যশোর রোডে শিকড় কেটে সড়ক প্রশস্ত, ঝুঁকিতে শতবর্ষী গাছ

ছবি: সংগৃহীত

বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে গাছের শিকড় কেটে সড়ক প্রশস্ত করায় ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে সড়কের শতবর্ষী গাছগুলো।

মাটি কেটে সাড়ে ৩ ফুট গর্ত করায় সড়ক নির্মাণে কাটা পড়ে গাছের শিকড়। ফলে একটু শক্তিশালী ঝড় হলেই উপড়ে পড়ছে গাছগুলো।

শতবর্ষী গাছগুলো সংরক্ষণের জন্য ঝিকরগাছা উপজেলা বাজার, নবীনগর, নাভারন ও শার্শা উপজেলার  সড়কের পাশে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, ঐতিহাসিক 'যশোর রোডের'বেনাপোল-যশোর মহাসড়কের পাশে শতবর্ষী সহস্রাধিক গাছ কেটে সড়ক সম্প্রসারণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সড়ক ও জনপথ বিভাগ। সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে গাছ রক্ষায় দেশের বেশ কিছু সংগঠন ও পরিবেশবাদীরা শুরু করলে গাছ কাটার সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন হাইকোর্ট। সড়কের ২ পাশের গাছ রেখেই শুরু হয় রাস্তা পুন:নির্মাণের কাজ। ফলে, ঝুঁকিতে পড়ে গাছগুলো।

মহাসড়কের ঝিকরগাছা উপজেলার নবীনগর, ধোপাখোলা, মঠবাড়ী, নাভারন ও শার্শা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কাটা পড়ে গাছের মোটা শিকড়। এতে গাছের গোড়া দুর্বল হয়ে পড়ে। বর্তমানে সড়কের পাশে বড় আকারের শতবর্ষী গাছগুলো ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। সড়কের ২ পাশের বিভিন্ন জায়গায় গাছ মরে শুকিয়ে গেছে।

চলতি বছরের জুলাই মাসে বড় ধরনের ঝড়বৃষ্টিতে সড়কের পাশে বড় ২টি গাছ উপড়ে পড়ে।

নাভারনের ইজিবাইক চালক তরিকুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেনাপোল-যশোর মহাসড়কের পাশেই আমাদের বাড়ি। বাড়ির সামনে সড়কের পাশে বড় ২টি শিশু গাছ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। নতুন করে সড়ক পুন: নির্মাণের কারণে অনেক গাছের শিকড় কাটা পড়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাছগুলো।

নাভারন কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহিম খলিল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'যশোরের জমিদার কালী পোদ্দার তার মাকে গঙ্গাস্নানে নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৮৪২ সালে যশোর শহরের বকচর থেকে ভারতের নদিয়ার গঙ্গাঘাট পর্যন্ত এ সড়কটি নির্মাণ করেন। ৮০ কিলোমিটারের এই সড়কের ছায়ার জন্য দুই ধারে তিনি শিশু গাছের চারা রোপণ করেন। সেই গাছগুলোই বেনাপোল-যশোর সড়কে শতবর্ষী গাছ। এই মহাসড়কটিই অ্যালেন গিন্সবার্গের সেই ঐতিহাসিক যশোর রোড।'

ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের ডিরেক্টর মতিয়ার রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেনাপোল-যশোর মহাসড়ক পুন:নির্মাণের সময় ৩ ফুট গর্ত করায় রাস্তার পাশের বেশিরভাগ গাছগুলোর শিকড় কাটা পড়ে। বর্তমানে গাছগুলো দুর্বল হয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে।'

যশোর জেলা প্রশাসক তমিজউদ্দিন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গাছগুলো রোড অ্যান্ড হাইওয়ে ও জেলা পরিষদের অনুকূলে। আমি তাদের গাছগুলো সংরক্ষণ করতে বলেছি।' 

যশোর জেলা পরিষদের সার্ভেয়ার এম এ মঞ্জু ডেইলি স্টারকে জানান, বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে শতবর্ষী গাছে আছে ৬৯৭টি। এসব গাছের ৫০ শতাংশই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। ঝড়ে এ পর্যন্ত ১৩টি গাছ উপড়ে পড়েছে।

যশোর সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী এসএম মোয়াজ্জেম হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বেনাপোল-যশোর মহাসড়কে শতাধিক গাছ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকায় আমরা কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছি না। যে সব গাছ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ সে সব গাছ কেটে ফেলার কাজ করছে জেলা পরিষদ।'

Comments

The Daily Star  | English
Mirza Fakhrul on polls

Efforts on to make polls questionable and delayed: Fakhrul

Says Chief Adviser Yunus has assured BNP that the election will be held in February 2026

7h ago