুর ও খাবাশপুর। আর নদীর দক্ষিণ পাড়ে রয়েছে যাত্রাপুর হাইস্কুল, যাত্রাপুর বাজার, খেলার মাঠ, বিচারপতি নুরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, হরিরামপুর থানাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। সেকারণে বাধ্য হয়েই উত্তর পাড়ের সাতটি গ্রামের মানুষকে চলাচল করতে হয় এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে। আমি প্রতিবছরই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বরাদ্দ দিয়ে বাঁশের সেতুটি সচল রেখেছি। তবে, এখানে একটি সেতু নির্মাণ করা খুবই দরকার।'

সিমেন্টের খুঁটির ওপর বাঁশের সাঁকোতে ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করছেন গ্রামের মানুষেরা। ছবি: স্টার

৬৮ বছরের আয়েশা বেগম বলেন, 'আমাদের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ আমরা এই বাঁশের সাঁকোর ওপর দিয়ে যাওয়া-আসা করি। আধঘণ্টা লাগে এই সাঁকো পার হইতে। ছেলে-মেয়েরা যতক্ষণ স্কুল-কলেজ থেকে ফিরে না আসে, ততক্ষণ চিন্তায় থাকি আমরা। রাস্তার দিকে তাকায়ে থাকি।'

বিচারপতি নুরুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী ও পশ্চিম খলিলপুর গ্রামের সুমাইয়া সিদ্দীকা বলেন, 'যাত্রাপুর স্কুলে পড়াকালে ভয়ে ভয়ে বাঁশের মাচাইলের ওপর দিয়ে চলাচল করেছি। এখন কলেজে পড়ি। এই ভাঙ্গা সাঁকোর ওপর দিয়েই কলেজে যাতায়াত করতে হচ্ছে।'

৭০ বছরের নিজাম উদ্দিন বলেন, 'এই এলাকার উৎপাদিত কৃষিপণ্য কিংবা ভারী জিনিস আনতে হলে পাঁচ থেকে ছয় কিলোমিটার দূর পথে যাইতে হয়। এতে পরিবহনের খরচ বেশি লাগে এবং ভোগান্তি হয়। চেয়ারম্যান নতুন একটা রাস্তা করেছেন। ওই রাস্তা দিয়ে এক মাইল গেলে কান্টাপাড়া বাজারে যাওয়া যায়। তবে, ওই বাজারে তো আর বেশি কিছু বেঁচা-কেনা হয় না। এ ছাড়া, এই বাঁশের সাঁকো থেকে পড়ে গিয়ে অনেকেই আহত হয়েছেন।'

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'খলিলপুর এলাকায় ইছামতি নদীর ওপর সেতুর সমস্যা দীর্ঘদিনের। সেখানে দরকার একটি পাকা সেতুর। আমাদের তো পাকা সেতু করার টাকা নেই। আমরা মানুষের চলাচল ঠিক রাখার জন্যে গতবছরও কিছু কাজ করেছি। কিন্তু, বহু মানুষের যাতায়াতে প্রতিবছরই তা ভেঙে যায়।'

Comments

The Daily Star  | English

Drafting new constitution can take a long time: Asif Nazrul

He proposed that the next parliament can act as constitutional authority and amend the 1972 constitution until a new one is enacted

1h ago