ইউরোপে দক্ষ অভিবাসনের শর্ত আরও শিথিল হলো

ইউরোপের বাইরে থেকে দক্ষ অভিবাসন আকর্ষণে স্কিল মাইগ্রেশান হিসেবে পরিচিত  'ইইউ ব্লু কার্ড'  ব্যবস্থা অনেকটা সহজ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে এখন আগের চেয়ে সহজ শর্ত পূরণ করে ইউনিয়নভুক্ত দেশে কাজ, ব্যবসা বাণিজ্য ও বসবাসের সুযোগ পাওয়া যাবে।
ইউরোপে স্কিল মাইগ্রেশান হিসেবে পরিচিত  'ইইউ ব্লু কার্ড'। ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপের বাইরে থেকে দক্ষ অভিবাসন আকর্ষণে স্কিল মাইগ্রেশান হিসেবে পরিচিত  'ইইউ ব্লু কার্ড'  ব্যবস্থা অনেকটা সহজ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ফলে এখন আগের চেয়ে সহজ শর্ত পূরণ করে ইউনিয়নভুক্ত দেশে কাজ, ব্যবসা বাণিজ্য ও বসবাসের সুযোগ পাওয়া যাবে।

ইউরোপীয় পার্লামেন্ট ইতোমধ্যে নতুন নিয়মে ব্লু কার্ড দিতে অনুমোদন দিয়েছে যা প্রক্রিয়াটিকে সহজ করেছে। ফলে এখন থেকে ইউরোপের বাইরে থেকে আরও বেশি দক্ষ জনশক্তি বা অভিবাসী ইউরোপে কাজ করার সুযোগ পাবেন। এই উদ্যোগটি ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ খাতে শ্রমিক সংকট নিরসনে ভূমিকা রাখবে।

১০ বছর আগে চালু হওয়া এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগকর্তারা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী দক্ষ কর্মী নিয়োগ দিতে পারতেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে। বেশ কিছু খাতে নিদিষ্ট শর্ত পূরণ সাপেক্ষে যে কেউ ইউনিয়নভুক্ত দেশে প্রবেশ, কাজ ও বসবাসের অনুমতি পেতেন। কিন্তু এই প্রক্রিয়া প্রয়োজনীয় বা আরও মানুষকে আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

ইউরোপীয় ইউনিউনের তথ্যে, ২০১৯ সালে ৩৭ হাজারের কম ব্লু কার্ড ইস্যু করা হয়েছে যার বেশিরভাগই জার্মানি থেকে। তথ্য মতে, সেই বছর জার্মানি ২৮ হাজার ৮৫৮, পোল্যান্ড ২ হাজার ১০৪, ফ্রান্স ২ হাজার ৩৬, লুক্সেমবার্গ ৬৭৭, চেক রিপাবলিক ৫৭০, ইতালি ৪১৮ এবং অস্ট্রিয়া ৩৩৬ টি কার্ডের অনুমোদন দিয়েছিল।

এ বছরের মে মাসে ইইউ সর্ব সম্মতিক্রমে শর্ত শিথিলে একমত হয়, যা ৫ বছর আগে প্রস্তাব করা হয়েছিল।

গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন:

ভবিষ্যতে ইইউ ব্লু কার্ড আবেদনে মাত্র ৬ মাসের চাকরির চুক্তি বা প্রস্তাব পেতে হবে যা এখন ১ বছরের রয়েছে।

পূর্ব শর্ত হিসেবে আবেদনকারীদের উচ্চ শিক্ষা এবং পেশাগত দক্ষতার প্রমাণ দাখিল করতে হবে। তবে কিছু ক্ষেত্রে যেমন তথ্য ও প্রযুক্তি খাতে সংশ্লিষ্ট কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা এখন থেকে গ্রহণযোগ্য হিসেবে বিবেচিত হবে।

নূন্যতম বেতনের শর্তও শিথিল করা হয়েছে। আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের বাৎসরিক গড় মোট বেতনের দেড় গুণ বেশি বেতনের চাকরির প্রস্তাব পেতে হতো। যেমন ২০২০ সালে জার্মানিতে কমপক্ষে ৫৫ হাজার ২০০ ইউরো এবং যে সব খাতে শ্রমিক সংকট আছে সেখানে ৪৩ হাজার ৫৬ ইউরো বেতনের চাকরির প্রস্তাব থাকতে হতো তা এখন বাৎসরিক গড় মোট বেতনের সমান হলে হবে।

শরণার্থীরাও এখন এই আবেদনের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন অন্য যে কোন ইইউ রাষ্ট্রে যেখান থেকে তাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে সে দেশ ছাড়।

ইইউ ব্লু কার্ডধারীরা ১২ মাস পর ইউরোপীয় ইউনিউনের অন্য যে কোন দেশে বসবাস এবং কাজ করতে পারবেন।

ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো এই নিয়ম তাদের সংসদে অনুমোদন করতে হবে এবং তার জন্য দুই বছর সময় পাবে। পাশাপাশি সদস্য দেশগুলো তাদের নিজস্ব নিয়মকানুনও সংযোজন করতে পারে।

জার্মানিসহ অনেক দেশ দক্ষ কর্মী ঘাটতিতে পড়েছে। বিশেষ করে করোনা পরিস্থিতির ফলে সামগ্রিক অভিবাসন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এই সংকট তৈরি হয়েছে। তাছাড়া ইউরোপে বয়স্ক মানুষ বেড়ে যাওয়াও এর অন্যতম কারণ।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সোসালিস্ট এবং ডেমোক্রেটিক দলের সদস্য মরেনো সেনসেছ বলেন, আমাদের ইউরোপে বৈধ অভিবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে হবে। দক্ষ কর্মীদের বেশি করে সুযোগ সুবিধা দিতে হবে যেন তারা উন্নয়নে অংশীদার হন।

তাছাড়া তিনি আরও উল্লেখ করেন, অদূর ভবিষ্যতে স্বল্প দক্ষ কর্মী এবং শ্রমিকদের জন্যও ইউরোপে কাজের সুযোগ তৈরি করতে হবে।

লেখক: পর্তুগালপ্রবাসী সাংবাদিক।

Comments

The Daily Star  | English
How do we protect the worst victims of inflation?

How do we protect the worst victims of inflation?

The reason for continued high consumer prices in the country despite prices dropping in the international market is a combination of policy and institutional failure.

7h ago