স্কুলের মাঠে ধান চাষ!

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রামনগর পশ্চিমপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে ধান চাষ করা হয়েছে। ছবি: আমানুর রহমান/স্টার

করোনা মহামারিতে দীর্ঘ বন্ধের পর দেশের সব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হয়েছে। তবে, বন্ধ আছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের রামনগর পশ্চিমপাড়া বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। কারণ, বন্ধের সময় স্কুলটির মাঠে ধান চাষ করা হয়েছে।

ধান না কাটা পর্যন্ত স্কুল পুরোপুরি খোলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রুহুল আজম।

কারণ হিসেবে দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, 'কবে স্কুল খুলবে তার কোনো ঠিক ছিল না। তাই স্কুলের শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজটি করা হয়েছে।'

তিনি আরও বলেন, 'এতো বড় একটি জায়গা ফেলে রাখার চেয়ে ধান উঠলে তা বিক্রি করে স্কুল ফান্ডে কিছু অর্থায়ন হবে। আপাতত এভাবেই চলবে। তবে, শিক্ষার্থীদের যাতে স্কুলে আনা যায় সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।'

বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক উজ্জ্বল হোসেন বলেন, 'ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি কেন মাঠে ধান চাষ করেছেন তা তার কাছ থেকে জানতে হবে। আমার এ বিষয়ে কিছু বলার ক্ষমতা নেই।'

তিনি আরও বলেন, 'অনেক কষ্ট করে আজ থেকে কিছু শিক্ষার্থী হাজির করানো হয়েছে। তবে, এ অবস্থায় শিক্ষার্থীরা স্কুলে আসতে চাচ্ছে না। এ বিষয়ে এলাকার মানুষ নানা মন্তব্য করেছেন।'

স্কুলের কয়েকজন শিক্ষক জানান, স্কুলের জমি স্কুলের নামে দলিলকৃত সম্পত্তি। স্কুল মাঠে নানা ধরনের খেলাধুলা করত এলাকার শিশুরা।

তারা আরও জানান, নিয়ম অনুযায়ী এ মাঠে কারো ব্যক্তিগত খেয়াল খুশি মতো কিছু করার সুযোগ নেই। স্কুলটি সরকারিকরণের প্রক্রিয়ার মধ্যে আছে। ইতোমধ্যে শিক্ষা অফিস থেকে পরিদর্শনও হয়েছে একাধিকবার।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'করোনার বন্ধের মধ্যে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি রুহুল আজম হঠাৎ একদিন স্কুল মাঠে পাওয়ার ট্রিলার দিয়ে চাষ করেন। তিনি শিক্ষকদের জানিয়েছিলেন, মাঠে ধান চাষ করা হবে।'

এদিকে ধান চাষ করায় বন্ধ হয়ে গেছে শিশুদের খেলাধুলা। এমনকি করোনার দীর্ঘ বন্ধের পরও যথাযথ নিয়মে খোলা সম্ভব হয়নি স্কুলটি। কারণ স্কুলের মাঠ বলে কিছু নেই। শিক্ষার্থীদের দাঁড়ানোর জায়গা নেই বলে জানান আরেক শিক্ষক।

রামনগর গ্রামের বাসিন্দা এবং অভিভাবক শেখ আসকার হোসেন জানান, এটা সভাপতি করতে পারেন না। কিন্তু, তিনি গায়ের জোরে করেছেন। শিশুদের খেলার মাঠ এভাবে বন্ধ করে তিনি অন্যায় করেছেন।

মিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ রানা বলেন, 'শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাঠে এ ধরনের কাজ করার কোনো সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লিংকন বিশ্বাস বলেন, 'এ কাজের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

Comments

The Daily Star  | English

July uprising: The wounds that are yet to heal, one year on

This week marks one year since 15-year-old Md Shahin Alam’s life was forever changed -- not by illness or accident, but by a bullet that tore through his left leg during a rally on August 5, 2024.

15h ago