লাউয়াছড়ার উল্লুকদের জন্য সুখবর

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে যতগুলো বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর সন্ধান মেলে সেগুলোর মধ্যে উল্লুকও রয়েছে। তবে, বনের মধ্য থাকা রেল ও সড়ক পথ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হওয়ার সময় প্রতি বছর বহু সংখ্যক বন্যপ্রাণী দুর্ঘটনায় মারা যায়। তাই, বাংলাদেশের মহাবিপন্ন উল্লুকসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বনের ভেতর পাঁচটি স্থানে রাস্তার ওপর টানানো হয়েছে দড়ি।

মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানে যতগুলো বিরল প্রজাতির বন্যপ্রাণীর সন্ধান মেলে তার মধ্যে উল্লুকও রয়েছে। তবে, বনের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া রেল ও সড়ক পথ দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে পারাপার হওয়ার সময় প্রতি বছর বহু সংখ্যক বন্যপ্রাণী দুর্ঘটনায় মারা যায়। তাই, বাংলাদেশের মহাবিপন্ন উল্লুকসহ অন্যান্য বন্যপ্রাণীর চলাচল নির্বিঘ্ন করতে বনের ভেতর পাঁচটি স্থানে রাস্তার ওপর টানানো হয়েছে দড়ি।

সড়ক ও রেল পথের দুই পাশের দুটি উঁচু গাছের সঙ্গে বেঁধে দেওয়া হয়েছে নাইলনের মোটা দড়ি। যাতে প্রাণীগুলো খাবারের সন্ধানে দড়ি বেয়ে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যেতে পারে। প্রতিটি দড়ির দূরত্ব প্রায় ২২ থেকে ২৫ মিটার। 

ছবি: স্টার

  
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হাবিবুন নাহারের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের গবেষক দল দাড়ি টানানোর কাজটি করেন। তাদের সহযোগিতা করেছেন স্থানীয় আরও তিন জন। 

হাবিবুন নাহার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বন অধিদপ্তরের অর্থায়নে আমরা রেললাইনের ওপর চারটি এবং সড়ক পথের ওপর একটি দড়ির সংযোগ স্থাপন করেছি। গত ২ থেকে ৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগ এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষক দল যৌথভাবে দড়ি টানানোর কাজ করে। এগুলো মূলত ১০ সেন্টিমিটার ব্যাসের দড়ি। এসব দড়ির সংযোগ কতটুকু কাজে লাগবে, তা জানতে বসানো হয়েছে ক্যামেরা।'

বন্যপ্রাণীর চলাচলের সুবিধার্থে ভারত, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়াসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ক্যানোপি ব্রিজ রয়েছে। তবে, এমন দড়ি ধরে চলাচলে অভ্যস্ত হতে বন্যপ্রাণীগুলোর কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে বলে ধারণা গবেষক দলের। 

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সেন্ট্রাল কমিটির সদস্য তোফাজ্জল সোহেল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের বিভিন্ন স্থানে সড়ক ও রেলপথ অনেক প্রশস্ত। এতে অনেক প্রাণী লাফ দিয়ে এক পাশ থেকে অন্য পাশের গাছে যেতে পারে না। কিছু প্রাণী নিচে নেমে সড়ক ও রেলপথ পার হওয়ার সময় মারা যায়।'

বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সড়কে চিত্রা হরিণ, বানর, মেছো বিড়াল, মুখপোড়া হনুমান, চিতা বিড়াল, সাপ ও ব্যাঙসহ বিভিন্ন প্রাণীর মৃত্যু হয়। করোনার কারণে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকায় এই সময়ে রেললাইনে বন্যপ্রাণী কাটা পড়ার ঘটনা নেই। এ সময় সড়ক পথেও যান চলাচল কম ছিল।' 

তিনি আরও বলেন, 'দড়ির সংযোগগুলো লাউয়াছড়া বনের বানর জাতীয় প্রাণী, বিশেষ করে উল্লুকের জন্য খুবই উপকারী হবে বলে আশা করছি। এক মাস পরপর ক্যামেরা দেখে বন্যপ্রাণীর চলাচলের বিষয়ে পুরোপুরি ধারণা পাওয়া যাবে।'

Comments

The Daily Star  | English

Road Surface Melting: Bargain bitumen failing to bear extreme heat

As the country is baking in heatwave, road surfaces in several districts have melted due to what experts say is the use of bitumen that cannot withstand this extreme heat.

5h ago