ভালো উইকেটে নিউজিল্যান্ডের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

ফিন অ্যালেন ও রাচিন রবীন্দ্রর ৫৮ রানের আগ্রাসী উদ্বোধনী জুটির পর জোড়া আঘাত করে তাদেরকে ফেরালেন শরিফুল ইসলাম। এরপর নিয়মিত উইকেট তুলে নিয়ে অনেকটা সময় নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখতে পারল বাংলাদেশ। কিন্তু অধিনায়ক টম ল্যাথামের হাফসেঞ্চুরি ও কোল ম্যাককনকির ছোট্ট ক্যামিওতে শেষদিকে ফের লাগামছাড়া হলো ব্ল্যাকক্যাপসরা। স্বাগতিকদের তারা ছুঁড়ে দিল চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য।

শুক্রবার সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে টস জিতে আগে ব্যাটিং বেছে নেয় নিউজিল্যান্ড। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে তারা তুলেছে ১৬১ রান। চলতি সিরিজে এটাই কোনো দলের সর্বোচ্চ দলীয় রান।

এ ম্যাচের উইকেট আগের চারটির চেয়ে ভিন্ন। বল ব্যাটে আসছে ভালোভাবে। সফরকারী ব্যাটসম্যানরা সহায়ক উইকেটের সুবিধা কাজে লাগাতে ভুল করেননি। তারা আগ্রাসন চালান বাংলাদেশের দুই বিশেষজ্ঞ পেসারের উপর। যদিও মাঝের ওভারগুলোতে বাংলাদেশের স্পিনাররা রানের চাকায় লাগাম দিতে পেরেছিলেন।

চার পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামা বাংলাদেশ ইনিংসের শুরুতে বল তুলে দেয় তাসকিন আহমেদের হাতে। দ্বিতীয় ওভারে আক্রমণে এসে প্রথম বলেই উইকেট পেতে পারতেন নাসুম আহমেদ। কিন্তু মিড-উইকেটে বাঁহাতি রবীন্দ্রর সহজ ক্যাচ হাতে জমাতে পারেননি শামীম পাটোয়ারি।

পরের দুই বলে চার-ছক্কায় নিউজিল্যান্ডের রানের চাকা সচল করেন অ্যালেন। ইনিংসের চতুর্থ ওভারে শরিফুল শিকার হন বেধড়ক পিটুনির। ওই ওভারে তিনি খরচ করেন ১৯ রান। এক ছক্কা ও দুই চারে ১৫ রানে নেন ডানহাতি অ্যালেন। শেষ বলে চার মারেন রবীন্দ্র।

এক ওভার পর ফিরে শুরুতে আবারও নিউজিল্যান্ডের দুই ওপেনারের তোপে পড়েন শরিফুল। প্রথম বলেই অ্যালেন ফাইন লেগে ছক্কা হাঁকালে উদ্বোধনী জুটির রান পেরিয়ে যায় পঞ্চাশ। তৃতীয় বলে রবীন্দ্র দর্শনীয় চার মারেন মিড-অনের  উপর দিয়ে।

ধাক্কা সামলে চতুর্থ বলে নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে প্রথম আঘাত হানেন শরিফুল। তার শর্ট বলে টাইমিংয়ে গড়বড় করে মিড অনে মুশফিকুর রহিমের হাতে ধরা পড়েন রবীন্দ্র। ১ রানে জীবন পাওয়া ব্যাটসম্যান ফেরেন ১৭ করে। ১২ বলের ইনিংসে ৩ চার মারেন তিনি।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

পরের ডেলিভারিতে রিভিউ নিয়ে এলবিডাব্লিউ থেকে বেঁচে যান অ্যালেন। কিন্তু তাকে টিকতে দেননি শরিফুল। ওভারের শেষ বলে শাফল করে লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে বোল্ড হয়ে যান অ্যালেন। ২৪ বলে ৪ চার ও ৩ ছক্কায় ৪১ রান আসে তার ব্যাট থেকে। তাতে পাওয়ার প্লে শেষে কিউইদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২ উইকেটে ৫৮।

এরপর কমে নিউজিল্যান্ডের আসে রানের গতি। সঙ্গে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে তারা। নবম ওভারে বল হাতে নিয়ে উইল ইয়াংকে উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহানের ক্যাচ বানান আফিফ হোসেন। অভিজ্ঞ কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে ডানা মেলতে দেননি নাসুম। সিরিজে চতুর্থবারের মতো তাকে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার।

৮৩ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ইনিংস মেরামতে লাগেন বাঁহাতি ল্যাথাম ও হেনরি নিকোলস। বাউন্ডারি হাঁকানোর চেয়ে দৌড়ে রান নেওয়ায় মনোযোগ ছিল তাদের। ১৭তম ওভারে আক্রমণে ফিরে ৩৫ রানের এই জুটি ভাঙেন তাসকিন। রানআউট থেকে বেঁচে যাওয়ার পরের বলে সোহানের দুর্দান্ত ক্যাচে নিকোলস বিদায় নেন ২১ বলে ২১ করে।

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

তবে ডেথ ওভারে বাংলাদেশ ছিল ছন্নছাড়া। তাসকিন ও শরিফুলের ওপর চড়াও হন ল্যাথাম ও ম্যাককনকি। তারা অবিচ্ছিন্ন ৪৩ রান যোগ করেন মোটে ২১ বলে। সিরিজে দ্বিতীয় ফিফটি পূরণ করে ল্যাথাম অপরাজিত থাকেন ৩৭ বলে ৫০ রানে। সমান ২টি করে চার ও ছক্কা মারেন তিনি। ম্যাককনকির ব্যাট থেকে ৩ চারে ১০ বলে আসে ১৭।

শেষ ৬ ওভারে ৬৫ রান তোলে কিউইরা। বাংলাদেশের বাঁহাতি পেসার শরিফুল ছিলেন ভীষণ খরুচে। ৪ ওভারে ২ উইকেট নিতে তিনি দেন ৪৮ রান। এছাড়া, তাসকিন, নাসুম ও আফিফ পান উইকেটের দেখা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউজিল্যান্ড: ২০ ওভারে ১৬১/৫ (অ্যালেন ৪১, রবীন্দ্র ১৭, ল্যাথাম ৫০*, ইয়াং ৬, ডি গ্র্যান্ডহোম ৯, নিকোলস ২১, ম্যাককনকি ১৭*; তাসকিন ১/৩৪, নাসুম ১/২৫, শরিফুল ২/৪৮, মাহমুদউল্লাহ ০/১৭, ০/১৭, সৌম্য ০/১৪, আফিফ ১/১৮, শামীম ০/৪)।

Comments

The Daily Star  | English

Ishraque alleges political obstruction in DSCC mayoral appointment

Announces establishment of 'Mayor's Cell' to monitor service delivery in the city

1h ago