রাণীর চেয়েও কম ওজনের ‘টুনটুনি’ 

বিশ্বের সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুকে নাম লিখিয়েছে সাভারের শিকড় অ্যাগ্রো ফার্মের গরু 'রাণী'। তবে, গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার হায়াতখারচালা গ্রামে আরও একটি খর্বাকৃতির গরু আছে জানতে পেরে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছে এক নজর দেখতে।

হায়াতখারচালা গ্রামের আড়ালিয়া ভিটার কৃষক আবুল কাশেম গরুটির মালিক। তার ছেলে আদর করে গরুটির নাম দিয়েছে 'টুনটুনি'। 
এটি তার বাড়ির একটি গাভীর জন্ম দেওয়া বাছুর। ১৩ মাস আগে জন্ম নেওয়ার সময় বাছুরটির ওজন ছিল মাত্র দেড় থেকে দুই কেজির মতো। এখন এর ওজন দাঁড়িয়েছে ২৩ কেজি এবং উচ্চতা ২২ ইঞ্চি।

অন্যদিকে, গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে জায়গা করে নেওয়া সাভারের গরুটির উচ্চতা ছিল ২০ ইঞ্চি এবং ওজন ছিল ২৬ কেজি। রাণীর চেয়ে টুনটুনির দুই ইঞ্চি বড় হলেও ওজনে ৩ কেজি কম।  

টুনটুনি। ছবি: স্টার

কৃষক আবুল কাশেম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাছুরটি জন্মের পর খরগোশের বাচ্চার মতো দেখতে হয়েছিল। বাঁচবে কি না তা নিয়ে শঙ্কায় ছিলাম। এক মাসের মতো কোলে তুলে ধরে গাভীর দুধ খাওয়াতে হতো। এক মাস পর বাছুরটি লাফিয়ে লাফিয়ে গাভীর দুধ খাওয়া শেখে। ৬ মাস পর থেকে বাছুরটির বৃদ্ধি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।'

আবুল কাশেমের স্ত্রী জরিনা বেগম বলেন, 'বাছুরটি সারাদিন ঘাস, ভূষি, কুঁড়া, লবন খায়। আগে তেমন যত্ন করেননি। এখন যতটুকু খাবার দেওয়া হয় তা খেয়ে শেষ করে ফেলে। জন্মের পর লালন-পালন করতে অনেক কষ্ট হয়েছে। কিছুদিন যাওয়ার পর বাছুরটির প্রতি মায়া জন্মে। একমাত্র ছেলে সজীব বাছুরটি সঙ্গে নিয়ে ঘোরে। গত এক মাস ধরে প্রতিদিন গড়ে দুই আড়াই শ মানুষ বাছুরটি দেখতে আসেন।'

প্রতিবেশী শামসুন্নাহার বলেন, 'এমন গরু জীবনে দেখিনি। পাড়া-প্রতিবেশী, জনপ্রতিনিধি ছাড়াও দূর-দুরান্তের লোকজন প্রতিদিন বাছুরটি দেখতে আসে। বাছুরটির খাওয়া-দাওয়া সব ঠিক আছে। এটি আসলেই দেখার মতো একটি প্রাণী।'

কৃষক আবুল কাশেমের ছেলে মো. সজীব বলেন, 'বাছুরটি জন্মের পরই তার নাম দিই টুনটুনি। আগে নাম ধরে ডাকলে সাড়া দিত। এখন প্রতিদিন বাড়িতে অনেক মানুষ আসে বলে বাছুরটি ভয় পায়।'

শ্রীপুর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. রুকুনুজ্জামান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দেশি জাতের একটি বাছুর সাধারণত জন্মের পরই ১৫ থেকে ২০ কেজি ওজন হয়। এক বছর বয়সে ৮০ থেকে একশ কেজি হতে পারে। কিন্তু এ বাছুরটির ক্ষেত্রে ওজন বাড়েনি এবং উচ্চতাও বাড়েনি।'

তিনি আরও বলেন, 'ছোট গরু হিসেবে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড করার সম্ভাবনা রয়েছে।'